রাজবাড়ী জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়কের দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে। একে অপরের ওপর অফিস ভাঙচুর ও গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজবাড়ী জেলা শহরের আজাদী ময়দানে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলামের রাজনৈতিক কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এর কিছুক্ষণ পরই রাত ১০টার দিকে শহরের ইয়াছিন উচ্চবিদ্যালয়সংলগ্ন সড়কে পার্কিং করে রাখা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির হোসেনের প্রাইভেট কারে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নেভায়। এ ঘটনায় গতকাল রাত থেকে শহরের থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিএনপির দলীয় কার্যালয় আজাদী ময়দানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ দেখা যায়।

আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাজবাড়ী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নবগঠিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একদল সন্ত্রাসী কোনো কারণ ছাড়াই গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে আজাদী ময়দানে অবস্থিত আমার রাজনৈতিক কার্যালয় ভাঙচুর, লুটপাটসহ তাণ্ডব চালায়। এ সময় অফিসের কাজে নিয়োজিত এক ছেলেকে তারা মারধর করে। এ ব্যাপারে আমি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
অন্যদিকে রাত ১০টার দিকে শহরের ইয়াছিন উচ্চবিদ্যালয়সংলগ্ন পাকা সড়কের ওপর পার্কিং করে রাখা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাব্বির হোসেনের ব্যক্তিগত গাড়িতে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়। এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেসবুক লাইভে সাব্বির হোসেন গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলামকে দায়ী করেন।

ছাত্রদলের আহ্বায়ক অফিস ভাঙচুর করা হয়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

এপ্রিলে ডেঙ্গু রোগী মার্চের দ্বিগুণ

চলতি বছরের মার্চ মাসের চেয়ে সদ্য শেষ হওয়া এপ্রিলে দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি ছিল। গত চার মাসে দেশে যে পরিমাণ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, গত বছরের প্রথম চার মাসে তা হয়নি। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের বছর ২০২৩ সালের প্রথম চার মাসেও ডেঙ্গুতে এত আক্রান্ত রোগী ছিলেন না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ মার্চ মাসে করা জরিপে দেখা গেছে, ঢাকার বাইরে বাড়লেও ডেঙ্গুর শূককীট বা লার্ভার পরিমাণ বেশ কমেছে আগের জরিপের সময়ের চেয়ে। তবে এপ্রিল মাসে দেশজুড়ে থেমে থেমে হওয়া বৃষ্টি লার্ভার পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে পারে। চলতি মে মাসেও এমন ধারার বৃষ্টির প্রবণতা আছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস। এমন পরিস্থিতিতে ডেঙ্গুর বিস্তার আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্যবিদ ও কীটতত্ত্ববিদেরা। তাঁদের কথা, যদি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এখনই যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি এবার ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৫৭২। গত বছরের প্রথম ৪ মাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৭৫।

দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংক্রমণের বছর ২০২৩ সালে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। এডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ৭০৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়। পরের বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে রোগীর সংখ্যা আগের বছরের এক-তৃতীয়াংশের বেশি কমে যায়। মৃত্যুর সংখ্যাও তেমন হারেই কমে।

চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৫৭২। গত বছরের প্রথম ৪ মাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৭৫।

সদ্য শেষ হওয়া এপ্রিল মাসে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৭০১। মার্চ মাসে এ সংখ্যা ছিল ৩৩৬।

গত বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের সঙ্গে এ বছরের তুলনা করলে দেখা যায়, এবার প্রতি মাসে আগের বছরের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। গত বছরের এপ্রিল মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৫০৪ জন। গত বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন যথাক্রমে ১ হাজার ৫৫, ৩৩৯ ও ৩১১ জন। এবার এই ৩ মাসে রোগীর সংখ্যা যথাক্রমে ১ হাজার ১৬১, ৩৭৪ ও ৩৩৬।

এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে যে প্রতি মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এটা ভালো ইঙ্গিত বহন করছে না। ডেঙ্গু আমাদের কাছে অপরিচিত রোগ নয়। কিন্তু এর ব্যবস্থাপনা এখন পর্যন্ত ভালো হয়নি। এবারের ঊর্ধ্বগতি ডেঙ্গুর প্রকৃত মৌসুম অর্থাৎ বর্ষাকালে সংক্রমণের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলার আশঙ্কা রেখে যাচ্ছে।জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন

নিছক সংখ্যা দিয়ে রোগের সম্ভাব্য প্রাদুর্ভাব নির্ণয় করা যায় না, এমন কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সংখ্যা নিঃসন্দেহে কিছু ইঙ্গিত বহন করে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে যে প্রতি মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এটা ভালো ইঙ্গিত বহন করছে না। ডেঙ্গু আমাদের কাছে অপরিচিত রোগ নয়। কিন্তু এর ব্যবস্থাপনা এখন পর্যন্ত ভালো হয়নি। এবারের ঊর্ধ্বগতি ডেঙ্গুর প্রকৃত মৌসুম অর্থাৎ বর্ষাকালে সংক্রমণের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলার আশঙ্কা রেখে যাচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ