জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ছেড়ে তৃণমূল বিএনপি হয়ে খেলাফত মজলিসে আসা শাহীনূর পাশা চৌধুরীকে সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ) আসনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খেলাফতের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

নির্বাচনী আসনের দুই উপজেলার ১৫৩টি ওয়ার্ডের নেতাদের নিয়ে গতকাল শনিবার আয়োজিত প্রতিনিধি সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ আসনটিতে শাহীনূরকে প্রার্থী ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুনদল ছেড়ে ভোটের মাঠে ‘ধরা খেলেন’ শাহীনূর১০ জানুয়ারি ২০২৪

সাবেক সংসদ সদস্য আইনজীবী শাহীনূর পাশা চৌধুরী গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর তৃণমূল বিএনপি ছেড়ে খেলাফত মজলিসে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি ওই দলের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির। এর আগে তিনি প্রায় তিন দশক জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ওই দলে তাঁর সর্বশেষ পদ ছিল কেন্দ্রীয় সহসভাপতি।

শাহীনূর পাশা চৌধুরী.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফুলে সাজানো রিকশায় করে প্রধান শিক্ষকের বিদায়

নীলফামারীর ডোমার উপজেলার নাঠুয়াগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম এ এম আকতার জাহান বিউটি অবসর গ্রহণ করেছেন। তার কর্মজীবনের শেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে আবেগঘন বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করেছেন তার সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা। তারা বিদায়ী প্রধান শিক্ষককে ফুলে সাজানো রিকশায় করে বিদ্যালয় থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেন। 

এম এ এম আকতার জাহান বিউটিকে বিদায় জানাতে বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুদীপ চন্দ্র শর্মা। সঞ্চলনা করেন সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল মান্নান।

২০১৮ সালে নাঠুয়াগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এম এ এম আকতার জাহান বিউটি। প্রায় ৩৮ বছরের কর্মজীবনের শেষ দিনেও তিনি শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছেন।

অনুষ্ঠানে সহকর্মী শিক্ষকসহ আশপাশের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক হিসেবে আকতার জাহান বিউটি বিদ্যালয়ে পাঠদান, শিক্ষার পরিবেশ ও শৃঙ্খলায় দৃশ্যমান পরিবর্তন এনেছেন।

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সালমা আক্তার বলে, “বিউটি ম্যাডাম আমাদের খুব ভালোবাসতেন, শাসন করতেন, ভালোভাবে পড়াতেন।”

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী উৎসব রায় বলে, “ম্যাডামের পড়ানোর ধরন একেবারে আলাদা ছিল। তিনি আমাদের আদর করতেন, আবার প্রয়োজন হলে শাসনও করতেন। আমরা তাকে খুব মিস করব।”

সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল মান্নান বলেন, “বিউটি ম্যাডামের উপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের চিত্রই বদলে গিয়েছিল। তিনি ছিলেন সবার প্রিয়। শৃঙ্খলা, পাঠদান ও শিক্ষার্থীদের ফলাফল সবদিকেই উন্নতি হয়েছে। এমন এক জন শিক্ষককে বিদায় জানানো আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক।”

সহকারী শিক্ষক দীপক চন্দ্র রায় বলেন, “তিনি শুধু এক জন শিক্ষক নন, ছিলেন অভিভাবকের মতো। বিদ্যালয়ের যেকোনো সমস্যায় তিনি সবার আগে এগিয়ে আসতেন।”

বামুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “আকতার জাহান বিউটি ম্যাডাম দায়িত্বশীল, সৎ ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছিলেন। তার অবদান দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকার শিক্ষাক্ষেত্রে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”

উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সুদীপ চন্দ্র শর্মা বলেন, “আখতার জাহান বিউটি ছিলেন আদর্শ শিক্ষক। সব সময় শিক্ষার্থীদের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। সময়ানুবর্তিতা, আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধের ক্ষেত্রে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তিনি। এমন এক জন শিক্ষককে বিদায় জানানো যেমন কষ্টের, তেমনি গর্বেরও।”

বিদায়ী বক্তব্যে এম এ এম আকতার জাহান বিউটি বলেন, “চাকরিজীবনে সব সময় চেষ্টা করেছি নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের। শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা ও সাফল্যই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। আজ তাদের চোখের জল আর ভালোবাসা দেখে বুঝতে পারছি—আমার এই দীর্ঘ কর্মজীবন সার্থক হয়েছে। সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।”

ঢাকা/সিথুন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ