মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পের প্রায় ৬০ ঘণ্টার পর ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার তাঁদের সাগাইং অঞ্চলে ধসে পড়া একটি স্কুল ভবন থেকে উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে দেশটির ফায়ার সার্ভিস। সেখানে মৃত অবস্থায় একজনকে পাওয়া গেছে।

গত শুক্রবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এতে দেশটিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১ হাজার ৭০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিখোঁজ হাজারো মানুষ। ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডেও। দুই দেশেই উদ্ধার কাজ চলছে।

আরও পড়ুনপ্রাণহানি বেড়ে ১৭০০, উদ্ধার তৎপরতায় ধীরগতি৩ ঘণ্টা আগে

মিয়ানমার থেকে ১ হাজার ২০ কিলোমিটার দূরের দেশ থাইল্যান্ডে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভূমিকম্পে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির রাজধানী ব্যাংককে নির্মাণাধীন একটি ৩৩ তলা ভবন ধসে পড়ার পর এখনো ৭৬ জন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছেন।

ভূমিকম্পের পর মিয়ানমারে বিদেশি সহায়তা পৌঁছাতে শুরু করেছে। তবে সেগুলো ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দারা খালি হাতেই উদ্ধারকাজে নেমেছেন।

আরও পড়ুনভারী যন্ত্রের অভাবে মিয়ানমারে খালি হাতে উদ্ধার অভিযান৭ ঘণ্টা আগে

এর আগে গত শনিবার রাতে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডো থেকে এক বৃদ্ধাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তিনি একটি হাসপাতালের ধ্বংসস্তূপের নিচে ৩৬ ঘণ্টা আটকা ছিলেন। এ ছাড়া মান্দালয়ের একটি আবাসিক ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে ২৯ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে রোববার জানিয়েছে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস।

এদিকে রোববার থাইল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী অনুতিন চারনভিরাকুল বলেছেন, ব্যাংককে ধসে পড়া নির্মাণাধীন ভবনটির ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়া কেউ কেউ এখনো জীবিত আছেন বলে ইঙ্গিত পেয়েছেন উদ্ধারকারীরা। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে তাঁদের অবস্থা খুবই নাজুক।

থাইল্যান্ডে ধ্বংসস্তূপের নিচে যাঁরা চাপা পড়েছেন, তাঁদের নিয়ে বড় শঙ্কায় রয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। দেশটিতে এক নারীর স্বামী একটি ভবনের নিচে চাপা পড়ে আছেন। ওই নারী বিবিসিকে বলেন, যতক্ষণ লাগে, তিনি অপেক্ষা করতে রাজি আছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ ম কম প

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ