ইসলামিক জ্ঞান চর্চার নতুন দ্বার মুসলিম সেবা ডটকম
Published: 29th, March 2025 GMT
ইসলামিক জ্ঞান চর্চা ও ধর্মীয় জীবনযাপনকে আরো সহজ এবং প্রযুক্তিগতভাবে সমৃদ্ধ করতে মুসলিম সেবা ডটকম সম্প্রতি তাদের নতুন ইসলামিক ওয়েবসাইট উন্মোচন করেছে। ডিজিটাল যুগে মুসলিমদের জন্য উপযোগী এই অ্যাপটি আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে ইসলামিক শিক্ষা, নামাজের সময়সূচি, দোয়া ও যিকিরসহ গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক তথ্যে সমৃদ্ধ।
বর্তমানে প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে ইসলামের সঠিক জ্ঞান ও ধর্মীয় অনুশীলন সহজতর হয়েছে। অনলাইনে কুরআন পাঠ করা, নামাজের সময়সূচি জানা, এবং ইসলামিক প্রশ্নোত্তর পাওয়া এখন অনেক বেশি সহজ। মুসলিম সেবা ডটকমের এই নতুন অ্যাপটি মূলত সেই সুবিধাগুলোকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে, যা মুসলিমদের দৈনন্দিন ধর্মীয় কার্যাবলীকে সহজ করবে।
মুসলিম সেবা ডটকম-এর প্রধান সেবা
বিশুদ্ধ ইসলামিক কন্টেন্ট-নির্ভরযোগ্য এবং প্রামাণিক ইসলামিক তথ্য ও শিক্ষামূলক কন্টেন্ট। সহীহ কুরআন ও হাদিস নির্ভুল তাফসীর ও ব্যাখ্যা-ইসলামিক বই ও অডিও বিশেষজ্ঞ আলেমদের রচিত গ্রন্থ। অডিও-ভিডিও কন্টেন্ট ১১৪টি সূরার তেলাওয়াত, দোয়া ও জিকির। ইসলামিক সফটওয়্যার-ইসলামিক জীবনযাপন সহজ করতে প্রযুক্তিগত সমাধান। আল-কুরআন অ্যাপ ১১৪টি সূরার শানে নুযূল, বাংলা উচ্চারণ, অর্থ ও তাফসীর। হাদিস ও তাফসীর সফটওয়্যার সহীহ হাদিস ও ব্যাখ্যা সহজে পড়ার সুযোগ। ড.
মুসলিম সেবা ডটকম বিশেষভাবে মুসলিমদের জন্য তৈরি করা হয়েছে, যাতে তারা যেকোনো সময়, যেকোনো স্থান থেকে ইসলামিক তথ্য ও শিক্ষা পেতে পারেন। এটি বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য সহায়ক হবে, যারা প্রযুক্তির সঙ্গে অভ্যস্ত এবং স্মার্টফোনের মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
মুসলিম সেবা ডটকম উন্মোচনের পর থেকেই ব্যবহারকারীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। মোহাম্মদ রাসেল নামে একজন ব্যবহারকারী বলেন, “এই অ্যাপটি আমার জন্য অত্যন্ত দরকারি হয়েছে। এখন আমি যেকোনো সময় কুরআন পড়তে পারি, দোয়া ও যিকির পড়তে পারি, এমনকি নামাজের সময়সূচিও জানতে পারি।”
শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার বলেন, “আমি ইসলামিক কোর্সে খুবই আগ্রহী। মুসলিম সেবা অ্যাপে এমন অনেক তথ্যসমৃদ্ধ ইসলামিক কোর্স রয়েছে, যা আমার ইসলামিক জ্ঞান বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে।”
মুসলিম সেবা ডটকম-এর প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল এমন একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, যা মুসলিমদের ধর্মীয় চর্চায় সহায়তা করবে। আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে আমরা ইসলামিক শিক্ষা ও সেবা আরও সহজলভ্য করার চেষ্টা করছি। এই অ্যাপটি মুসলিম সমাজের জন্য একটি মূল্যবান সংযোজন হবে বলে আমরা আশাবাদী।”
ইসলামিক জ্ঞান ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরি মুসলিম সেবা ওয়েবসাইট মুসলিমদের দৈনন্দিন জীবনযাপন সহজতর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: www.muslimseba.com।
ঢাকা/তৌহিদ/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম ক জ ঞ ন দ র জন য এই অ য প ক রআন
এছাড়াও পড়ুন:
অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
নিরাপত্তার অজুহাতে গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখসারির ছয়জন সমন্বয়ককে। আটক থাকার এক পর্যায়ে তাঁরা অনশন শুরু করেন। ৩২ ঘণ্টা অনশনের পর ১ আগস্ট (২০২৪ সাল) দুপুরে ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয় থেকে কালো রঙের দুটি গাড়িতে করে যাঁর যাঁর ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয়।
সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও আবু বাকের মজুমদারকে ছয় দিন; সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে পাঁচ দিন এবং নুসরাত তাবাসসুমকে চার দিন ডিবি কার্যালয়ে তখন আটক রাখা হয়েছিল। এই ছয় সমন্বয়কের মধ্যে নাহিদ এখন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক। আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা। সারজিস, হাসনাত ও নুসরাত এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আবু বাকের এখন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক।
ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পাওয়ার সেই ঘটনা সম্পর্কে সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আমার বোনের বাসার লোকেশন (ঠিকানা) দিয়েছিলাম ডিবিকে। ১ আগস্ট (২০২৪ সাল) ডিবি তাদের তত্ত্বাবধানেই আমাদের ছয়জনকে যার যার গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। বোনের বাসায় পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পর আমি প্রথমে আসিফ ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে মানিকনগরের একটা জায়গায় দেখা করি। আমরা পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করি। কীভাবে এক দফার (সরকার পতনের) ঘোষণায় যাওয়া যায়, সে বিষয়েও সেদিন আমরা চিন্তা করি।’
সেদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ ও হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’ কর্মসূচি পালিত হয়। এ কর্মসূচির আওতায় গণসংগীত, পথনাটক, দেয়াললিখন, স্মৃতিচারণা ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয় রাজধানী ঢাকাসহ অন্তত ১৬টি জেলা ও মহানগরে। এসব কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কিছু জায়গায় শিক্ষক ও আইনজীবীরা অংশ নেন। তবে কোথাও কোথাও কর্মসূচিতে বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অনেক জায়গায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আটক করা হয়।
প্রতিবাদ, বিক্ষোভসেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উদ্যোগে পৃথক সমাবেশ-মানববন্ধন ও মিছিল করা হয়। পাশাপাশি সেদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধ করে ছাত্র-জনতা।
‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের কঠোর দমনপ্রক্রিয়া ও গুলিতে ছাত্র-জনতা হত্যা’র প্রতিবাদে ১ আগস্ট বেলা ১১টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জাতীয় সংসদের সামনে সমাবেশের কর্মসূচি ছিল শিল্পী ও কলাকুশলীদের। ‘দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজ’-এর ব্যানারে তাঁরা প্রথমে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ–সংলগ্ন ইন্দিরা রোডের প্রান্তে সমবেত হন। সেদিন সকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিল্পীরা ব্যানার-পোস্টার নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন।
পরে শিল্পীরা ইন্দিরা রোড দিয়ে শোভাযাত্রা করে ফার্মগেটে আনন্দ সিনেমা হলের কাছে সমবেত হন। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই তাঁরা সেখানে সড়কের পাশে ব্যানার-পোস্টার নিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। শিল্পী, নির্মাতা ও কলাকুশলীরা ছাত্র-জনতার হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, যে বর্বর পন্থায় শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত আন্দোলনকে দমন করা হচ্ছে, তা কোনো গণতান্ত্রিক সভ্য সমাজে ঘটতে পারে না।
দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পীদের সমাবেশ থেকে সেদিন শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানানো হয়। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের বিচার, গণগ্রেপ্তার, মামলা ও হয়রানি বন্ধের দাবি করা হয়। সমাবেশ থেকে আরও জানানো হয়, শিল্পীরা তাঁদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন।
সেদিন বিকেলে ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ের সামনে ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ’–এর ব্যানারে মানববন্ধন করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। মানববন্ধনে অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছিলেন, গুলি করে শিশুসহ নির্বিচার মানুষ হত্যার তদন্ত জাতিসংঘের অধীনে করতে হবে।
সেই মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল (এখন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা) বলেন, হত্যার বিচার করতে হবে। হুকুমদাতাদেরও বিচার করতে হবে।
কূটনীতিকদের ‘ব্রিফ’জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করে ১ আগস্ট বিকেলে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সেদিন বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফ করা হয়। সেই ব্রিফিংয়ে বিদেশি কূটনীতিকেরা সহিংসতায় হতাহতের ঘটনা ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের দাবি জানান।