দীর্ঘ দশ বছর ম্যানচেস্টার সিটিতে থাকার পর বিদায় বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলটির তারকা মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইন। তিনি জানিয়েছেন, চলতি মৌসুম শেষেই ক্লাব ছাড়ছেন। শুক্রবার (০৪ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে তিনি ম্যানসিটি ছাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন, ‘‘এটাই ম্যানচেস্টার সিটিতে আমার শেষ কিছু মাস।’’

ডি ব্রুইন ২০১৫ সালের আগস্টে জার্মান ক্লাব উলফসবুর্গ থেকে ম্যানসিটিতে যোগ দেন। এরপর থেকে ক্লাবের হয়ে ৪১৩টি ম্যাচ খেলেছেন এবং নিজেকে বিশ্বমানের খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

ম্যানসিটিতে ডি ব্রুইনের যা কিছু অর্জন:
ডি ব্রুইন পেপ গার্দিওলার অধীনে ২০২২-২৩ মৌসুমে ট্রেবল জয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। তিনি ক্লাবের হয়ে ১৬টি ট্রফি জিতেছেন। যার মধ্যে রয়েছে—  
> ৬টি প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা,  
> ১টি চ্যাম্পিয়নস লিগ,
> ২টি এফএ কাপ,
> ৫টি ইএফএল কাপ।

আরো পড়ুন:

‘শেষ চারে টিকে থাকার যোগ্যতা, আকাশ থেকে পড়বে না’

ম্যানসিটিতে ‘নতুন মেসি’ নিয়ে আসলেন গার্দিওলা 

তিনি সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ১০৬টি গোল করেছেন এবং ১৬৯টি অ্যাসিস্ট করেছেন। বিশেষ করে প্রিমিয়ার লিগে ১১৮টি অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। যেখানে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে মাত্র ২৩৭ ম্যাচে ১০০ অ্যাসিস্টের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। যা লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে কম ম্যাচে করা রেকর্ড।

ডি ব্রুইনে বর্তমানে প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অ্যাসিস্টকারী। শুধুমাত্র রায়ান গিগসের (১৬২ অ্যাসিস্ট) পরেই অবস্থান করছেন। এছাড়া তিনি এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ২০টি অ্যাসিস্টের রেকর্ড গড়েছেন (২০১৯-২০, থিয়েরি অঁরির সঙ্গে যৌথভাবে)।  

ম্যানসিটি ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে ডি ব্রুইন তার পোস্টে লেখেন, ‘‘আপনারা হয়তো অনুমান করতেই পারছেন, আমি যা বলতে যাচ্ছি। তাই সরাসরি বলছি – এই মৌসুম শেষেই আমি ম্যানচেস্টার সিটি ছাড়ছি। এটা বলা সহজ নয়, তবে প্রতিটি ফুটবলারের জন্য একদিন এই সময় আসেই। সেই দিনটা এখন আমার জন্য চলে এসেছে এবং আমি চাই আপনারা আমার কাছ থেকেই এটি শুনুন।’’

‘‘ফুটবল আমাকে আপনাদের কাছে নিয়ে এসেছে, এই শহরে এনেছে। যখন আমি এখানে এসেছিলাম, জানতাম না যে এটি আমার জীবন বদলে দেবে। এই শহর, এই ক্লাব, এই মানুষরা আমাকে সবকিছু দিয়েছে। বিনিময়ে আমিও আমার সর্বোচ্চটা দিয়েছি। আর দেখুন, আমরা সবকিছু জিতেছি! যদিও বিদায় বলাটা কঠিন, তবে সময় এসে গেছে। আমি ক্লাব, শহর, সতীর্থ, কোচিং স্টাফ, বন্ধু ও পরিবারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। গত ১০ বছর ছিল অসাধারণ এক যাত্রা। প্রতিটি গল্পের শেষ থাকে, তবে এটি ছিল আমার জীবনের সেরা অধ্যায়। আসুন, একসঙ্গে শেষ মুহূর্তগুলো উপভোগ করি!’’

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ব র ইন কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ