Samakal:
2025-11-03@14:42:24 GMT

বার্ধক্যে হাড়ের যত্ন

Published: 5th, April 2025 GMT

বার্ধক্যে হাড়ের যত্ন

বয়স ষাট না পেরুতেই আমাদের হাড় দুর্বল হতে শুরু করে। হাঁটু-কোমর-পা ব্যথা হয় অল্প শ্রমেই। সেইসব কাটিয়ে ওঠার জন্য কী কী করবেন, তা জেনে নেওয়া যাক!

সক্রিয় থাকুন

যাদের বয়স ৬৫ পেরিয়েছে, তাদের উচিত সপ্তাহে কমপক্ষে আড়াই ঘণ্টা ব্যায়াম করা। অর্থাৎ দৈনিক ৪০-৫০ মিনিট মাঝারি ধরনের ব্যায়াম করা বাঞ্ছনীয়। যদি একবারে কষ্ট হয়, তাহলে সারাদিন ধরে অল্প অল্প করে ব্যায়াম করবেন। এ ছাড়াও দৈনিক বাজার, বাগান করা বা লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে পারেন। যারা যোগব্যায়াম বা অ্যারোবিক ব্যায়াম করে অভ্যস্ত, তা ছেড়ে দেবেন না। কারণ বার্ধক্যে কিছু না করার চেয়ে সক্রিয় থাকাটাই উপকারী। দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে না থেকে ২০-৩০ মিনিট পর পর উঠে দাঁড়ান এবং একটু হাঁটা-চলা করুন।

নিজের ভারসাম্য রক্ষা

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের গাঠনিক উপাদানের পরিমাণ কমতে থাকে। তাই পড়ে গেলে অল্প আঘাতে হাড় ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। নিজের ভারসাম্য রক্ষার দিকে খেয়াল রাখুন। নিয়মিত চোখ ও কান পরীক্ষা করান। কারণ দৃষ্টি ও শ্রবণের ওপরে আমাদের ভারসাম্য অনেকখানি নির্ভরশীল। অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ক্ষয় রোগ থাকলে অবশ্যই সাবধানে থাকবেন। কোমড় বাঁকা করে কোনো জিনিস তোলা থেকে বিরত থাকুন। তার বদলে হাঁটু ভাঁজ করে বসে জিনিসটি নিচ থেকে তুলবেন। 

পুষ্টিকর ও সম্পূরক খাবার

বেশি বা কম ওজন উভয়ই হাড়ের জন্য ক্ষতিকর। ইন্টারনেটে ‘বডি মাস ইনডেক্স’ বা বিএমআই ক্যালকুলেটরের সাহায্যে উচ্চতা ও বয়স অনুযায়ী নিজের সঠিক ওজন কত তা জানতে পারবেন।

পূর্ণবয়স্ক মানুষের গড়ে দৈনিক ১ হাজার ২০০ মিগ্রা ক্যালসিয়াম ও ১০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ডি প্রয়োজন হয়। খাবার থেকে যার অনেকটা পূরণ হওয়া উচিত।

আমিষ, ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খান। সামুদ্রিক মাছ, ডিম, কলিজা, সবুজ শাক, ব্রকলি জাতীয় সবজি, দুধ জাতীয় খাদ্য- বিশেষত পনির, সয়াবিন, ইলিশ মাছ, ছোট মাছ ইত্যাদি খেতে পারেন।

রোদে গেলেও ত্বকের নিচে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে, আপনার বয়স অনুযায়ী ভিটামন ডি ও ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ ট্যাবলেটও খেতে পারেন। 

অন্যান্য

হাড়ের যত্নের স্বার্থে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন। নারীর মেনোপজের পর ও পুরুষদের বার্ধক্যে হরমোনে তারতম্যের প্রভাব পড়ে হাড়ের ওপর, তাই নির্দিষ্ট বয়সের পর নিয়মিত থাইরয়েড হরমোন ও অন্যান্য পরীক্ষা করান। 

লেখক: মেডিকেল অফিসার, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, ঢাকা

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব য য় ম কর

এছাড়াও পড়ুন:

সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি

টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের (সাদপন্থী) ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। পাশাপাশি তাঁরা সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে আগামী বছরের মার্চ মাসে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা করার কথাও বলেছেন। গত আয়োজনে ইজতেমা মাঠে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সাজা নিশ্চিতের দাবিও জানান তাঁরা।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। ‘হযরত ওলামায়ে কেরাম ও দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীবৃন্দের’ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

এর আগে গত রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তাবলিগের শুরায়ে নেজামের সাথী মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘কোরআন ও হাদিসের কথা যারা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে, তাদের ইসলামি দাওয়াতের এই ময়দানে জায়গা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রাসুল (সা.)-এর তরিকা, সুন্নাহ ও হাদিসের অনুসরণে যারা তাবলিগি কার্যক্রম পরিচালনা করে, কেবল তারাই ইজতেমা করার অধিকার রাখে।’

মুফতি আমানুল হক আরও বলেন, ‘সরকারের ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সাদপন্থীরা শেষবারের মতো টঙ্গী ময়দানে ইজতেমা করার অনুমতি পেয়েছিল। সেই প্রজ্ঞাপনে তাদের স্বাক্ষরও রয়েছে। সরকার তখনই বুঝেছিল—একই মাঠে দুই পক্ষের ইজতেমা আয়োজন দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’

২০২৪ সালের ডিসেম্বরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘গত বছরের ১৮ ডিসেম্বরের রাতে সাদপন্থীদের অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের বাংলাদেশি নেতা ওয়াসিফ সাহেবের চিঠিতে উল্লেখ ছিল, “যুগটা ব্যতিক্রমী, সবাই প্রস্তুতি নিয়ে আসবে”—এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই তারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ঘুমন্ত মুসল্লিদের ওপর টর্চলাইট নিয়ে হামলা চালানো হয়, যা একতরফা সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছিল।’ তিনি দাবি করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও প্রমাণিত হয়েছে, ‘এ হামলা একতরফাভাবে সাদপন্থীদের পক্ষ থেকেই হয়েছিল।’

মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী ও ইসলামবিরোধী মহলের প্ররোচনায় তাবলিগ জামাতে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীরা বেআইনি পথে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ ও কাকরাইল মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এমনকি তাঁরা সরকারকে বিব্রত করতে ‘যমুনা ভবন ঘেরাও’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিশৃঙ্খলাকারীদের কাকরাইল মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং শুরায়ে নেজামপন্থীদের কাকরাইলে দাওয়াত কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেয় বলে জানান মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারির ৬৩ নম্বর স্মারকে বলা হয়, সাদপন্থীরা শেষবারের মতো ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে টঙ্গীতে ইজতেমা করতে পারবে, এরপর আর নয়। তারা স্বাক্ষর দিয়ে সেই শর্ত মেনে নিয়েছিল।

শুরায়ে নেজামপন্থীরা বলেন, ‘আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করছি। আগামী বছরের মার্চে ইজতেমা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করা হবে।’

সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের কাছে ৪ দফা দাবি পেশ করেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। তাঁদের দাবিগুলো হলো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ইজতেমার তারিখ ঘোষণা, টঙ্গী ইজতেমা মাঠকে অস্থায়ীভাবে ‘কেপিআই’ হিসেবে ঘোষণা, বিদেশি মেহমানদের ভিসা সহজীকরণের পরিপত্র নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ ও গত বছরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মতিন উদ্দিন আনোয়ার, রুহুল আমিন এবং তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ে নেজাম) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ