বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডিজিটাল ক্যামেরা ধারণ করবে মহাবিশ্বের ভিডিও
Published: 31st, March 2025 GMT
নতুন ভেরা রুবিন অবজারভেটরিতে মহাবিশ্বের টাইম-ল্যাপস রেকর্ড করতে বিশ্বের বৃহত্তম ডিজিটাল ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। একটি গাড়ির আকারের লার্জ সিনপটিক সার্ভে টেলিস্কোপ (এলএসএসটি) ক্যামেরাটি সম্প্রতি ভেরা সি রুবিন অবজারভেটরিতে বসানো হয়েছে। এটি এখন পর্যন্ত নির্মিত সবচেয়ে বড় ডিজিটাল ক্যামেরা। আগামী এক দশক ধরে দক্ষিণ গোলার্ধের আকাশের বিশদ ছবি তুলতে ব্যবহার করা হবে এই ক্যামেরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব এনার্জি অফিস অব সায়েন্সের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হ্যারিয়েট কুং জানান, টেলিস্কোপে এলএসএসটি ক্যামেরা ইনস্টল করার ঘটনাটি বিজ্ঞান এবং প্রকৌশলের জন্য বেশ চমকপ্রদ ঘটনা। টেলিস্কোপটি ইউএস ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন ও ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব এনার্জি অফিস অব সায়েন্সে অর্থায়নে তৈরি করা হয়েছে। টেলিস্কোপের নামকরণ করা হয়েছে ডক্টর ভেরা সি রুবিনের নামে। এই আমেরিকান জ্যোতির্বিজ্ঞানী ডার্ক ম্যাটার নিয়ে গবেষণার জন্য আলোচিত। তিনি তাঁর সহকর্মী কেন্ট ফোর্ডের সঙ্গে অসংখ্য ছায়াপথ নিয়ে কাজ করেছেন। তাঁদের গবেষণায় দেখা যায়, বাইরের প্রান্তের নক্ষত্র কেন্দ্রের কাছাকাছি থাকা তারার মতোই দ্রুতগতিতে চলেছে। এটি অস্বাভাবিক ছিল, কারণ নিউটনীয় পদার্থবিজ্ঞান ও কেপলারের গ্রহের গতির নিয়ম অনুসারে মহাকর্ষীয় সিস্টেমের কেন্দ্র থেকে দূরে থাকা বস্তু দুর্বল মহাকর্ষীয় টানের কারণে আরও ধীরে ধীরে প্রদক্ষিণ করার কথা।
রুবিন টেলিস্কোপ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে ডার্ক এনার্জি ও ডার্ক ম্যাটার অনুসন্ধান করবে। অত্যাধুনিক মিরর ডিজাইন, অত্যন্ত সংবেদনশীল ক্যামেরার কারণে টেলিস্কোপটি দ্রুত জরিপ করা ও উন্নত কম্পিউটিং অবকাঠামোর মাধ্যমে দ্রুত কাজ করতে পারে। কয়েক রাত ধরে এটি সমগ্র আকাশ জরিপ করবে। একটি আলট্রা-ওয়াইড ও হাই-ডেফিনিশনের মহাবিশ্বের টাইম-ল্যাপস রেকর্ড তৈরি করবে। প্রতিটি ছবি এত বড় হবে যে তা প্রদর্শনের জন্য ৪০০টি হাই-ডেফিনিশন টিভি পর্দার প্রয়োজন হবে। টেলিস্কোপের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এই অনন্য রেকর্ড ধরা ভিডিও রাতের আকাশকে জীবন্ত করে তুলবে। নতুন আবিষ্কারের সুযোগ করে দেবে। গ্রহাণু, ধূমকেতু, স্পন্দিত নক্ষত্র ও সুপারনোভা বিস্ফোরণের তথ্য জানাবে।
এই এলএসএসটি ক্যামেরাকে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিস্ময় বলা হচ্ছে। এটির ইনস্টলেশন বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। রুবিন অবজারভেটরির মেকানিক্যাল গ্রুপ লিড ফ্রেডি মুওজ বলেন, সিমোনি টেলিস্কোপে এই ক্যামেরা মাউন্ট করা একটি চ্যালেঞ্জের কাজ ছিল। আমাদের টিমওয়ার্কের মাধ্যমে নির্ভুলতার সঙ্গে কাজটি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহে এই ক্যামেরা পরীক্ষা করা হবে।
সূত্র: স্পেস ডটকম
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫