চাঁদরাতে এলাকার বন্ধু আর আম্মার বাটা মসলার গন্ধ মিস করছিলাম
Published: 30th, March 2025 GMT
ঈদের পরেই পরীক্ষা, টিউশনেরও চাপ ছিল। তাই ২০২৩ সালের ঈদে বাড়িতে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। মা ফোন করে জানতে চাইছিল, ‘কবে বাড়ি আসবে?’ উত্তরে শুধু বলেছিলাম, ‘আসতে পারছি না।’
চাঁদরাতে এলাকার বন্ধুদের সান্নিধ্য আর আম্মার বাটা মসলার গন্ধ মিস করছিলাম খুব। কিন্তু কিছু তো করার নেই। নুডলস আর সেমাই কিনে মেসে ফিরেছি। আমার রুমের সঙ্গে ছোট একটা ব্যালকনি ছিল। ব্যালকনিতে রাখা চেয়ারটায় বসে পড়লাম। নিজের অজান্তেই চোখে পানি এসে গেল। ভাবছিলাম, ঈদের আনন্দটা ফিকে হয়ে গেল কেন?
ঈদের দিন এল, সকালে গোসল সেরে চলে গেলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হলে। আমার এক বন্ধু আছে, মেকানিক্যালের রেজা, যাকে আমি ‘গরিবের বন্ধু’ বলে ডাকি। গরিবের বন্ধু বলার কারণ—যখনই আমার বাইকে ঘোরার শখ জাগে, তখন ও কারও না কারও থেকে বাইক ধার করে এনে আমাকে ঘুরায়। রেজা আর আমি হলের ডাইনিংয়ে চলে গেলাম। ঈদে আমাদের মতো যারা বাসায় যেতে পারেনি, তাদের জন্য সেখানে খাবারের আয়োজন ছিল। ডাইনিংয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউনুস মামা আমাদের সেমাই আর রুটি দিলেন। কিন্তু সেমাই খাওয়ার জন্য কোনো চামচ নেই। অগত্যা, হাত দিয়েই খাওয়ার কাজ সেরে কেন্দ্রীয় মসজিদে নামাজ পড়তে চললাম।
নামাজ শেষে অদ্ভুত একটা জিনিস খেয়াল করলাম, কেউ কারও সঙ্গে কোলাকুলি করল না। সবাই সবার মতো চলে গেল। কী আর করা, আমি আর রেজা শুধু কোলাকুলি করলাম। পথে ডিপার্টমেন্টের এক ভাইয়ের সঙ্গে দেখা। বাসায় যেতে বললেন। দাওয়াত কবুল করলাম, কিন্তু গেলাম না। চা–বাগানে ঘুরতে চলে গেলাম। ঘোরাঘুরি করলাম আর গাইতে থাকলাম, ‘দ্য গ্রাস ওয়াজ গ্রিনার, দ্য লাইট ওয়াজ ব্রাইটার।’
দুপুরের খাবারও হলেই খেলাম। এরপর এসে বসলাম ক্যাম্পাসের গাজী কালুর টিলায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে সূর্যাস্ত দেখলাম। বিষণ্ন হৃদয়ে প্রকৃতির সবকিছুই অনেক সুন্দর লাগে। বিশ্বাস করুন, ওইটা আমার দেখা সুন্দরতম সূর্যাস্ত ছিল। মাঝে বাসা থেকে ফোন এল কয়েকবার। কথা হলো, আবার কয়েকবার ফোন কেটে দিলাম। সন্ধ্যার পরে গোলচত্বরে ফিরলাম। রেজা হলে চলে গেল, আর আমি মেসে। এভাবেই কেটেছিল একটা বিশেষ খুশির দিন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের তায়েব খান.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফেসবুকে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য না করার নির্দেশনা সিলেট জেলা বিএনপির
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দায়িত্বহীন, অশালীন বা বিদ্বেষপূর্ণ পোস্ট, মন্তব্য কিংবা তথ্য শেয়ার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সিলেট জেলা বিএনপি। দলের কেউ এ নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
গতকাল রোববার রাতে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন জেলা বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক মাহবুব আলম।
এদিকে দলের একজন জ্যেষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধে ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ ও শিষ্টাচার–বহিভূর্ত মন্তব্য করায় গতকাল রাতে বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবেদুর রহমানকে (আছকির) সাময়িক বহিষ্কারের পাশাপাশি সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেছে জেলা বিএনপি। এ ছাড়া অনলাইন গণমাধ্যমে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী বক্তব্য দেওয়ার জন্য জেলা বিএনপির সহসভাপতি ফখরুল ইসলামকে (ফারুক) সতর্কীকরণ নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সিলেট জেলা বিএনপির আওতাধীন কিছু ইউনিটের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কার্যক্রমে অনভিপ্রেত ও পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পরিলক্ষিত হয়েছে। বিশেষ করে বিশ্বনাথ উপজেলা, বিশ্বনাথ পৌরসভা ও ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতা-কর্মীর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য, কটূক্তি ও বিভাজন সৃষ্টিকারী পোস্ট প্রচারিত হয়েছে। যা দলীয় শৃঙ্খলা ও ঐক্যের পরিপন্থী।
বিএনপি সব সময় সংগঠনের ঐক্য, শালীনতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের রাজনীতি বিশ্বাস করে উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দলের কোনো পর্যায়ের নেতা বা কর্মীর কাছ থেকে বিভেদমূলক আচরণ, বিদ্বেষ ছড়ানো বা প্রকাশ্যে অপপ্রচার কখনোই কাম্য নয়। অতএব জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটের নেতা-কর্মীদের কঠোরভাবে সতর্ক করা হচ্ছে, যেন ভবিষ্যতে তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দায়িত্বহীন, অশালীন বা বিদ্বেষপূর্ণ পোস্ট, মন্তব্য বা শেয়ার থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকেন।
যোগাযোগ করলে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি ফেসবুকে কিছু নেতা-কর্মীকে একে অন্যের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করতে দেখা গেছে। এ অবস্থায় জেলা বিএনপি একটি নির্দেশনা দিয়েছে। তা অমান্যকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।