বরিশালে বালুমহালের ইজারা পেতে এক সেনাসদস্যকে মারধরের জেরে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের আটজনের সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়েছে। দলের সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব রূহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত নেতাদের পদ তিন মাস স্থগিত থাকবে। 

পদ স্থগিত থাকা নেতারা হলেন, হিজলা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট দেওয়ান মো.

মনির হোসেন, মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুদ রাঢ়ী, মহানগর মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদা বেগম, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নুর হোসেন সুজন, হিজলা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য ইমরান খন্দকার, মহানগর যুবদলের সহ-সম্পাদক বেলায়েত হোসেন, রুবেল ও ফাহিম। 

তবে ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার অপর আসামি জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজুল আলম মিঠু ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মশিউল আলম মঞ্জু, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নিজাম ও কামরুলের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

এদিকে অভিযোগ তদন্তে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী আলালকে একমাত্র সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তাকে আগামী পাঁচদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। 

এ প্রসঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান জানিয়েছেন, অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নিজ নিজ সংগঠনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

উল্লেখ্য, সোমবার জেলায় ছয়টি বালুমহাল ইজারা দেওয়া হয়। হিজলা উপজেলা সংলগ্ন মেঘনার বালুমহালের ইজারা বাগাতে বিএনপি নেতারা ‘গুচ্ছ’ মিশনে নেমেছিলেন। তাদের এড়িয়ে দরপত্র জমা দেন কাজী আব্দুল মতিন নামে এক ব্যক্তি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিএনপি নেতারা মতিনের ভাতিজা সেনা সদস্য জাফরকে জেলা প্রশাসকের দপ্তরের সামনে মারধর করা হয়। 

কাজী জাফরের অভিযোগ, জাফরকে অপহরণ করে পোর্ট রোডে বিলাসবহুল রেষ্ট হাউজ রিচমার্টের ৩১০ নম্বর কক্ষে আটকে নির্যাতন করা হয়। তাকে উদ্ধারে সেনাবাহিনী সন্ধ্যার পর সেখানে গিয়ে ৩১০ নম্বর কক্ষ থেকে দেওয়ান মনির হোসেন, নুর হোসেন সুজন ও ইমরান খন্দকারকে আটক করে। যদিও ওই হোটেলে জাফরকে পাওয়া যায়নি। কাজী মতিন বাদী হয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১২ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা করেন। এদিকে মতিনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো দেওয়ান মনির, সুজন ও ইমরান বৃহস্পতিবার আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইজ র ব এনপ দল র স সদস য ব এনপ গঠন ক

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ