স্বস্তির ঈদযাত্রা ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে, নেই যানজট
Published: 28th, March 2025 GMT
ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। তবে গাড়ির সংখ্যা বাড়লেও নেই যানজট। স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলাচল করছে। বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে বিভিন্ন পোশাক কারখানা ছুটি হওয়ায় মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। শুক্রবার থেকে আরও চাপ বাড়বে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কে দ্বিগুণ হয়েছে যানবাহনের সংখ্যা। যাত্রীবাহী বাস ছাড়াও ট্রাক, পিকআপ, বিভিন্ন সড়কের লোকাল বাস, লেগুনায় যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। পাশাপাশি যাত্রী পরিবহন করছে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার। মহাসড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, থানা পুলিশ এবং ট্রাফিক প্রায় সাতশ পুলিশ কাজ করছে।
মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চারলেন সুবিধা থাকলেও এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত চারলেন প্রকল্পের কাজ চলছে। এ কারণে চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত যানবাহন স্বাভাবিক গতি আসতে পারলেও এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার রাস্তায় চারলেন নেই। এই ১৩ কিলোমিটারেই ডাবল সার্ভিস লেন করা হয়েছে। চারলেন না হলেও ডাবল সার্ভিস লেন দিয়ে চার লেনের সুবিধা নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। তবে এই ১৩ কিলোমিটারে কোনো গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে সেখানে যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজার যানবাহন পারাপার: এদিকে যমুনা সেতুর ওপর দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজার ২২৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৬৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫শ’ টাকা। যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজার ২২৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ২০ হাজার ২৪১টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার ৪৫০ টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৪ হাজার ৯৮৬ টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর বিপরীত টোল আদায় ১ কোটি ৩০ লাখ ৬৭ হাজার ৫০ টাকা।
যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, মহাসড়কে যানজট নিরসনে যমুনা সেতু পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য চারটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও নেই যানজট। আশা করছি, ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মুহাম্মদ শরীফ জানান, মহাসড়কে স্বাভাবিকভাবেই যানবাহন চলাচল করছে। রাস্তায় যানবাহনের চাপ থাকলেও কোনো যানজট নেই। যানজট যাতে না হয় সেজন্য হাইওয়ে পুলিশ কাজ করেছে। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে মহাসড়কে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদ য ত র য নজট এল ঙ গ য নজট
এছাড়াও পড়ুন:
‘২২৬ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’ বক্তব্যটি শেখ হাসিনার: তাজুল ইসলাম
‘২২৬ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’—অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া অডিও রেকর্ডের এই বক্তব্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ওই অডিও রেকর্ড সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষা করিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে ট্রাইব্যুনালের ফটকে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই কথোপকথনের মাধ্যমে আসামি শেখ হাসিনা বিচারপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছেন।
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে কথা বলেছেন। এর পাশাপাশি বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থানরত নেতা–কর্মীদের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন দাবি করে বেশ কয়েকটি অডিও রেকর্ড অনলাইনে ছড়িয়েছে। এগুলোর একটি রেকর্ডে একজনের সঙ্গে কথোপকথনের এক পর্যায়ে একটি নারীকণ্ঠকে বলতে শোনা যায়, সারা দেশে তাঁর নামে ২২৭টি হত্যা মামলা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তিনি ২২৭টি হত্যার লাইসেন্স পেয়েছেন। কারণ, একটি হত্যা মামলায় যে সাজা, দুই শর বেশি হত্যা মামলায়ও সেই সাজা।
আজ দুপুরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের সময়ে এ বিষয়ে কথা বলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এই কথোপকথনটি সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। পরীক্ষা করে সিআইডি মতামত দেয় যে কথোপকথনটি শেখ হাসিনা এবং শাকিল আহমেদের মধ্যেই হয়েছে। এটা বানানো কোনো কনভারসেশন (কথোপকথন) কিংবা এআই দিয়ে তৈরি নয়।’
শেখ হাসিনা ওই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে পুলিশ ও মামলার সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আসামি শেখ হাসিনা তাঁর মামলার সাক্ষীদের বাড়িঘর ভাঙচুর করার নির্দেশ দেন। তিনি পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, তারা যেন মনে রাখে, তাদের ভবিষ্যতেও চাকরি করতে হবে।’
শেখ হাসিনার এই অডিও রেকর্ড এবং সেটার ফরেনসিক পরীক্ষার প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেছেন বলে জানান তাজুল ইসলাম। তিনি আরও বলেন, ‘আদালত আগামী ১৫ মে আসামিদের সশরীরে কিংবা আইনজীবীর মাধ্যমে জবাব দাখিল করতে বলেছেন। সেদিন তাঁরা তাঁদের জবাব দাখিল করলে আদালত সে অনুযায়ী পরবর্তী কার্যধারা গ্রহণ করবেন।’