সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করে নির্বাচন অনিশ্চিত করার অপচেষ্টা হচ্ছে: এমরান সালেহ
Published: 25th, March 2025 GMT
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ (প্রিন্স) বলেছেন, সেনাবাহিনীকে নিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে পরিকল্পিতভাবে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্বাচনকে অনিশ্চিত করার অপচেষ্টা হচ্ছে। সশস্ত্র বাহিনী জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও গুজব সৃষ্টি করে কার ফাঁদে পা দিচ্ছেন, তা চিন্তা করে কথা বলা উচিত। সেনাবাহিনী জাতির স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ। সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করে দুর্বল করলে জাতীয় স্বাধীনতা বিপন্ন হবে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের পুটিমারী বাজারে দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমরান সালেহ এ কথাগুলো বলেন। ইফতারের আগে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির এই নেতা।
সৈয়দ এমরান সালেহ বলেন, অহেতুক উত্তেজনা সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা লাভের দিন শেষ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে রাজনীতি ও রাষ্ট্রের পরিবর্তন আনতে হলে জননির্ভর গঠনমূলক রাজনীতি করতে হবে। দেশের বর্তমান জটিল পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্য যখন আরও সুদৃঢ় ও মজবুত হওয়া প্রয়োজন, তখন ক্রমাগত জাতীয় ঐক্যবিরোধী তৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনে আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয় অর্জিত হয়েছে, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ ও সরকার কায়েমের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে বিজয় সুসংহত করতে হবে।
পরিপূর্ণ বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের সতর্কভাবে রাজপথে থাকার আহ্বান জানিয়ে এমরান সালেহ বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি জটিল করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। নির্বাচনকে প্রলম্বিত করে নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতাবান হওয়ার প্রচেষ্টা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী। প্রকৃত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে।’ তিনি সবার প্রতি জাতীয় ঐক্য অটুট রেখে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের আকাঙ্ক্ষা তথা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র বাস্তবায়নে তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
স্থানীয় বিএনপির সভাপতি আবদুল মোতালেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ধোবাউড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক আযহারুল ইসলাম, সদস্যসচিব আনিসুর রহমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হাশেম, মাহবুবুল আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এমর ন স ল হ ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।