সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক গবেষণা পরিমণ্ডলে ব্যাপকভাবে জার্নাল আর্টিকেল বা গবেষণাপত্র প্রত্যাহার বা বাতিল হচ্ছে। এ প্রবণতা বিশ্বজুড়ে, তবে বিশেষ কিছু দেশের নাম অথবা বিশেষ কিছু দেশের বিশেষ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষকদের নাম বারবার উচ্চারিত হচ্ছে। এভাবে প্রকাশিত হওয়া আর্টিকেল পুনর্মূল্যায়ন করে বাতিলের পেছনের মূল কারণ হচ্ছে গবেষকদের চরম মাত্রার অনিয়ম এবং রীতিবিরুদ্ধ কর্মকাণ্ড। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ফেক পর্যালোচক/রিভিউয়ার তৈরি করে আর্টিকেল রিভিউ করানো (নাম ও পদবি ঠিক রেখে নিজেদের তৈরি করা নকল ই–মেইল প্রস্তাব করা), আগে থেকেই বিভিন্ন জার্নালের সম্পাদক/এডিটরদের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করে যৌথভাবে দ্রুত আর্টিকেল প্রকাশ করা, গবেষণার তথ্য-উপাত্ত জাল করা এবং ফিল্ডওয়ার্ক সঠিকভাবে না করা, তথ্য-উপাত্ত নিজের প্রয়োজন মতো সংযোজন, বিয়োজন এবং পরিমার্জন করা; তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের সময় অনিয়ম করা, নিয়মতান্ত্রিক এবং দলগতভাবে নিজের এবং অন্যের কাজকে বারবার উদ্ধৃতি/সাইটেশন করা, অর্থ বা অন্য কোনো প্রণোদনার বিনিময়ে কাউকে সহ-লেখকত্ব দেওয়া; এবং প্রভাব ও জ্যেষ্ঠতা বিস্তার করে আর্টিকেলে নিজের নাম সংযোজন করা ইত্যাদি। এ রকম নানা কারণে সাম্প্রতিক সময়ে অনেক প্রতিষ্ঠিত গবেষকের আর্টিকেল বাতিল হয়ে যাচ্ছে।

এ ধরনের অসমীচীন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকলে আপনি নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন, যেমন আপনার চাকরি চলে যেতে পারে, অন্যায় অপরাধের কারণে আপনাকে আদালতে যেতে হতে পারে, আপনার অন্যান্য সহলেখকদের অভিযোগের ভিত্তিতে বড় অঙ্কের অর্থদণ্ড হতে পারে, ভবিষ্যতে অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আর চাকরি না হওয়া, বিশেষত পশ্চিমা দেশগুলোতে, এবং সর্বোপরি নিজের মর্যাদা এবং সুখ্যাতির চরম ক্ষতিসাধন এবং অবমাননা হতে পারে। এর চেয়েও বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে আপনার সঙ্গো গবেষণাকর্মে লিপ্ত থাকা স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা, যারা সবেমাত্র গবেষণার জগতে হাতেখড়ি দিয়েছে এবং যাদের আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গবেষণা-সংশ্লিষ্ট রীতিনীতি, পলিটিকস এবং এথিক্যাল স্ট্যান্ডার্ড নিয়ে কোনো ধারণাই নেই।

বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থীরা চেষ্টা করে থাকেন, তাঁদের স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের থিসিস থেকে একটি ভালো মানের জার্নাল আর্টিকেল পাবলিশ করার, এর ফলে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ বা ফান্ডিং পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে; কিন্তু শুরুতেই যদি তাঁদের নাম এবং গবেষণাকর্ম আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কালো তালিকাভুক্ত হয়ে যায়, তবে তারা এক অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। তাঁদের বিদেশে উচ্চতর শিক্ষা যেমন মাস্টার্স, পিএইচডি বা পোস্টডক করা থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ে দেশ-বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষকতা বা গবেষকের চাকরি এমনকি নন-একাডেমিক কিংবা ইন্ডাস্ট্রিতে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা চরম মাত্রায় হুমকির মুখে পড়তে পারে। যারা গবেষণার জন্য নিজেকে গড়ে তুলতে চান, এবং ভবিষ্যতে একজন প্রতিষ্ঠিত গবেষক কিংবা বিজ্ঞানী হিসেবে নিজেকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রতিষ্ঠিত করতে চান, তাঁদের গবেষণাপত্র জার্নালে প্রকাশ করার আগে করণীয় সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হলো।

বাংলাদেশি চিকিৎসক ও নার্সদের আয়ারল্যান্ডে ক্যারিয়ারের সুযোগ, পরীক্ষা তিনটিআয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশি প্রকৌশলীদের ক্যারিয়ারের সম্ভাবনা, যেভাবে মিলবে সুযোগফাইল ছবি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর ট ক ল

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি

‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে ‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।

এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’

‎বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন

‎জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।

‎তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।

‎কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।

‎পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”

‎গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”

‎অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, ‎যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ