পাকিস্তানে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত
Published: 26th, March 2025 GMT
ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদা, উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপযাপন করেছে। এ উপলক্ষে দূতালয় প্রাঙ্গণ বর্ণাঢ্য ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে সুসজ্জিত করা হয়।
সকালে দূতালয় প্রাঙ্গণে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো.
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা পর্ব শুরু হয়। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী শহিদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে প্রেরিত রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে ‘July Uprising’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদের রূহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং সকল বীরাঙ্গনা, রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ২৪ এর জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ ছাত্র-জনতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে হাইকমিশনার বলেন, স্বাধীনতা বাঙ্গালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ও আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থেকে এগিয়ে নিতে হবে।
২০২৪ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় সংযোজন করেছে। ২০২৪ সালের বৈষম্য বিরোধী গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করার এক অনন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। ’৭১ ও ’২৪ এর বীর যোদ্ধাদের আত্মত্যাগকে মহিমান্বিত করার লক্ষ্যে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত, সুখী, সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠনে সকলকে নিষ্ঠার সাথে কাজ করার অনুরোধ করেন।
আলোচনা শেষে অনুষ্ঠানে ৭১-এর সকল শহিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ২৪ এর জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ ছাত্র-জনতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
সন্ধ্যায় দূতাবাস প্রাঙ্গণে এক ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। এতে প্রবাসী বাংলাদেশিসহ দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা ৫ বছরে, অস্ট্রেলিয়ার বিনোদন বাজার বাড়ছে
অস্ট্রেলিয়ার ভিডিও স্ট্রিমিং বাজার আগামী ছয় বছরে রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে। মিডিয়া পার্টনার্স এশিয়ার (এমপিএ) সাম্প্রতিক গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০৩০ সাল নাগাদ দেশটির ভিডিওশিল্পের আয় দাঁড়াবে ১২ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে এই বাজারের ৬২ শতাংশই দখল করে আছে অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলো।
গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার মোবাইল ও কানেক্টেড টিভি ব্যবহারকারীরা মোট ৭ দশমিক ১ বিলিয়ন মিনিট ভিডিও কনটেন্ট স্ট্রিম করেছেন। এর মধ্যে এককভাবে সবচেয়ে বেশি ৩৩ শতাংশ দখল করে আছে গুগলের মালিকানাধীন ইউটিউব। বৈশ্বিক স্ট্রিমিং জায়ান্ট নেটফ্লিক্স রয়েছে চতুর্থ স্থানে। দেশীয় প্রতিষ্ঠান ফক্সটেল ও নাইন এন্টারটেইনমেন্ট যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান ধরে রেখেছে।
ভ্যারাইটির এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই খাতের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। এই সময়কালে অনলাইন ভিডিওর বাজার অংশীদারত্ব ৩২ থেকে বেড়ে ৬২ শতাংশে পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অস্ট্রেলিয়ার ৮২ শতাংশ পরিবারে কানেক্টেড টিভির উপস্থিতি এবং উচ্চগতির ইন্টারনেট–সুবিধা এই প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করছে।
কথা হয় সিডনিতে ফক্সটেল গ্রুপের সফটওয়্যার কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্সের প্রধান নির্বাহী বাংলাদেশি যুবক ইফতেখারুল আলমের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্ট্রিমিং এখন শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি অস্ট্রেলিয়ানদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। আগামী দিনগুলোতে আরও উন্নত প্রযুক্তির সম্প্রসারণ এই বাজারকে আরও গতিশীল করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ধীরে ধীরে বয়স্ক দর্শকেরাও এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছেন এবং অন ডিমান্ড কনটেন্ট দেখার সুবিধায় অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন, ফলে তাঁরা ঐতিহ্যবাহী আইপি বা স্যাটেলাইট টিভি থেকে সরে আসছেন। স্ট্রিমিং এখন শুধু সিনেমা বা টিভি সিরিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, খেলাধুলার হাইলাইটস, স্পোর্টস শো ও লাইফস্টাইল প্রোগ্রামগুলোও দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ফক্সটেলে আমরা এই পরিবর্তনশীল দর্শক চাহিদা পূরণে আমাদের স্ট্রিমিং পরিষেবাগুলোকে ক্রমাগত উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে সব ধরনের দর্শকই উচ্চমানের সুবিধাজনক বিনোদন উপভোগ করতে পারেন।’
ভ্যারাইটিকে মিডিয়া পার্টনার্স এশিয়ার (এমপিএ) নির্বাহী পরিচালক বিবেক কৌতোর ভাষ্যে, ‘অস্ট্রেলিয়ার বাজার বিশ্লেষণে আমরা দেখতে পেয়েছি যে গ্লোবাল প্ল্যাটফর্মগুলো তাদের বিশাল ব্যবহারকারীকে ভিত্তি করে বিজ্ঞাপনভিত্তিক মডেলের মাধ্যমে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। তবে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রিমিয়াম স্পোর্টস কনটেন্ট এবং স্থানীয় প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে টিকে আছে।’
যদিও বাজার দ্রুত বাড়ছে, কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দা এবং ভোক্তা খরচ কমে যাওয়ার মতো বিষয়গুলো এই প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।