নতুন ভেরা রুবিন অবজারভেটরিতে মহাবিশ্বের টাইম-ল্যাপস রেকর্ড করতে বিশ্বের বৃহত্তম ডিজিটাল ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। একটি গাড়ির আকারের লার্জ সিনপটিক সার্ভে টেলিস্কোপ (এলএসএসটি) ক্যামেরাটি সম্প্রতি ভেরা সি রুবিন অবজারভেটরিতে বসানো হয়েছে। এটি এখন পর্যন্ত নির্মিত সবচেয়ে বড় ডিজিটাল ক্যামেরা। আগামী এক দশক ধরে দক্ষিণ গোলার্ধের আকাশের বিশদ ছবি তুলতে ব্যবহার করা হবে এই ক্যামেরা।

যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব এনার্জি অফিস অব সায়েন্সের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হ্যারিয়েট কুং জানান, টেলিস্কোপে এলএসএসটি ক্যামেরা ইনস্টল করার ঘটনাটি বিজ্ঞান এবং প্রকৌশলের জন্য বেশ চমকপ্রদ ঘটনা। টেলিস্কোপটি ইউএস ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন ও ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব এনার্জি অফিস অব সায়েন্সে অর্থায়নে তৈরি করা হয়েছে। টেলিস্কোপের নামকরণ করা হয়েছে ডক্টর ভেরা সি রুবিনের নামে। এই আমেরিকান জ্যোতির্বিজ্ঞানী ডার্ক ম্যাটার নিয়ে গবেষণার জন্য আলোচিত। তিনি তাঁর সহকর্মী কেন্ট ফোর্ডের সঙ্গে অসংখ্য ছায়াপথ নিয়ে কাজ করেছেন। তাঁদের গবেষণায় দেখা যায়, বাইরের প্রান্তের নক্ষত্র কেন্দ্রের কাছাকাছি থাকা তারার মতোই দ্রুতগতিতে চলেছে। এটি অস্বাভাবিক ছিল, কারণ নিউটনীয় পদার্থবিজ্ঞান ও কেপলারের গ্রহের গতির নিয়ম অনুসারে মহাকর্ষীয় সিস্টেমের কেন্দ্র থেকে দূরে থাকা বস্তু দুর্বল মহাকর্ষীয় টানের কারণে আরও ধীরে ধীরে প্রদক্ষিণ করার কথা।

রুবিন টেলিস্কোপ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে ডার্ক এনার্জি ও ডার্ক ম্যাটার অনুসন্ধান করবে। অত্যাধুনিক মিরর ডিজাইন, অত্যন্ত সংবেদনশীল ক্যামেরার কারণে টেলিস্কোপটি দ্রুত জরিপ করা ও উন্নত কম্পিউটিং অবকাঠামোর মাধ্যমে দ্রুত কাজ করতে পারে। কয়েক রাত ধরে এটি সমগ্র আকাশ জরিপ করবে। একটি আলট্রা-ওয়াইড ও হাই-ডেফিনিশনের মহাবিশ্বের টাইম-ল্যাপস রেকর্ড তৈরি করবে। প্রতিটি ছবি এত বড় হবে যে তা প্রদর্শনের জন্য ৪০০টি হাই-ডেফিনিশন টিভি পর্দার প্রয়োজন হবে। টেলিস্কোপের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এই অনন্য রেকর্ড ধরা ভিডিও রাতের আকাশকে জীবন্ত করে তুলবে। নতুন আবিষ্কারের সুযোগ করে দেবে। গ্রহাণু, ধূমকেতু, স্পন্দিত নক্ষত্র ও সুপারনোভা বিস্ফোরণের তথ্য জানাবে।

এই এলএসএসটি ক্যামেরাকে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং বিস্ময় বলা হচ্ছে। এটির ইনস্টলেশন বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। রুবিন অবজারভেটরির মেকানিক্যাল গ্রুপ লিড ফ্রেডি মুওজ বলেন, সিমোনি টেলিস্কোপে এই ক্যামেরা মাউন্ট করা একটি চ্যালেঞ্জের কাজ ছিল। আমাদের টিমওয়ার্কের মাধ্যমে নির্ভুলতার সঙ্গে কাজটি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী কয়েক সপ্তাহে এই ক্যামেরা পরীক্ষা করা হবে।

সূত্র: স্পেস ডটকম

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষতা ও কার্যকারিতার ওপর গুরুত্বারোপ

দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নে অধিক দক্ষতা ও কার্যকারিতার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে এডিবি। এ বিষয়ে সংস্থাটির ঢাকাস্থ এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ি ইউন জং বলেন, “বাংলাদেশ যখন তার অর্থনীতি বহুমুখীকরণ করছে, সংস্কার বাস্তবায়ন করছে এবং ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নে অধিক দক্ষতা ও কার্যকারিতার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।”

সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এডিবি আয়োজিত বিজনেস অপরচুনিটিজ সেমিনার-২০২৫ এ অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, “আমরা অর্থনৈতিকভাবে দক্ষতা, ন্যায়সঙ্গতা, স্বচ্ছতা, গুণগতমান এবং অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রকিউরমেন্ট সময় হ্রাস করার লক্ষ্যে অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছি।”

আরো পড়ুন:

এপ্রিলের ২৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২২৭ কোটি ডলার

বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগের গুঞ্জনে সূচকের উত্থান

তিনি বলেন, “এডিবির বেসরকারি খাত সম্প্রসারণের কৌশলের আলোকে এই খাতে ব্যবসার সুযোগও প্রসারিত করছি।”

সেমিনারে ৫০০ এর অধিক পরামর্শক, ঠিকাদার, সরবরাহকারী, সিভিল সোসাইটি সংগঠন, সরকারি কর্মকর্তা, উন্নয়ন সহযোগী, কূটনৈতিক মিশনের কর্মী এবং বিভিন্ন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিরা অংশ নেন।

এডিবির প্রকিউরমেন্ট, পোর্টফোলিও ও ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক জেসপার পেডারসেন মূল বক্তব্য দেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, “উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান ও পরিবর্তনশীল চাহিদা মেটাতে এডিবি তার প্রক্রিয়াসমূহ আরো উন্নত করছে। এতে টেকসই, স্বচ্ছতা এবং গুণগতমান বজায় রাখার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহসানুল হক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনসালটিং ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আর্কিটেক্টস (বেসিয়া), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রি (বেসিআই) এবং বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিডব্লিউসিসিআই) সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে এডিবি জানিয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে ৫২ বছরের অংশীদারত্বে এডিবি ৬২ বিলিয়নেরও বেশি ইউএস ডলার ঋণ ও অনুদান (সহ-অর্থায়ন) দিয়েছে, যা দেশের অবকাঠামো, জনসেবা এবং সামাজিক উন্নয়নের মানোন্নয়নে ব্যয় হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে এডিবির প্রকল্প পোর্টফোলিওতে ৫১টি প্রকল্প ও কর্মসূচি রয়েছে, যার মূল্য ১২ (ইউএস ডলার) বিলিয়নেরও বেশি।

এডিবি জানিয়েছে, তারা স্থানীয় শিল্প খাতের বিকাশে তার প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রাখবে এবং বাংলাদেশি ঠিকাদার ও পরামর্শকরা দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ধারাবাহিকভাবে সফলভাবে চুক্তি অর্জন করে চলেছেন। ভবিষ্যতে এডিবির কার্যক্রম সম্প্রসারিত হওয়ায় এই সুযোগগুলো আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি।

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষতা ও কার্যকারিতার ওপর গুরুত্বারোপ