ফতুল্লার গৃহবধূ ফিজা হত্যার মামলার ১২ আসামির কেউ গ্রেপ্তার হয়নি
Published: 27th, March 2025 GMT
ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকায় গৃহবধূ লামিয়া আক্তার ফিজা হত্যার পৌনে তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও গ্রেপ্তার হচ্ছে না মামলার আসামিরা। ফিজা হত্যা মামলার সকল আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
চলতি বছর ২ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে ফতুল্লা থানাধীন লামাপাড়া নয়ামাটি এলাকা থেকে গৃহবধূ লামিয়া আক্তার ফিজার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ফিজা ফতুল্লার দেওভোগ বাশমুলী এলাকার মীর মোহাম্মদ আলীর মেয়ে।
এ ঘটনার পর পলাতক রয়েছে নিহত ফিজার স্বামী আসাদুজ্জামান মুন্না, তার বাবা মনির হোসেন মনুসহ পরিবারের সকল সদস্যরা।
প্রথমে এটাকে সবাই আত্মহত্যা বলে মনে করলেও একমাত্র ফিজার পরিবার দাবি করে আসছিলো তাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। প্রথমে এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলাও গ্রহণ করে পুলিশ।
কিন্তু ঘটনার চারদিনের মাথায় অর্থ্যাৎ গত ৬ জানুয়ারি ফরেনসিক রিপোর্ট দেখা মাত্র মাথাঘুরে যায় সবার। ওই রিপোর্টে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
রিপোর্টে জানাযায়, এটা আসলে কোন আত্মহত্যা ঘটনা নয় এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। নিহত ফিজার শরীরে ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
আর এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘবদ্ধ হয়ে করা হয়েছে। পরে ফরেনসিক রিপোর্ট পাওয়ার পরপরই মামলা নেয় ফতুল্লা থানা পুলিশ। নিহত লামিয়া আক্তার ফিজার বাবা মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে ওই হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামীরা হলেন, ১.
এদিকে নিহত ফিজার পরিবার জানান, ২ মাস ২৫ দিন হলো আমার মেয়ে লামিয়া আক্তার ফিজাকে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যার মূল আসামী যারা ওর স্বামী আসাদুজ্জামান মুন্না, তার মা, তার বোনসহ অন্যান্য সদস্যরা এখনও প্রকাশ্যে ঘুরতেছে। তাহলে পুলিশ কি করছে?
পুলিশ প্রশাসনের কাছে আমার একটা প্রশ্ন, আপনাদেরও মেয়ে আছে? আজ আমার মেয়ের বিচার না পেলে আরও দশটার মেয়ে বিচার পাবে না। ওরা আমার মেয়ে ফিজাকে যে কিভাবে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, এটা বলে বুঝাতে পারবো না। আমি প্রশাসনের কাছে আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
আমার মেয়ের হত্যার সাথে যারা জড়িত ওই সকল আসামিকে পুলিশ যেন দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনে। আর কোন মেয়েকে যেন এ ধরনের হত্যাকান্ডের শিকার হতে না হয়। এটাই আমার সবার কাছে আবেদন। আজকে আমার মেয়েটা নাই, আমি বুঝতেছি যে আমার কেমন লাগে।
ফিজা হত্যার আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ১৮ মার্চ মানববন্ধনে নিহতের বাবা ও মামলার বাদি মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, ফিজা হত্যার মামলার মূল আসামি আসাদুজ্জামান মুন্না, ওর মা আকলিমা, ওর বোন মুন্নি, ওর বাবা মনির হোসেন, চুন্নু, রানা এদেরকে পুলিশ ধরবে তো দূরের কথা আমার মনে পুলিশ তাদেরকে ছায়া দিচ্ছে।
নিহত ফিজার ভাই আরাফাত বলেন, আমরা কল্পনাও করেনি আমার বোনের হত্যার বিচারের জন্য এখানে আমাদের উপস্থিত হতে হবে। আমার বোন ফুলের মত পবিত্র, পর্দাশীল।
এ পর্দাশীল বোনটারে আমার ওই আসাদুজ্জামান মুন্না ও তার পরিবার নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমার বোনটাকে নির্মমভাবে হত্যা করে এ হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার জন্য তাকে জানালার গ্রিলের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছিলো।
শ্বাসরোধ করে কি কষ্ট দিয়ে আমার বোনটাকে হত্যা করা হয়েছে। অথচ ওরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ ওদের এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আমরা অবিলম্বে আসামিদের গ্রেপ্তারসহ তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
ওই মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, নিহত ফিজার বাবা মীর মোহাম্মদ আলী, মা ফাইমা আক্তার, খালা সুরাইয়া আক্তার মুন্নি, ভাই আরাফাত ও ফিজার জেডা সোহরাব হোসেন সেন্টুসহ স্থানীয় আলাল মাতবর, সেলিম, মাসুম, জাহাঙ্গীর, দুলাল মাদবর, হানিফ বেপারী, জালাল ও অনিকসহ আরও অনেকে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: হত য ন র য়ণগঞ জ গ হবধ মন র হ স ন আম র ব ন আম র ম য় পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
ভোলায় আটকে রাখা ৮টি গ্যাসভর্তি গাড়ি ছেড়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা
ভোলায় পাওয়া গ্যাস দিয়ে জেলার উন্নয়নসহ পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে আন্দোলনের অংশ হিসেবে আটক ইনট্রাকো কোম্পানির এলপিজি গ্যাসভর্তি আরও আটটি গাড়ি (কাভার্ড ভ্যান) ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ১২টার দিকে ভোলার বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বদ্বীপ ছাত্রকল্যাণ সংসদের নেতারা।
এ সময় আন্দোলনের নতুন কর্মসূচিও দেওয়া হয়। ঘোষণা অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ভোলার সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড কার্যালয়ের সামনে ছাত্র-জনতা লাগাতার অবস্থান ধর্মঘটে বসবে।
ভোলাবাসী গত তিন বছর পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। দাবিগুলো হলো, ভোলার গ্যাস ভোলায় ব্যবহার করতে হবে, ঘরে ঘরে গ্যাস–সংযোগ দিতে হবে, ইন্ট্রাকোর সঙ্গে করা অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে, ভোলায় একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন করতে হবে, ভোলার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকের শূন্য পদ পূরণ ও একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বদ্বীপ ছাত্রকল্যাণ সংসদের আহ্বায়ক রাহিম ইসলাম বলেন, ‘ইন্ট্রাকো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তারা আমাদের দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছে। শুক্রবার সকাল থেকে রোববার রাত পর্যন্ত আমাদের ডাকে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ, মানববন্ধন, মশাল মিছিল করে এবং ইন্ট্রাকোর আটটি গ্যাসবাহী গাড়ি আটক করে। পরে নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় এনে গাড়িগুলো ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে ওপর মহলের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত গ্যাস ভোলার বাইরে যাবে না।’
আরও পড়ুনভোলার গ্যাস নিজেরা ব্যবহার করতে চান ভোলাবাসী, পাঁচ দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৩ ঘণ্টা আগেরাহিম ইসলাম আরও বলেন, ‘ফেসবুকে কিছু মানুষ আমাদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করছে, আমরা নাকি টাকার বিনিময়ে গাড়ি ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে চাই, গাড়িগুলো কেবল নিরাপত্তার স্বার্থে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাস করি।’
‘আগামীর ভোলা’ সংগঠনের মুখ্য সংগঠক মীর মোশাররফ বলেন, ভোলার ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ রয়েছে একটি বিশেষ আইনের কারণে, যা সরকারের স্বার্থে প্রণীত। অথচ অন্যান্য এলাকায় ইন্ডাস্ট্রিতে গ্যাস–সংযোগ বন্ধ থাকলেও ভোলায় তা চলছে। এখন যেহেতু সংসদ বন্ধ, তাই রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করে ঘরে ঘরে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া সম্ভব।
এ সম্পর্কে ইন্ট্রাকোর ভোলা ডিপোর উপমহাব্যবস্থাপক নুরুন্নবী বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তাঁরা আমাদের গাড়িগুলো ছেড়ে দিয়েছেন। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আমরা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখছি।’
আরও পড়ুনভোলায় গ্যাসভর্তি আরও তিনটি গাড়ি আটকে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ, উত্তেজনা১৯ এপ্রিল ২০২৫