পবিত্র ঈদে পরিবর্তন সমাজ কল্যাণ সংস্থার ঈদ উপহার প্রদান
Published: 30th, March 2025 GMT
যুব নেতৃত্বাধীন অলাভজনক, সৃজনশীল, মানবকল্যানমুখী, অরাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী ও সমাজ উন্নয়নমূলক সংগঠন চেঞ্জ ফাউন্ডেশন ও "পরিবর্তন" সমাজকল্যাণ সংস্থার যৌথ উদ্যোগে প্রতি বছরের ন্যয় আসন্ন ঈদে "ঈদ সামগ্রী উপহার-২০২৫" বিতরণ সম্পন্ন করেছে।
রবিবার ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় নিম্ন মধ্যবিত্তদের মাঝে এই ঈদ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম চালানো হয়। এসময় সুবিধা বঞ্চিতদের বাসায় যেয়ে ঈদ সামগ্রী পৌঁছে দেন সংগঠনের নেত্রীবৃন্দ।
এক প্রতিক্রিয়ায় চেঞ্জ ফাউন্ডেশনের সভাপতি লুতফর রহমান মুন্না বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি একটা পরিবারের ঈদের সারাদিনের খাবার উপহার হিসেবে প্রদান করতে। বিগত বছরগুলোর মত ভবিষ্যতেও সুবিধা বঞ্চিতদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
আরেক প্রতিক্রিয়ায় "পরিবর্তন" সমাজকল্যাণ সংস্থার সাধারন সম্পাদক মোঃ এ এইচ আশু বলেন, যে সকল পরিবার অন্যের কাছ থেকে চেয়ে নিতে পারে না, এমন ১০০ পরিবারের মাঝে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ঈদ সামগ্রী প্রদান করেছি।
পাশাপাশি আমাদের সদস্যদের যাকাত ফান্ড থেকে ফতুল্লা ইউনিয়নের ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের পয়ঃনিষ্কাশনের সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ ও ছিন্নমুল পরিবারের মাঝে নগদ ২১,০০০ টাকা প্রদান করেছি।
ঈদ উপহার হিসেবে পোলাও চাল, মুগ ডাল, সয়াবিন তেল, ২ ধরনের সেমাই, চিনি, দুধ প্রদান করা হয়।
ই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন চেঞ্জ ফাউন্ডেশনের সভাপতি লুতফর রহমান মুন্না, সহ-সভাপতি এ্যডঃ মাহবুবুল হক ফোরকান, সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ আবু সাঈদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম সুজন, কোষাধ্যক্ষ নাসির উদ্দিন জুম্মন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রনী শিকদার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ সালাহ উদ্দিন হৃদয়, দপ্তর সম্পাদক মাওঃ সাব্বির আহমাদ তুহিন, নির্বাহী সদস্য মোঃ রমজান আলী। "পরিবর্তন" সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি তালুকদার আবদুল্লাহ আল ফারুক রিংকু, সাধারন সম্পাদক মোঃ এ এইচ আশু, অর্থ সম্পাদক মোঃ আল-আমীন আলী, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন সম্পাদক শরিফুল ইসলাম তুষার প্রমুখ।
উল্লেখ্য চেঞ্জ ফাউন্ডেশন বিভিন্ন পেশাজীবীদের দ্বারা ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সমাজের সুবিধা বঞ্চিতদের ব্যাতিক্রমভাবে সহযোগিতার পাশাপাশি মেডিক্যাল ক্যাম্প করা, মাদ্রাসায় কার্পেট প্রদান, সেহেরি-ইফতার সামগ্রী বিতরণ, শীতার্থদের শীতবস্ত্র বিতরণ, ঈদ উপহার প্রদান, অর্থনৈতিক সহযোগীতার মাধ্যমে স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ঈদ পর ব র উপহ র ব তরণ
এছাড়াও পড়ুন:
পাল্টা শুল্কের কারণে ক্রয়াদেশ কম
তৃতীয় দফা আনুষ্ঠানিক আলোচনা চলমান থাকা অবস্থায় আজ শুক্রবার থেকে বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর হচ্ছে। বাড়তি শুল্কহার শেষ পর্যন্ত কত শতাংশে স্থির হয় সেটি ফয়সালা না হওয়ায় মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠান আগামী মৌসুমে তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ ২০ শতাংশ পর্যন্ত কম দিচ্ছে। আবার কিছু ক্রেতা প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত ক্রয়াদেশ না দিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
পাল্টা শুল্ক কার্যকরের সময় চলে এলেও তৈরি পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা আগের মতো উদ্বিগ্ন নন। কারণ, দুই-তিন দিন ধরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও মার্কিন বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের কাছ থেকে যে ইঙ্গিত পাচ্ছেন তাতে বাংলাদেশের পাল্টা শুল্ক ভিয়েতনামের কাছাকাছি চলে আসতে পারে। এ ছাড়া প্রতিযোগী দেশ ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তৈরি পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, বর্তমানে বসন্ত ও গ্রীষ্মের ক্রয়াদেশ আসার মৌসুম। তবে পাল্টা শুল্কের কারণে পণ্যের দাম বাড়বে। তাতে তৈরি পোশাকের বিক্রি কমবে। সেটি অনুমান করে মার্কিন বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিশ্রুতির চেয়ে ১০-২০ শতাংশ কম ক্রয়াদেশ দিচ্ছে। অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত ক্রয়াদেশ দিতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করার কথা জানিয়েছে। শেষ পর্যন্ত পাল্টা শুল্ক ভিয়েতনাম, ভারত, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার কাছাকাছি নামিয়ে আনা গেলে বাংলাদেশের ভালো সম্ভাবনা তৈরি হবে। তার কারণ চীন থেকে ব্যাপক হারে ক্রয়াদেশ সরবে।
নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘পাল্টা শুল্ক নিয়ে আমরা খুব বেশি ভয় পাচ্ছি না এখন। তবে বাড়তি শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্যের চাহিদা কমবে। তাতে স্বাভাবিকভাবেই ক্রয়াদেশও কিছুটা কমতে পারে। বাড়তি শুল্ক কার্যকর ও শুল্কহার নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলে আগামী ৩-৪ মাস হয়তো ক্রয়াদেশ কম থাকতে পারে। শেষ পর্যন্ত পাল্টা শুল্ক ভিয়েতনামের কাছাকাছি নামিয়ে আনতে পারলে ক্রয়াদেশ বাড়বে।’
যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে, সেসব দেশের ওপর গত ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক বা রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ আরোপ করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বের ৫৭টি দেশের ওপর বিভিন্ন হারে বাড়তি পাল্টা শুল্ক বসানো হয়। তখন বাংলাদেশের পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক ছিল ৩৭ শতাংশ। তিন মাসের জন্য এ সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ৮ জুলাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের জন্য পাল্টা শুল্ক হবে ৩৫ শতাংশ, যা কার্যকর হবে ১ আগস্ট থেকে। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকেরা বর্তমানে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে পণ্য রপ্তানি করেন। নতুন হার কার্যকর হলে তা ৫০ শতাংশে দাঁড়াবে।
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা পাল্টা শুল্কহার কমাতে তৃতীয় দফার আলোচনা করতে বর্তমানে ওয়াশিংটনে রয়েছে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল। এই দলটি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষ করেছে। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
দেশের তৈরি পোশাক খাতের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী ইভিন্স গ্রুপ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। তাদের মোট তৈরি পোশাক রপ্তানির ২৫ শতাংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র।
জানতে চাইলে ইভিন্স গ্রুপের পরিচালক শাহ রাঈদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে ক্রয়াদেশ আসার গতি বর্তমানে কিছুটা ধীর। পাল্টা শুল্ক শেষ পর্যন্ত কত দাঁড়ায় তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। তবে বাড়তি এই শুল্ক শেষ পর্যন্ত মার্কিন ক্রেতাদের দিতে হবে। ফলে বাড়তি শুল্ক কার্যকর হলে দেশটিতে বেসিক বা নিত্য ব্যবহার্য তৈরি পোশাকের বিক্রি কমবে। আমরা এসব সস্তা পোশাকই বেশি রপ্তানি করি। ফলে আমাদের রপ্তানি কমতে পারে।’
দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান স্প্যারো গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ। ১৯৮৪ সালে যাত্রা শুরু করা প্রতিষ্ঠানটি গত অর্থবছরে রপ্তানি করে ৩০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। তার একটি বড় অংশই যায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে।
স্প্যারো গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শোভন ইসলাম বলেন, ‘মার্কিন বড় ব্র্যান্ড বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক সোর্সিং অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রতিশ্রুত ক্রয়াদেশ ১০-২০ শতাংশ কমিয়ে দিচ্ছে। এপ্রিলে আমরা যেসব ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে ৫ শতাংশের মতো মূল্যছাড় দিয়েছিলাম, সেটি বসন্ত ও গ্রীষ্ম মৌসুম পর্যন্ত অব্যাহত রাখতে অনুরোধ করছে।’
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের একক শীর্ষ বড় বাজার। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ৮৬৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ১৮ শতাংশের কিছু বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া বাংলাদেশি পণ্যের ৮৫ শতাংশের বেশি তৈরি পোশাক। এ ছাড়া মাথার টুপি বা ক্যাপ, চামড়ার জুতা, হোম টেক্সটাইল, পরচুলা ইত্যাদি বেশি রপ্তানি হয়।
জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুল্ক নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় বর্তমানে ক্রয়াদেশ কিছুটা কম। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশের পণ্যে শুল্ক কত দাঁড়াচ্ছে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। এ ছাড়া আমাদের পাল্টা শুল্ক কমবে বলে আমরা আশাবাদী।’