ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বলদাখাল থেকে গৌরীপুর পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে। আজ শনিবার সকাল আটটা থেকে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। যানজট না থাকলেও ধীরগতিতে চলছে গাড়ি। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ঘরমুখী মানুষ স্বস্তির পরিবর্তে কিছুটা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

চট্টগ্রাম বিভাগের প্রবেশপথ ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার মেঘনা–গোমতী সেতু এলাকা। এই মহাসড়ক দিয়ে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলার মানুষ নিয়মিত ঘরে ফেরেন। মহাসড়কের গৌরীপুর থেকে মেঘনা–গোমতী সেতু এলাকা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটারে নিত্যদিনের যানজটের ভোগান্তি থাকে। ঈদের সময় আরও বেড়ে যায়। এবার ঈদকে সামনে রেখে দাউদকান্দির ২০ কিলোমিটার অংশে (ইলিয়টগঞ্জ থেকে মেঘনা–গোমতী সেতু) যানজট নিরসনে মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা গৌরীপুরের স্থাপনাগুলো উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অপসারণ করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্য, হাইওয়ে থানা–পুলিশ, মডেল থানা–পুলিশ, কমিউনিটি পুলিশ, নিরাপদ সড়ক চাই–এর সদস্যরা একযোগে মহাসড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। কিন্তু তারপরও মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসেনি।

লোকাল মাইক্রোবাস ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলো দফায় দফায় মহাসড়কেই স্ট্যান্ড গড়ে তুলছে। পাশাপাশি যাত্রীবাহী বাসগুলো মহাসড়কের ঢাকা–হোমনা সড়কের প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করাচ্ছে, এ কারণেই যানবাহনের চাপ বেড়ে যানজটের তৈরি হচ্ছে। সকাল সাড়ে ১০টায় কথা হয় দাউদকান্দির পেন্নাই বাজারের ফল ব্যবসায়ী সুমন মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ফল নিয়ে সকাল সাতটায় ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে ঢাকা–হোমনা সুপার সার্ভিসের বাসে ওঠেন। দাউদকান্দির মেঘনা–গোমতী সেতু থেকে গৌরীপুর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার মহাসড়ক অতিক্রম করতে দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে। বাসের চালক বিল্লাল হোসেন বলেন, এবার ঈদযাত্রায় স্বস্তির মধ্যেই প্রচণ্ড গরমে অস্বস্তি কাজ করছে।

সকাল ১০টায় মহাসড়কের স্বল্পপেন্নাই এলাকায় কথা হয় চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার কাদলা গ্রামের বাসিন্দা ঢাকার চাকরিজীবী মেহেদী হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, তাঁর মাকে সঙ্গে নিয়ে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামের বাড়িতে রওনা দেন। সকাল আটটায় ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে বাসে ওঠেন। ৫০ মিনিটের মহাসড়ক দুই ঘণ্টায় অতিক্রম করেন।

দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

নুরুল আফছার বলেন, ঘরমুখী মানুষের নির্বিঘ্নে যাত্রার জন্য রাত–দিন মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করছেন তাঁরা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ উদক ন দ য নজট উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা বাড়ল

ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে দুই দেশ। ইসরায়েলে গত শনিবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। একই রাতে ইরানের গ্যাসক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় ইরানের কতজন নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।

গতকাল রোববার ছিল দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার তৃতীয় দিন। শনিবার রাতের পর রোববার দিনের বেলায়ও পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। এদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র

গোষ্ঠী হুতি। চলমান সংঘাতে এই প্রথম ইরানপন্থী কোনো গোষ্ঠী যোগ দিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকে শান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।

গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এ রাতেও তেহরানের নিয়াভারান, ভালিয়াসর ও হাফতে তির স্কয়ার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাশহাদ বিমানবন্দরে একটি ‘রিফুয়েলিং’ উড়োজাহাজে আঘাত হানার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই উড়োজাহাজগুলো আকাশে থাকা অবস্থায় অন্য উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম। ইরান থেকেও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।

ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানের

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটিতে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ‘পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র’ স্থাপনায় আঘাত হানে। শুক্র ও শনিবারও ইরানে হামলা চলে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরানও। তবে ইসরায়েলে শনিবার রাতভর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল সবচেয়ে ব্যাপক।

ইসরায়েলে শনিবার প্রথম দফায় ইরানের হামলা শুরু হয় রাত ১১টার পরপর। এ সময় ইসরায়েলের জেরুজালেম ও হাইফা শহরে বেজে ওঠে সাইরেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইফায় অবস্থিত তেল শোধনাগার। পরে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলা শুরু করে ইরান। তখন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার রাতে দুই দফায় ৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। প্রথম দফায় ছোড়া হয় ৪০টি। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তামরা শহরে চারজন নিহত হন। দ্বিতীয় দফায় ছোড়া হয় ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর একটি আঘাত হানে তেল আবিবের কাছে বাত ইয়াম এলাকায়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হন। এ ছাড়া রেহভোত শহরে আহত হয়েছেন ৪০ জন।

ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে ইরানের শাহরান তেলের ডিপো। গতকাল দেশটির রাজধানী তেহরানের কাছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ