Samakal:
2025-05-01@12:11:23 GMT

সংগ্রাম ও সাফল্যের পথচলা

Published: 5th, April 2025 GMT

সংগ্রাম ও সাফল্যের পথচলা

নারী শুধু গৃহকর্মে সীমাবদ্ধতায় আবদ্ধ নন, তারা পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি। বিশেষ করে নারী অভিবাসীরা প্রবাসের অচেনা পরিবেশে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য গড়ে তোলেন এবং দেশে ফিরে নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তারা শুধু নিজেদের জন্য নয়, বরং পরিবারের জন্য, সমাজের জন্য এবং দেশের অর্থনীতির জন্য অবদান রাখেন।
একজন নারী যখন স্বপ্ন দেখেন, তখন সেই স্বপ্ন কেবল ব্যক্তিগত নয়, তা হয়ে ওঠে একটি পরিবারের, একটি সমাজের, এমনকি একটি জাতির ভবিষ্যৎ গঠনের অংশ। বিদেশে কঠোর শ্রমের মাধ্যমে অর্জিত সাফল্যকে দেশে কাজে লাগিয়ে যারা নতুন কিছু করার সাহস দেখান, তারাই প্রকৃত উদ্যোক্তা। এই গল্প শুধু একজন নারীর নয়, এটি হাজারও সংগ্রামী নারীর অনুপ্রেরণার গল্প।
সেই সাহসী নারীদেরই একজন সানজিদা ও সানোয়ারা, যাদের জীবন-সংগ্রাম শুধু কষ্টের নয়; এটি এক অনন্য জয়ের কাহিনি। কঠোর পরিশ্রম আর আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে তারা জীবনের বাধাগুলো অতিক্রম করেছেন, হয়েছেন সফল উদ্যোক্তা। 
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া গ্রামের মেয়ে সানজিদা। শৈশব পেরোনোর আগে সংসারের বন্ধনে জড়িয়ে যান। তখনও জীবনের মানে বোঝার সময় হয়নি, তবু কপালে জুটেছিল বউ হওয়ার গুরুদায়িত্ব। স্বপ্ন দেখা তো দূরের কথা, এক অজানা ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। পরিবারের অবস্থা ছিল নড়বড়ে, তাই লেখাপড়ার অধিকারও পাওয়া হয়নি। বিয়ের কয়েক বছর পর পৃথিবীতে এলো তাঁর সন্তান। সেই আলোও বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
সন্তানের বয়স যখন মাত্র এক বছর, তখনই ঝড় নেমে এলো জীবনে। ছেলের বাবা তাঁকে একা ফেলে চিরদিনের জন্য বিদায় নিলেন। এক মুহূর্তে যেন পৃথিবী শূন্য হয়ে গেল। একা এক নারী, কোলে এক বছরের শিশু–কোথায় যাবেন? কী করবেন?
স্বজনেরা মুখ ফিরিয়ে নিল, কেউ পাশে দাঁড়াল না। বেঁচে থাকার সংগ্রাম তখন যেন আরও কঠিন হয়ে উঠল। বাধ্য হয়ে জীবনের কষ্টগুলো গিলে ফেলে শহরের পথে পা বাড়ালেন। গার্মেন্টসে কাজ নিলেন। কঠোর পরিশ্রমে নিজেকে টিকিয়ে রাখার লড়াই শুরু করলেন।
তবে সানজিদা শুধু হারানোর গল্প নয়, তিনি এক অদম্য লড়াকুর নাম। যে জীবনের যত কঠিন আঘাতই আসুক, সন্তানকে বুকের মধ্যে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে পথ চলতে জানেন। সমাজের চোখে তিনি হয়তো এক সাধারণ নারী, কিন্তু তাঁর ভেতরের শক্তি অসীম।
গার্মেন্টসে পাঁচ বছর ধরে পরিশ্রম করার পর সানজিদা নতুন স্বপ্ন দেখলেন বিদেশ যাওয়ার, ভাগ্য পরিবর্তনের। ২০১৫ সালের শেষের দিকে তিনি পাড়ি জমালেন জর্ডানে, হাতে মাত্র ১৮ হাজার টাকা বেতনের চাকরি। অচেনা দেশ, অজানা ভাষা, নতুন পরিবেশ– সবকিছুই চ্যালেঞ্জিং। তাঁর সংকল্প ছিল অটুট। কঠোর পরিশ্রম আর মনের জোরের ফলে মাত্র তিন মাসের মাথায় তাঁর ভাগ্য বদলাতে শুরু করেন। দক্ষতার প্রমাণ দিয়ে তিনি কোয়ালিটি কন্ট্রোলার হিসেবে পদোন্নতি পেলেন, বেতন বেড়ে হলো ৪০ হাজার টাকা। 
২০২১ সালে আবার এক কঠিন মুহূর্ত এলো তাঁর জীবনে। তাঁর মা অসুস্থ হয়ে পড়লেন। মাকে একা রেখে বিদেশের মাটিতে থাকা সম্ভব ছিল না। তাই সব ছেড়ে তিনি দেশে ফিরে এলেন। দেশে ফিরে তিনি নতুন করে স্বপ্ন দেখলেন, নতুন পথ খুঁজলেন। নিজের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে একটি বস্ত্রালয় চালু করলেন, যেখানে আজ তাঁর অধীনে কাজ করছেন ৮ জন কর্মী। শুধু তাই নয়, জায়গা কিনে গড়ে তুলেছেন নিজের বাড়ি, একটি স্থায়ী আশ্রয়, যা শুধু ইট-পাথরের কাঠামো নয়, এটি তাঁর পরিশ্রম আর আত্মনির্ভরতার প্রতীক। v
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ বন র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতির মেয়ে

ফরিদপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা।গত মঙ্গলবার এনসিপির সদস্যসচিব আক্তার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয়েছে মো. আব্দিুর রহমানকে এবং সংগঠক করা হয়েছে মো. রাকিব হোসেনকে।
 
এছাড়া ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী জেলার দু’জন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।  

ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যে দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগনি। দোলার বাবা সৈয়দ গোলাম দস্তগীর পেশায় ব্যবসায়ী।

সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি কিছুদিন একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন। বর্তমানে ‘সিনে কার্টেল’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী।
 
এ বিষয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। আমি নিজে এর একটা ব্যাখ্যা রাজপথের সহযোদ্ধাদের দিয়ে রাখতে চাই। আমি ১০ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করছি। নো মেট্রো অন ডিইউ মুভমেন্ট, রামপাল বিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করাসহ অন্যান্য সকল আন্দোলনে আমি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যতম মামলা তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তাই আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনে-বুঝে এবং আমি ‘লিটমাস’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’ 

আওয়ামী লীগ নেত্রীর মেয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার এনসিপি কমিটি গঠনে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কিভাবে আমাদের ওপর নির্বিচার গুলি ছুড়েছিল। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজানা নয়।’ 

সৈয়দা নীলিমা দোলার সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই মন্তব্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হলে ভাল হতো। যাচাই-বাছাই করা হলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নবীজির (সা.) অদ্ভুত দোয়া
  • অর্থ আত্মসাত: খুলনায় নারী ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
  • বগুড়ায় সারজিসের উপস্থিতিতে মারামারির ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ৪ নেতা হাসপাতালে
  • গানের ভুবনে লিজার অন্তহীন পথচলা
  • অমিতাভের চিরকুট কিংবা ফ্যাশন নিয়ে রাধিকার ১০ প্রশ্নের জবাব, ১০ ছবি
  • মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস
  • একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
  • বড় বন্দরে ভারী কাজ করেও চলে না সংসার 
  • নাটোরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল একজনের
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতির মেয়ে