রতন টাটার বেশির ভাগ সম্পদ ব্যয় হবে দাতব্য ও জনহিতকর কাজে
Published: 1st, April 2025 GMT
ভারতের প্রয়াত শিল্পপতি টাটা সন্সে রতন টাটার যে হিস্যা বা অংশ, তার অধিকাংশটাই চলে যাবে দুটি দাতব্য ফাউন্ডেশনে। রতন টাটা এনডাউমেন্ট ফাউন্ডেশন (আরটিইএফ) ও রতন টাটা এনডাউমেন্ট ট্রাস্ট (আরটিইটি) নামের এই দুটি প্রতিষ্ঠানে যাবে রতন টাটার ৩ হাজার ৮০০ কোটি রুপির সম্পদ। এই অর্থ বাংলাদেশের ৫ হাজার ৩২০ কোটা টাকার মতো (প্রতি রুপি ১ টাকা ৪০ পয়সা ধরে)। আরটিইএফ ও আরটিইটি বিভিন্ন দাতব্য ও জনহিতকর কাজে রতন টাটার সম্পদ ব্যয় করবে।
ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুসারে, রতন টাটার এই সম্পদের মধ্যে টাটা সন্সের সাধারণ ও অগ্রাধিকার শেয়ার এবং অন্যান্য সম্পদও থাকবে। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে টাটা শিল্পগোষ্ঠীর কর্ণধার রতন টাটা মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি তাঁর অন্যান্য আর্থিক সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ তাঁর দুই সৎবোন শিরিন জেজিভয় ও ডিয়ানা জেজিভয়ের নামে রেখে গেছেন, যার মূল্য আনুমানিক ৮০০ কোটি রুপি। এসব সম্পদের মধ্যে রয়েছে ব্যাংকে থাকা স্থায়ী আমানত (এফডি), আর্থিক উপকরণ, ঘড়ি এবং চিত্রকর্মের মতো ভৌত সম্পদ।
ভারতের প্রয়াত শিল্পপতি রতন টাটা তাঁর আস্থাভাজন ব্যক্তি মোহিনী এম দত্তের মাধ্যমে তৈরি করা উইলে ভাই জিমি টাটা, দুই সৎবোন শিরিন জেজিভয় ও ডিয়ানা জেজিভয়, নির্বাহী সহকারী (রতন টাটা) শান্তনু নাইডু এবং নিজের পোষা প্রাণীসহ কমপক্ষে দুই ডজন সুবিধাভোগী তথা উপকারভোগীর নাম উল্লেখ করে গেছেন।
রতন টাটার অবশিষ্ট সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ পাবেন মোহিনী দত্ত। তবে মোহিনী দত্ত টাটা ও টাটা-বহির্ভূত কোম্পানি এবং বাড়িগুলোর কোনো শেয়ার পাবেন না।
রতন টাটার সম্পদের কে কী পাবেন
রতন টাটার উইল অনুযায়ী, তাঁর সম্পদের মধ্যে ভাই জিমি টাটা রুপার জিনিসপত্র ও গয়নাপত্র পাবেন। প্রয়াত শিল্পপতির জুহু সম্পত্তির মালিকানার অর্ধেকও তাঁর (জিমি) থাকবে, যা রতন টাটা তাঁর বাবা নাভাল টাটার কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিলেন। এর বাকি অংশ নোয়েল টাটা ও সিমোন টাটা ভাগ করে নেবেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, টাটা সন্সে রতন টাটার অংশ সেটি তাঁর দুটি ফাউন্ডেশনে চলে যাবে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ যাবে রতন টাটা এনডাউমেন্ট ফাউন্ডেশনে (আরটিইএফ)। বাকি অংশ পাবে রতন টাটা এনডাউমেন্ট ট্রাস্ট (আরটিইটি)।
রতন টাটার পোষা প্রাণীদের জন্য ১২ লাখ রুপির একটি তহবিল তৈরি করা হবে। তাতে প্রতিটি প্রাণী প্রতি ত্রৈমাসিকে ৩০ হাজার রুপি করে পাবে। তাঁর উইলে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, শান্তনু নাইডু ও প্রতিবেশী জ্যাক মালাইটের ঋণ মওকুফ করা হবে।
টাটা গ্রুপের প্রয়াত প্রধান রতন টাটা তাঁর ‘শেষ’ উইলটি তৈরি করেন ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি। এর আগে তিনি দুটি উইল করেছিলেন—প্রথমটি ১৯৯৬ সালের এপ্রিলে ও পরেরটি ২০০৯ সালের নভেম্বরে। শেষ উইলে রতন টাটা উল্লেখ করেন যে টাটা সন্সে তাঁর শেয়ার কোম্পানির বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডার ছাড়া অন্য কারও কাছে বিক্রি বা হস্তান্তর করা যাবে না।
রতন টাটার আলিবাগের বাংলোটি মেহলি মিস্ত্রির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মেহলি মিস্ত্রিই মূলত এই সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। মিস্ত্রি টাটার তিনটি বন্দুকও পাবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রতন ট ট র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে সাবেক কাউন্সিলরের মৃত্যু
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক এক কাউন্সিলরের মৃত্যু হয়েছে। পরিবার বলছে, পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান। তবে পুলিশ বলছে, তারা অন্য কাজে এলাকায় গিয়েছিল, ওই কাউন্সিলরকে ধরতে যায়নি। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে নগরের দাসপুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া ওই কাউন্সিলরের নাম কামাল হোসেন (৫৫)। তিনি নগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং দাসপুকুর এলাকার বাসিন্দা। একসময় বিএনপির রাজনীতি করতেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তবে দলে তাঁর কোনো পদ–পদবি ছিল না।
গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কামাল হোসেনের নামে চারটি মামলা হয়। তিনি এলাকায় থাকলেও গা ঢাকা দিয়ে থাকতেন। পরিবারের ধারণা, মামলা থাকায় পুলিশ দেখে ভয় পেয়ে কিংবা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
কামালের ছেলে সোহান শাকিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতে আমাদের এলাকায় পুলিশ এসেছিল। পুলিশ দেখে আমার বাবা তবজুল হক নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠতে যান। তখন সিঁড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মারা যান।’
নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা আছে। তিনি আত্মগোপনে থাকতেন। শুনেছি রাতে তিনি মারা গেছেন।’
ওসি বলেন, রাতে দাসপুকুর এলাকায় পুলিশ গিয়েছিল। তবে কামালকে ধরতে যায়নি। পুলিশ গিয়েছিল অন্য কাজে। কিন্তু পুলিশ দেখে পালাচ্ছিলেন কামাল হোসেন। তখন হৃদ্রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। লাশ পরিবারের কাছেই আছে। তারা দাফনের ব্যবস্থা করছে।