খুলে পড়েছে সেতুর নাটবোল্ট ঝুঁকি নিয়ে চলাচল
Published: 6th, April 2025 GMT
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার লতাবুনিয়া গ্রামের চালিতাতলা শাখার খালের ওপর বেইলি সেতুটি সংস্কারের অভাবে যান ও পথচারীদের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বারবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কর্তৃপক্ষের কাছে ধরনা দিয়েও মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে সেতুর পাশ দিয়ে খালে বাঁধ দিয়ে কোনো রকমে বিকল্প চলাচলের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন স্থানীয়রা।
৭০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৫ মিটার প্রস্থের এই বেইলি সেতুটি নির্মিত হয়েছিল ৩৬ বছর আগে। অনেকদিন ধরে এর কোনো সংস্কার হয়নি। সেতুর স্টিলের পাটাতন সরে ফাঁক হয়ে গেছে। নাটবোল্ট খুলে ভেঙে গেছে রেলিংয়ের বেশির ভাগ। মরিচা পড়ে বড় বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। এসব গর্তে পড়ে যানবাহন নষ্ট হচ্ছে। আহত হয়েছেন যাত্রী ও পথচারী। বর্তমানে সেতু দিয়ে বড় যানবাহন চলতে পারে না। ঝুঁকি নিয়ে এখনও চলছে অটোরিকশাসহ ছোট যান। সেতুটির এমনই বেহাল যে, সেগুলোও দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পাচ্ছে না।
এ পথ দিয়ে চলাচল করেন অটোরিকশাচালক কবির হোসেন হাওলাদার। তিনি বলেন, সেতুটির পাটাতন ক্ষয়ে ধারালো ও পিচ্ছিল হয়ে গেছে। ধারালো অংশে লেগে যানবাহনের চাকা অনেক সময় ফেটে যায়। ভাঙা অংশে চাকা দেবে দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। গতি ধীর করে সাবধানে পার হলেও দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়া যায় না।
সেতুসংলগ্ন দোকানের মালিক ফারুক হোসেন জানান, সেতু দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই পথচারীরা দুর্ঘটনায় আহত হচ্ছেন। যানবাহনেরও ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত সেতু নির্মাণ করে জনভোগান্তি দূর করার দাবি জানান তিনি।
শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল জানান, বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার মৌখিক এবং লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু সাড়া মেলেনি। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় সেতুর পাশের খালে বাঁধ দিয়ে পথচারী ও যানবাহন চলাচলের কোনো রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী দিপুল কুমার বিশ্বাস জানান, বানাই-কৈখালী-বান্ধাঘাটা-কচুয়া সড়ক ও সেতু নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কম গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এটিকে এলজিইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেতুর সয়েল টেস্ট করা হয়েছে। ওই স্থানে গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?