Samakal:
2025-05-01@12:02:29 GMT

এক পার্ক ধ্বংসে এত আয়োজন!

Published: 27th, March 2025 GMT

এক পার্ক ধ্বংসে এত আয়োজন!

কয়েক মাস ধরে রাজধানীর পান্থকুঞ্জ পার্ক ধ্বংসের প্রতিবাদ করা হচ্ছে। এ পার্ক রক্ষায় উন্নয়নকর্মী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও মিডিয়াও সরব। ঢাকার আরও দুটি পার্কের অবস্থা একই রকম। আমাদের এই পার্কগুলোর ধ্বংস কী বার্তা বহন করে?

প্রথমেই আসি বহুল আলোচিত পান্থকুঞ্জ পার্ক ধ্বংসের একটি পর্যালোচনায়। প্রথম দিকে এই পার্কের উন্নয়ন করার লক্ষ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন একটি বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করে। তার পরও যে পার্কের খুব একটা উন্নতি হয়েছে, তা বলা যাবে না। তবে মন্দের ভালো। পরবর্তী সময়ে যখন এই পার্কটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়, তখন তারা জানতে পারল, এই পার্কের ভেতর দিয়ে উড়াল সড়কের একটি র‍্যাম্প যাবে। অর্থাৎ পার্কটি আর জনসাধারণের ব্যবহারের উপযোগী থাকল না। কেননা, এটি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যের একটি অংশ হয়ে গেল।

ঢাকার আরও একটি পার্ক হলো শহীদ আনোয়ারা পার্ক। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত পার্কটি মেট্রোরেল স্থাপনার কারণে ধ্বংসের পথে। প্রথম দিকে এখানে মেট্রোরেলের নির্মাণসামগ্রী রাখা হতো। কিন্তু মেট্রোরেলের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরই আবার জানা গেল, এখানে একটি বহুতল শপিংমল নির্মাণ করা হবে, যাতে মেট্রোরেলের খরচ বহন করা যায়। একটা বিষয়ে মিল রয়েছে– পান্থকুঞ্জ পার্ক এবং  শহীদ আনোয়ারা পার্কের উভয় স্থানই ব্যবহৃত হবে বাণিজ্যিক কার্যক্রম হিসেবে।

এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন, আমাদের যোগাযোগ উপদেষ্টা আশ্বাস দিয়েছেন, এখানে আর কোনো কাজ করা হবে না। তবুও আশঙ্কা 
থেকেই যায়!

পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কও ভালো নেই। সেখানে বাণিজ্যিক স্থাপনা হিসেবে খাবারের দোকান নির্মাণ করার অনুমতি হয়েছে। সিটি করপোরেশনের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অনেক প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছিল পরিবেশবাদীদের পক্ষ থেকে। তার পরও এখানে সেই বাণিজ্যই!

শহীদ আনোয়ারা পার্ক ও বাহাদুর শাহ পার্কের একটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। ১৯৬৯ সালের ২৫ জানুয়ারি, গণঅভ্যুত্থানের দ্বিতীয় দিন। ঢাকার নাখালপাড়ার ৪৮৪ নম্বর বাসায় চার মাসের শিশুসন্তান নার্গিসকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছিলেন মা আনোয়ারা বেগম। এমন সময় পাকিস্তানি স্বৈরাচারী সরকারের পুলিশ বাহিনীর বুলেট টিনের বেড়া ভেদ করে আনোয়ারা বেগমের গায়ে বিদ্ধ হয় এবং তিনি নিহত হন। এই ঘটনাকে এবং তাঁকে স্মরণে রাখতেই মাঠটিতে ‘আনোয়ারা বাগান’ নামে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে এটি ‘আনোয়ারা মাঠ’ নামে পরিচিতি পায়। এভাবে বাহাদুর শাহ পার্কেরও একটি ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে। ১৮৫৭ সালের ‘সিপাহি বিপ্লব’-এর সময় বেশ কয়েকজন বিপ্লবীকে এখানে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে দিল্লির শেষ সম্রাট বাহাদুর শাহর নামে পার্কটির নামকরণ করা হয়।

ঢাকার এই তিনটি পার্ক ধ্বংসের বিষয়ে বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাব, প্রতিটি স্থানের পেছনে অর্থ ও মুনাফা জড়িয়ে আছে। এখানে প্রাণ-প্রকৃতি, ইতিহাস অথবা সবুজের যেন মূল্য নেই। আমাদের এই পুঁজিভিত্তিক সমাজে তারা চিন্তা করেন, মানুষ ফুলের গন্ধ নেবে না; নেবে সুগন্ধি। পার্কের সবুজ দেখবে না; দেখবে শপিংমলের আলো। পাখির ডাক শোনার কোনো প্রয়োজন নেই; গাড়ির হর্নই হচ্ছে জীবনের অংশ। তাই তো পার্ক নামক উন্মুক্ত স্থান ধ্বংস করার এত আয়োজন।

আমরা যদি এভাবে পার্ক ধ্বংস করে চলি, তাহলে ভবিষ্যতে এমন একটা প্রজন্ম পাব, যারা শুধু মুনাফার কথা চিন্তা করবে। তাদের কাছে প্রকৃতি, সবুজ, জীববৈচিত্র্য এবং মানবিকতা বলে কিছুই থাকবে না। তাই আর নয় পার্ক হত্যা।

তালুকদার রিফাত পাশা: পলিসি কর্মকর্তা, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিং বাংলাদেশ
rifatir2@gmail.

com

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এই প র ক র একট

এছাড়াও পড়ুন:

আনচেলত্তিকে বেতনসহ সসম্মানে বিদায় দেবে রিয়াল 

মৌসুম শেষে রিয়াল মাদ্রিদের চাকরি হারাচ্ছেন কার্লো আনচেলত্তি। ২৫ মে রিয়ালের লিগ মৌসুম শেষ হবে। এরপরই দুই পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে ক্লাব ছাড়বেন ইতালিয়ান কোচ ডন কার্লো। তার পরবর্তী গন্তব্য হতে যাচ্ছে ব্রাজিলের ডাগ আউট। সংবাদ মাধ্যম রেলেভো এমনই দাবি করেছে। 

ইউরোপের ফুটবলে মৌসুম ধরা হয় এক জুন থেকে অন্য জুন মাস পর্যন্ত। রিয়াল মাদ্রিদ তাকে মৌসুমে ১১ মিলিয়ন ইউরো বেতন দেয়। মে’র শেষে আনচেলত্তি চাকরি ছাড়লেও পুরো মৌসুমের বেতন পাবেন তিনি। ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ তাকে রিয়াল মাদ্রিদের একজন শুভেচ্ছাদূত মনে করেন। সেভাবেই তাকে সসম্মানে ক্লাব ছাড়ার সুযোগ করে দিতে চান। 

সংবাদ মাধ্যম রেলেভো দাবি করেছে, ব্রাজিলের কোচ হওয়ার প্রশ্নে দুই পক্ষের আলাপ অনেকটাই এগিয়ে গেছে। ৪ ও ৯ জুনের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে সেলেসাওদের ডাগ আউটে দেখা যাবে ডন কার্লোকে। তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি কোন কিছুই। 

ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন আগেই জানিয়ে দিয়েছে, জুনের আগে জাতীয় দলের পরবর্তী কোচের নাম ঘোষণা করতে চায় তারা। রিয়াল মাদ্রিদে কার্লো আনচেলত্তির অবস্থা নড়বড়ে হওয়ায় অপেক্ষা করেছে সিবিএফ। তাই বলে কোন ভাবেই ক্লাব বিশ্বকাপ পর্যন্ত অপেক্ষা করবে না তারা। আগামী জুন-জুলাইয়ে হবে ক্লাব বিশ্বকাপ।

আগামী দুই বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের জন্য ১৮ মে দল ঘোষণা করতে হবে ব্রাজিলের। সিবিএফ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দল ঘোষণা করতে চায় বলে দাবি করেছে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম। তবে দল ঘোষণা সম্পর্কিত আলোচনায় নাকি যুক্ত থাকবেন আনচেলত্তি। স্কাই স্পোর্টস অবশ্য দাবি করেছে, আগামী এল ক্লাসিকোর পরই মাদ্রিদ ছাড়বেন ডন কার্লো।  
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মালাইকার বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
  • একটি টাইম স্কেল-সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তদের দুটি উচ্চতর গ্রেড পেতে আইনি বাধা কাটল
  • আট অঞ্চলে বৃষ্টির আভাস, নদীবন্দরে সতর্ক সংকেত
  • বাবার মামলায় ছেলে গ্রেপ্তার
  • নতুন পোপ নির্বাচনের সমাবেশ শুরু ৭ মে
  • আগামী নির্বাচনে ইসি প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার পদ্ধতি চালু করতে চায়: সিইসি
  • ঝড়-বৃষ্টি থাকবে কত দিন, জানাল আবহাওয়া অফিস
  • শিক্ষক রায়হান অভিযুক্ত হলেও নাম নেই অস্ত্র ব্যবসায়ীর
  • ইতালির স্থাপত্য প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ থেকে যা উপস্থাপন করা হচ্ছে
  • আনচেলত্তিকে বেতনসহ সসম্মানে বিদায় দেবে রিয়াল