আর্থিক সংকটে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতায় ‘সাইনটক’–এর অংশগ্রহণ অনিশ্চিত
Published: 28th, March 2025 GMT
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের দল ‘সাইনটক’ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রতিযোগিতা ‘গ্লোবাল হেলথ টেকনোলজিস ডিজাইন কমপিটিশন ২০২৫’–এ অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আগামী ১০-১১ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনের রাইস ইউনিভার্সিটিতে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।
তবে আর্থিক সংকটে ওই প্রতিযোগিতায় ‘সাইনটক’ দলের অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দলটির সদস্যরা জানান, প্রতিযোগিতার আয়োজক কর্তৃপক্ষ থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করবে, তবে যাতায়াত ও অন্যান্য খরচ নিজেদের বহন করতে হবে।
সাইনটক দলের সদস্যরা হলেন গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুব আহমেদ, তৃতীয় বর্ষের সুস্মিতা জাহান, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইরফান নাফিজ, শিল্প উৎপাদন ও প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুদ্র সরকার।
ওই শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শত শত আবেদন থেকে মাত্র ২৪টি দল চূড়ান্ত পর্বের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে সাইনটকসহ বুয়েটের আরও দুটি দল অংশ নেবে। তবে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে অর্থসংকটে পড়েছেন সাইনটকের সদস্যরা। প্রতিযোগিতার আয়োজকেরা দলটির থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করলেও যাতায়াত ও অন্যান্য খরচ নিজেদের বহন করতে হবে। এতে প্রায় ১২ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু সাইনটক দলের পক্ষে তা বহন করা সম্ভব নয়। এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি তাঁদের সহায়তায় এগিয়ে আসেননি।
সাইনটক দলের সদস্য সুস্মিতা জাহান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলাম। তাঁরা বলেছেন, বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবেন। প্রো-ভিসি (সহ–উপাচার্য) স্যারের সাথেও কথা হয়েছে। তিনি বলেছিলেন, “তোমরা বাজেটের বর্ণনাসহ যাবতীয় অনুদানের একটা আবেদন লিখে জমা দাও, আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব।” তবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় একটু অসুবিধা হচ্ছে। আবার আগে থেকেই উড়োজাহাজের টিকিট কনফার্ম করা লাগবে।’
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে সহ–উপাচার্য সাজেদুল করিম বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে দেখবেন। তবে ঈদের ছুটিতে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় কিছুটা জটিলতা আছে।
সাইনটকের উদ্ভাবন
সাইনটকের দলের সদস্যরা জানান, ‘সাইনটক’ এমন একটি প্রযুক্তি তৈরির চেষ্টা করছে, যা হাতে পরার মতো একটি বিশেষ উপকরণ (গ্লাভস) ব্যবহার করে সংকেতভাষাকে সরাসরি কথায় রূপান্তরিত করতে পারবে। এর মাধ্যমে বাক্ ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সহজে কথা বলতে পারবেন। পাশাপাশি যাঁরা পক্ষাঘাত বা অন্য কোনো কারণে স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারেন না, তাঁদের জন্যও এটি সহায়ক হতে পারে।
সুস্মিতা জাহান বলেন, ‘আমরা চাই, যাঁরা কথা বলতে পারেন না, তাঁদের ভাষা থেমে না যাক। আমাদের প্রযুক্তি তাঁদের জন্য কথা বলবে।’
দলের আরেক সদস্য মাহবুব আহমেদ বলেন, ‘এই অর্জন শুধু আমাদের নয়, এটি বাংলাদেশের জন্য গর্বের বিষয়। আন্তর্জাতিক পরিসরে আমাদের কাজ তুলে ধরার সুযোগ এসেছে, যা ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে কাজে লাগবে। আমরা নিজেরাই টাকার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। কিন্তু এত বড় যাত্রার জন্য যে পরিমাণ অর্থ দরকার, তা জোগাড় করা কঠিন হয়ে পড়ছে।’
দেশে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সাইনটক দলের সফলতা রয়েছে। শাবিপ্রবির রোবোটিকস সংগঠন রোবোসাস্ট’-এর সঙ্গে যুক্ত এবং রোবোসাস্ট সিনিয়র প্রোজেক্ট হান্ট ২০২৫ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন দলটির সদস্যরা। এর আগে ‘সাইনটক’ ইয়্যুথ স্টার্টআপ সামিট ২০২৫ সিলেট বিভাগের প্রতিযোগিতায় শীর্ষস্থান অর্জন করে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র সদস য র জন য বর ষ র
এছাড়াও পড়ুন:
ভোট ম্যানুয়ালি গণনার আবেদন করলেন উমামা ফাতেমা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোট ম্যানুয়ালি (হাতে) গণনা করার আবেদন করেছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী উমামা ফাতেমা। সোমবার প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন তিনি।
আবেদনে উমামা ফাতেমা লিখেছেন, ‘আমরা স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের পক্ষ থেকে সদ্য অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর নির্বাচনকেন্দ্রিক স্বচ্ছতা যাচাইকরণের উদ্দেশ্যে প্রতিটি কেন্দ্রের ভোটদাতাদের তালিকার কপি, ওএমআর মেশিনের পরিবর্তে ম্যানুয়ালি পুনরায় ভোট গণনা এবং ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের প্রবেশের সিসিটিভি ফুটেজ শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করার অনুরোধ করছি।’
৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। ওই দিন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা চলার মধ্যে রাত সোয়া তিনটার পর ফেসবুকে এক পোস্টে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন উমামা ফাতেমা।
ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে জয়ী হন ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের সাদিক কায়েম। তিনি পেয়েছিলেন ১৪ হাজার ৪২ ভোট। অন্যদিকে ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট পেয়ে চতুর্থ হন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের উমামা ফাতেমা।
আরও পড়ুনডাকসুর ২৮ পদে কার সঙ্গে কার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলো, জয়ের ব্যবধান কত১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫