জাতীয় দলের সাবেক অলরাউন্ডার নাসির হোসেন আইসিসির নিষেধাজ্ঞামুক্ত হচ্ছেন ৭ এপ্রিল। এদিন থেকে আবার ক্রিকেটে দেখা যাবে তাঁকে। এই স্পিন অলরাউন্ডারকে ঢাকা লিগে খেলার প্রস্তাব দিয়েছে আবাহনী। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দলের কোচ হান্নান সরকার জানান, নাসিরের সঙ্গে কথা হয়েছে তাদের। যদিও আবাহনীতে খেলার ব্যাপারে নিশ্চিত করেননি নাসির। ম্যাচ খেলার স্বার্থে বিকল্প ক্লাবও বেছে নিতে পারেন তিনি।
২০২৩ সালে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলেছেন নাসির। এ বছর দলবদল না করায় নিয়ম অনুযায়ী এখনও প্রাইম ব্যাংকের খেলোয়াড় তিনি। চলতি মৌসুমে অন্য কোনো দলে হয়ে খেলতে হলে আগের ক্লাব থেকে অনাপত্তিপত্র নিতে হবে নাসিরকে।
ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিশের (সিসিডিএম) কোঅর্ডিনেটর সাব্বির আহমেদ রুবেল বলেন, ‘নাসির ৭ এপ্রিল খেলার জন্য উন্মুক্ত হলে বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ থেকে ক্লিয়ারেন্স লাগবে। এ ছাড়া দলবদল করতে হলে প্রাইম ব্যাংকের কাছ থেকে ছাড়পত্র আনতে হবে তাঁকে। অন্যথায় প্রাইম ব্যাংকের হয়ে খেলতে হবে এ বছর।’
গতকাল ফোনে নাসির সমকালকে বলেন, ‘আইসিসি আমাকে বলেছে, ৭ তারিখ থেকে খেলতে পারব। এর আগে ফোনে আমার সঙ্গে এক ঘণ্টা কথা বলবে তারা। বিষয়টি নিয়ে আইসিসির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের প্রধান মেজর (অব.
২০২১ সালে আবুধাবি টি১০ লিগে পুনে ডেভিলসে খেলার সময় আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগের (অ্যান্টিকরাপশন ইউনিট-এসিইউ) নিয়ম অমান্য করে আইফোন উপহার নিয়েছিলেন নাসির। এ তথ্য দুর্নীতি দমন বিভাগের কর্মকর্তাদের অবহিত করার প্রয়োজন বোধ করেননি তিনি। পরে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে আইসিসি দুর্নীতি দমন বিভাগের কর্মকর্তাদের সহযোগিতা না করে ঔদ্ধত দেখান। ফলে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে নাসিরের বিরুদ্ধে তিনটি চার্জ গঠন করে এসিইউ। পরে বিনাবাক্যে অভিযোগ মেনে নেওয়ায় দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়; ছয় মাসের স্থগিত সাজাসহ।
লিগ রাউন্ডে আর মাত্র তিন ম্যাচ বাকি। আবাহনীর কোচ হান্নান চান, সুপার লিগ থেকে নাসিরকে ম্যাচ খেলাবেন। কিন্তু ক্রিকেটার চান, ৯ এপ্রিল দশম রাউন্ড থেকে ম্যাচ খেলতে। আসলে দেড় বছর নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে একজন ক্রিকেটার মাঠে ফিরে কতটা ভালো করতে পারবেন– সে প্রশ্ন থেকেই যায়। সে ক্ষেত্রে আবাহনীর সঙ্গে বনাবনি না হলে প্রাইম ব্যাংক বা গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সেও খেলতে পারেন নাসির হোসেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দমন ব ভ গ র আইস স
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)