ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। তবে গাড়ির সংখ্যা বাড়লেও নেই যানজট। স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলাচল করছে। বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে বিভিন্ন পোশাক কারখানা ছুটি হওয়ায় মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। শুক্রবার থেকে আরও চাপ বাড়বে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কে দ্বিগুণ হয়েছে যানবাহনের সংখ্যা। যাত্রীবাহী বাস ছাড়াও ট্রাক, পিকআপ, বিভিন্ন সড়কের লোকাল বাস, লেগুনায় যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। পাশাপাশি যাত্রী পরিবহন করছে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার। মহাসড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, থানা পুলিশ এবং  ট্রাফিক প্রায় সাতশ পুলিশ  কাজ করছে।

মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চারলেন সুবিধা থাকলেও এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত চারলেন প্রকল্পের কাজ চলছে। এ কারণে চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত যানবাহন স্বাভাবিক গতি আসতে পারলেও এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার রাস্তায় চারলেন নেই। এই ১৩ কিলোমিটারেই ডাবল সার্ভিস লেন করা হয়েছে। চারলেন না হলেও ডাবল সার্ভিস লেন দিয়ে চার লেনের সুবিধা নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। তবে এই ১৩ কিলোমিটারে কোনো গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে সেখানে যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। 

যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজার যানবাহন পারাপার: এদিকে যমুনা সেতুর ওপর দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজার ২২৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৬৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫শ’ টাকা। যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজার ২২৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ২০ হাজার ২৪১টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার ৪৫০ টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৪ হাজার ৯৮৬ টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর বিপরীত টোল আদায় ১ কোটি ৩০ লাখ ৬৭ হাজার ৫০ টাকা।

যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, মহাসড়কে যানজট নিরসনে যমুনা সেতু পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য চারটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও নেই যানজট। আশা করছি, ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে। 

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মুহাম্মদ শরীফ জানান, মহাসড়কে স্বাভাবিকভাবেই যানবাহন চলাচল করছে। রাস্তায় যানবাহনের চাপ থাকলেও কোনো যানজট নেই। যানজট যাতে না হয় সেজন্য হাইওয়ে পুলিশ কাজ করেছে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে মহাসড়কে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

 

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ য ত র য নজট এল ঙ গ য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ