‘স্বপ্ন টানে’ এখন আইকনিক টান হয়ে গেছে
Published: 30th, March 2025 GMT
দেড় দশক ধরে ঈদ উৎসবে বাড়ি ফেরা মানুষের প্রিয় একটি গান ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি’। বিজ্ঞাপনচিত্রের জন্য গানটি প্রথম লিখেছিলেন আনিকা মাহজাবিন। হাবিব ওয়াহিদের সুর ও সংগীতায়োজনে গানটি প্রথম গেয়েছেন মিলন মাহমুদ। এই গানটি যেন শিকড়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ৯ বছর আগে নতুন করে ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি ২’ গানটি তৈরি করে। রাসেল মাহমুদের লেখা এই গানের সুর ও সংগীতায়োজন করেন হাবিব ওয়াহিদ। গানটিতে কণ্ঠ দেন মিথুন চক্র। যন্ত্রশিল্পী হিসেবে পরিচিত হলেও মিথুনের এই কণ্ঠ দেশ–বিদেশের সবার কাছে পৌঁছে যায়। এই প্রতিবেদনে জানা যাবে ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি ২’ গানের গল্প।
মিলন মাহমুদের কণ্ঠে ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি’ প্রকাশের সাত বছর পর ২০১৬ সালে গ্রামীণফোনের ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি ২’ বিজ্ঞাপনের থিম সংয়ের সুর ও সংগীতায়োজন করেন হাবিব ওয়াহিদ। রাসেল মাহমুদের লেখা এই গানে কণ্ঠ দেন শিল্পী মিথুন চক্র। বিজ্ঞাপনচিত্রটি প্রকাশের পর এই গানটিও তুমুল আলোচিত হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ২০২৩ সালের এপ্রিলে মিথুন চক্র প্রথম আলোকে বলেন, গানটি নিয়ে খুব আলোচনা হলেও অনেকেই জানেন না কণ্ঠ কে দিয়েছেন। অনেকে মনে করেন, হাবিব ওয়াহিদের কিংবা মিলন মাহমুদ গানটি গেয়েছেন। ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি ২’ গানের কণ্ঠ যে মিথুন চক্রের সেটা জানেন না। আসলে দুই গানের শিরোনাম একই হলেও কথা পুরোটাই আলাদা, লিখেছেনও ভিন্ন দুই গীতিকার। তবে দুই গানের সুরে খানিকটা মিল থাকায় ধন্দে পড়তে হয়েছে দর্শকদের।
মিথুন চক্র.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই গ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বেকহাম এখন থেকে ‘স্যার’
খেলাধুলা ও দাতব্যকাজে অবদানের জন্য ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও ফ্যাশন আইকন ডেভিড বেকহামকে ‘নাইটহুড’ দেওয়া হয়েছে। তাঁর পাশাপাশি রক ব্যান্ড ‘দ্য হু’–এর গায়ক ও সহপ্রতিষ্ঠাতা রজার ডালট্রে ও হলিউড অভিনেতা গ্যারি ওল্ডম্যানকেও একই সম্মানে ভূষিত করা হয়।
আরও পড়ুন৩৭ পেরোনো মেসি এবার ৪৭তম ট্রফির খোঁজে ২ ঘণ্টা আগেইংল্যান্ডের হয়ে ১১৫ ম্যাচ খেলা বেকহাম ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদ, এসি মিলান ও পিএসজির মতো ক্লাব মাতিয়েছেন। ইউনাইটেডের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী ৫০ বছর বয়সী সাবেক এই মিডফিল্ডার মেজর লিগ সকারের (এমএলসি) ক্লাব ইন্টার মায়ামির সহমালিক। সম্মানসূচক নাইটহুড পাওয়ার পর বেকহামের নামের সঙ্গে এখন ‘স্যার’ উপাধি যোগ হবে এবং তাঁর স্ত্রী স্পাইস গার্লস ব্যান্ডের সাবেক সদস্য ভিক্টোরিয়া বেকহাম ‘লেডি বেকহাম’ হিসেবে পরিচিত হবেন।
নাইটহুড পাওয়ার আলোচনায় আগে থেকেই ছিলেন বেকহাম। ২০০৩ সালে অফিসার অব দ্য অর্ডার অব ব্রিটিশ এম্পায়ার সম্মানে তাঁকে ভূষিত করা হয়। ফ্যাশন শিল্পে অবদানের জন্য পরে ভিক্টোরিয়াও একই সম্মান পান। প্রেস অ্যাসোসিয়েশনকে দেওয়া বিবৃতিতে বেকহাম বলেছেন, ‘পূর্ব লন্ডনে বাবা–মা ও দাদা–দাদিদের সঙ্গে বেড়ে উঠেছি, যাঁরা ভীষণ দেশপ্রেমিক ছিলেন এবং ব্রিটিশ হওয়ার জন্য গর্ববোধ করতেন। কখনো ভাবিনি এমন সত্যিকারের সম্মান পাব। আমি খুব ভাগ্যবান; কারণ, যে কাজ আমি করি সেটা করতে পারছি এবং তার স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য কৃতজ্ঞ।’
আরও পড়ুনক্লাব বিশ্বকাপ জেতার আশায় কোন দল কত খরচ করল৫ ঘণ্টা আগেখেলাধুলা, ফ্যাশন ও ব্যবসা মিলিয়ে বেকহাম নিজেকে দিন দিন বৈশ্বিক আইকনে পরিণত করার ফল হিসেবে এ সম্মান পেলেন। যুক্তরাজ্যের সম্মানসূচক উপাধিগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। রাজা তৃতীয় চার্লসের জন্মদিনের ‘অনার্স লিস্ট’–এ তাঁকে গতকাল নাইটহুড দেওয়া হয়।
মন্ট্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেরি এজনেস পারমেন্তিয়ের বেকহাম ও ভিক্টোরিয়াকে নিয়ে বেশ কিছু নিবন্ধ লিখেছেন। বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, এই সম্মান ‘শক্তিশালী প্রতীক।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘একজন সম্মাননীয় ব্রিটিশ হিসেবে এটা তার ইমেজকে আরও শক্তিশালী করল।’
বেকহামের পোশাক থেকে চুলের ছাঁট—ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডগুলোর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু থেকেছে সব সময়ই। নিজেকে বৈশ্বিক ব্র্যান্ডে পরিণত করা সাবেক এই ফুটবলারকে প্রতিকূল পরিস্থিতিও পার হতে হয়েছে। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে নকআউট ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় ইংল্যান্ডের ‘সবচেয়ে ঘৃণিত মানুষ’–এর ট্যাগ পেয়েছিলেন বেকহাম।
২০১২ অলিম্পিক আয়োজনের স্বত্ব লন্ডনকে পাইয়ে দেওয়ায় বড় অবদান ছিল বেকহামের। তখন থেকেই নাইটহুড পাওয়ার আলোচনায় ছিলেন তিনি। তবে কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর তাঁর নাইটহুড পাওয়ার প্রক্রিয়া থামিয়ে দিয়েছিল যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষ। পরে অভিযোগটি থেকে খালাস পান বেকহাম।
আরও পড়ুনফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ: কী, কেন, কীভাবে৭ ঘণ্টা আগেফ্রি–কিকে খ্যাতি পাওয়া বেকহাম ২০১৩ সালে বুট তুলে রাখার আগেই নিজের ক্যারিয়ারকে আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ করার কথা ভেবেছেন এবং সাফল্যও পেয়েছেন। নেটফ্লিক্সে ২০২৩ সালে প্রচারিত ‘বেকহাম’ তথ্যচিত্রে তিনি বলেছিলেন, ‘জানতাম একটা সময় আমার ক্যারিয়ার শেষ হবে, ফুটবলের পরেও আমি ক্যারিয়ার গড়তে চেয়েছি।’
তবে খেলোয়াড়ি জীবনে সেরা সব ফ্যাশন হাউস, সৌন্দর্যের ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে লোভনীয় অঙ্কের চুক্তি করেছেন বেকহাম। তাঁর জনপ্রিয়তা কোনো বয়স মানেনি। ইংল্যান্ডের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে তিনি যুক্তরাস্ট্রের বাজারেও ঢুকেছেন। শুধু তা–ই নয়, ‘স্টুডিও ৯৯’ নামে একটি প্রযোজনা হাউসও আছে বেকহামের এবং ২০ বছর ধরে তিনি ইউনিসেফের দূতের দায়িত্বও পালন করছেন। সমাজবিজ্ঞানী এলিস ক্যাশমোরের মতে, ফুটবলের কারণে এখন বেকহাম সবচেয়ে পরিচিত নন, বরং ‘বেকহাম নামের ব্র্যান্ড হয়ে ওঠার জন্য’ তিনি বেশি পরিচিত। দ্য টাইমসের এ বছরের র্যাঙ্কিং অনুযায়ী বেকহাম ব্র্যান্ডের মূল্য ৫০ কোটি পাউন্ড।
২০১১ সালে প্রিন্স উইলিয়াম এবং ২০১৮ সালে প্রিন্স হ্যারির বিয়েতে ব্রিটিশ রাজপরিবারের নিমন্ত্রণ পান বেকহাম। ২০২২ সালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর তাঁর কফিন দেখতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা এড়িয়ে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ব্রিটেনের বিভিন্ন অঙ্গনের বেশ কিছু তারকা। কিন্তু বেকহাম লাইনে প্রায় ১২ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর রানিকে সম্মান জানান। তখন থেকেই মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায় বেকহাম নামের সঙ্গে ‘স্যার’ উপাধি যোগ হওয়াটা স্রেফ সময়ের ব্যাপার।