কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে একুশে পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস ধাওয়া করে ইট ছুড়ে চালককে আহত করার ঘটনায় ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। আহত বাসচালক বলছেন, সেদিন (গত সোমবার) রাতে এক দল তরুণ মোটরসাইকেল নিয়ে বাসটিতে ডাকাতির চেষ্টা করেছিলেন। 

আর পুলিশ বলছে, মোটরসাইকেলকে সাইড না দেওয়ায় ওই তরুণরা বাসচালকের ওপর হামলা চালিয়েছেন বলে জেনেছে তারা।

গত সোমবার রাত ২টার দিকে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিপুলাসার বাজার সেতুর ওপর বাসে হামলার ঘটনা ঘটে। আহত বাসচালক রাকিব হোসেন সোহেল নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। ইটের আঘাতে তাঁর নিচের মাড়ির সব দাঁত ও ডান কলার বোন ভেঙে গেছে। এ ঘটনায় থানায় জিডি করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে শনিবার জানিয়েছেন একুশে পরিবহনের মালিক জহিরুল ইসলাম তারেক।

সেদিন বাসটিতে থাকা সুপারভাইজার মো.

রাহাত বলেন, ‘সোমবার ঈদুল ফিতরের দিন রাতে নোয়াখালীর সোনাপুরগামী বাস ঢাকা থেকে ৪০ যাত্রী নিয়ে নোয়াখালীর উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বাসটি ১টার দিকে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে বিশ্বরোডের দিকে সড়কের পাশে বিসমিল্লাহ হোটেল অ্যান্ড পেট্রোল পাম্পে যাত্রাবিরতি করে। সেখান থেকে গাড়ি ছাড়ার পর ৮-১০টি নম্বরবিহীন মোটরসাইকেল আমাদের বাসটি অনুসরণ করে। বিষয়টি আমরা বাসমালিককে তাৎক্ষণিক অবহিত করি। লাকসাম বাইপাস পার হওয়ার পর বাস থামানোর জন্য মোটরসাইকেল আরোহীরা নানাভাবে চালককে সিগন্যাল দিতে থাকেন। এ সময় ডাকাতির চেষ্টা হচ্ছে আঁচ করতে পেরে চালককে বাস না থামিয়ে চালিয়ে যেতে অনুরোধ করি।’

রাহাত জানান, রাত ২টার দিকে বাসটি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিপুলাসার বাজার সেতুতে পৌঁছায়। তখন মোটরসাইকেল আরোহীরা চালককে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকেন। এক পর্যায়ে বাসের কাচ ভেঙে চালকের মুখ ও দাঁতে আঘাত লাগে। ইটের আঘাতে তাঁর মুখমণ্ডল রক্তাক্ত হয়। এরপরও চালক বাস চালিয়ে সুধারাম মডেল থানার সামনে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়েন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাসচালক সোহেল বলেন, ‘মোটরসাইকেল আরোহীরা ডাকাতির উদ্দেশে বাস অনুসরণ করছিল। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে যাত্রীদের জানমাল রক্ষার্থে বাস চালিয়ে যাত্রীদের নিরাপদে পৌঁছে দিই। ঈদের রাত হওয়ায় সড়কের আশপাশের সব দোকানপাট বন্ধ ছিল। এই সুযোগে ডাকাত দল ডাকাতির চেষ্টা করে।’

এ বিষয়ে একুশে পরিবহনের মালিক জহিরুল বলেন, ‘ওরা নিশ্চিত ডাকাত দল। কারণ মোটরসাইকেল আরোহীরা হেলমেট পরিহিত ছিল এবং মোটরসাইকেলগুলোতে নম্বর প্লেট ছিল না। অল্পের জন্য যাত্রীদের জানমাল রক্ষা হয়েছে। এ ঘটনায় জিডি করব।’

এদিকে হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের এসপি খায়রুল আলম বলেন, ‘সোমবার রাতে একদল তরুণ বা যুবক মোটরসাইকেলে যাচ্ছিল। এ সময় তারা একুশে পরিবহনের বাসচালককে সাইড দেওয়ার জন্য সংকেত দেয়। কিন্তু চালক ভয়ে মোটরসাইকেল সাইড দেননি। এতে তরুণরা ধাওয়া করে তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছে বলে জেনেছি। এটি ডাকাতির চেষ্টা বলে মনে হয়নি। এ নিয়ে লালমাই, লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ থানা পুলিশ এবং কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে। ঘটনা তদন্তে হাইওয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।’ 

নোয়াখালীর এসপি আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ‘এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর বহন র স মব র চ লকক

এছাড়াও পড়ুন:

জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি খুন

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় পারিবারিক কলহের জেরে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন একজন। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ফজিলা খাতুন (৪৫) উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামের বাসিন্দা মৃত জালাল উদ্দিনের স্ত্রী। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনির মিয়া (৩০) উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে। ঘটনার রাতে স্ত্রী রুমা আক্তারের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান মনির। পরে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন এবং চার বছরের ছেলে রোহানকে নিয়ে চলে যেতে চান। এতে স্ত্রীর সঙ্গে তার আবারও বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মনির হাতে থাকা ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে আঘাত করতে গেলে শাশুড়ি ফজিলা খাতুন বাধা দেন। তখন মনির শাশুড়িকে ছুরিকাঘাত করেন। পাশাপাশি স্ত্রীকেও আঘাত করেন তিনি। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ফজিলা খাতুনের মৃত্যু হয়।

মুক্তাগাছা থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো। তবে অভিযুক্ত পালিয়েছে। তাকে ধরার চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ