সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি প্রয়োগ পর্যালোচনায় কমিটি গঠন
Published: 25th, March 2025 GMT
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমান প্রেক্ষাপটে কোটাপদ্ধতি প্রয়োগের বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। আজ মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে (বিধি অনুবিভাগ) আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আজ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) একজন করে কর্মকর্তা। তাঁরা যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা হবেন। জনপ্রশাসন উপসচিব (বিধি-১ শাখা) এই কমিটিতে সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।
এর আগে গত জানুয়ারিতে সরকারি চাকরি এবং ভর্তিতে কোটা প্রয়োগের বিষয়টি পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত বছর আন্দোলনে নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে এই আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। কিন্তু তার আগে জুলাই মাসে আদালতের রায়ের ভিত্তিতে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে জানায়, সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগে সব গ্রেডে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে ৯৩ শতাংশ। বাকি ৭ শতাংশ নিয়োগ হবে কোটার ভিত্তিতে। এর মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটা থাকবে। তবে নির্ধারিত এই কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে কোটার শূন্য পদও সাধারণ মেধাতালিকা থেকে পূরণ করা হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন এই কমিটিকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটার প্রয়োগপদ্ধতি পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মন ত র চ কর ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী
কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।
কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।
একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’
কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।
এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।