অষ্টম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নসহ কয়েকটি দাবিতে সাংবাদিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে গত ২০ জানুয়ারি অকস্মাৎ দৈনিক ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। প্রায় ৬৬ দিন পর ২৭ মার্চ ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি’ নিয়ন্ত্রণে আসার কথা বলে প্রধান কার্যালয় ফের খুলে দেওয়া হয়।

তবে আন্দোলনকারী ৪৫ জন কর্মীর ৩ মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদের বোনাস পরিশোধ করা হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্যরা বেতন-বোনাস পেয়েছেন।

জানা গেছে, বেতন বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের দাবিতে ১৯ জানুয়ারি বিকেলে কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন শতাধিক সংবাদকর্মী। এর জেরেই পরদিন ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। দুদিন পর আন্দোলনে অংশ নেওয়া ৪২ কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়। এরপরও তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। এতে একাত্মতা প্রকাশ করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন। 

আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশক সাবের হোসেন চৌধুরীর ব্যবসায়িক কার্যালয় কাকরাইলের এইচআর ভবন ঘেরাও করেন বছরের পর বছর বৈষম্যের শিকার সংবাদকর্মীরা। এক পর্যায়ে এইচআর ভবনের ভেতর থেকে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে ৮-১০ জন সংবাদকর্মী আহত হন। এরপরই সাবের হোসেন চৌধুরী ফোনে ডিইউজে সভাপতি মো.

 শহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন এবং ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সুরাহার আশ্বাস দেন। নানা তালবাহানায় প্রায় দেড় মাস সময়ক্ষেপণের পর গত ২৬ মার্চ একটা সমঝোতায় আসেন ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ ও এইচআর ভবনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সিদ্ধান্ত হয়- পরদিন ২৭ মার্চ ছাঁটাইকৃত ৪২ জন তাদের পুরো টার্মিনেশন বেনিফিট বুঝে পাবেন। আর আন্দোলনে থাকা বাকি ৪৫ জনের চাকরি অব্যাহত থাকবে এবং তারা ২৭ মার্চ দুপুরের মধ্যে ৩ মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পাবেন। কিন্তু কথা রাখেনি এইচআর ভবন। ছাঁটাইকৃত ৪২ জনকে পুরো টাকা দেওয়া হয়নি। যে হিসাব দেখে তারা সমঝোতায় রাজি হয়েছিলেন, দেওয়া হয়েছে তার চেয়ে অনেক কম টাকা। অন্যদিকে ছাঁটাই না হওয়া ৪৫ জন কর্মী কোন টাকাই পাননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রেসকর্মী বলেন, ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষ আবারো আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। ২৭ মার্চ দুপুরের মধ্যে ৩ মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা করেনি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আমি কীভাবে ঈদ করবো? গ্রামের বাড়ি যে যাব সে উপায়ও নেই। বাড়িওয়ালা বলে দিয়েছেন, ৩ মাসের বকেয়া ভাড়া না দিয়ে কোথাও যাওয়া যাবে না। কী যে করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। যারা আমাদের এই দুর্দশায় ফেলেছেন তাদের প্রতি ধিক্কার জানাই।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ভোরের কাগজের সাংবাদিক, কর্মকর্তা কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধ করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ভোরের কাগজের সংবাদকর্মীদের আন্দোলনের সঙ্গে মাঠে থাকবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৩ ম স র বক য় স ব দকর ম ২৭ ম র চ

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের

ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে। 

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে  বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ