তিন নদীতে দেদার বালু উত্তোলন ভাঙনের ঝুঁকিতে বাড়িঘর
Published: 6th, April 2025 GMT
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সোমেস্বরী, কর্ণঝোড়া ও ঢেউফা নদীতে যত্রতত্র দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে বালু উত্তোলনের মচ্ছব চলছে।
নির্বিচারে বালু তোলার কারণে নদীর তীর ভেঙে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে। বালুবাহী ভারী যানবাহন চলায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাস্তাঘাট। ইতোমধ্যে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে গারো পাহাড়ের হারিয়াকোনা, বাবেলাকোনা, রাঙ্গাজান, খরামোড়াসহ সীমান্তের অনেক সড়ক। শয়তান বাজারের মেঘাদল এলাকায় সোমেস্বরী নদীর ওপর কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর পাটাতন ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সেতুটি। তা ছাড়া রাতভর বালু তোলার মেশিনের শব্দে পরিবেশের পাশাপাশি পাহাড়ের জীব-বৈচিত্র্য হুমকির মুখে রয়েছে। মানুষও ঘুমাতে পারছে না।
গভীর রাতে বালু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিলেমিশে চলছে চোরাকারবারি ও মাদক কারবারিদের রমরমা ব্যবসা। স্থানীয়দের দাবি এসব কর্মকাণ্ডের হোতা ‘বালু মাসুদ’ ও তাঁর সিন্ডিকেট। তাঁর নেতৃত্বেই চলছে দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তের অবৈধ ব্যবসা।
অভিযোগ রয়েছে, জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে বালু মাসুদ লাখ লাখ টাকার অবৈধ বালু ব্যবসা করে আসছেন।
জানা গেছে, গত ৫ এপ্রিল রাতে সংবাদকর্মীরা শয়তান বাজার এলাকায় খবর সংগ্রহ করতে গেলে হামলার শিকার হন। প্রেস ক্লাবের কার্যকরী সভাপতি রফিক মজিদের দাবি, বালু মাসুদের নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা হয় এবং গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় একটি মামলা করেছেন তারা। দুই দিন আগে বালু মাসুদকে গ্রেপ্তারের দাবিতে শ্রীবরদী পৌর শহরেও ছাত্র-জনতার ব্যানারে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত শনিবার রাতে শ্রীবরদী সীমান্ত থেকে বালু মাসুদকে আটক করে র্যাব-১৪। গতকাল রোববার সকালে তাঁকে শ্রীবরদী থানায় সোপর্দ করে র্যাব। পুলিশ তাঁকে দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছে।
বালু মাসুদের গ্রেপ্তারের খবর জানাজানি হলে ছাত্র-জনতার ব্যানারে রোববার সকালে কালেক্টরেট চত্বরে মানববন্ধন করা হয়। কর্মসূচিতে অংশ নেন ছাত্র-জনতা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও পরিবেশবাদী সংগঠনের দুই শতাধিক নেতাকর্মী।
মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন শ্রীবরদীর বাসিন্দা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শাহাদাত হোসেন জিকু। তাঁর ভাষ্য– সোমেশ্বরী, ঢেউফা ও কর্ণঝোড়া নদীতে কোনো বালুমহাল নেই। এখান থেকে এক ইঞ্চি বালু উত্তোলন করলেও সেটা অবৈধ। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে বালুখেকোরা প্রশাসনের নাকের ডগায় ২৪ ঘণ্টা বালু উত্তোলন করছে। প্রতিদিন অন্তত শতাধিক ট্রাক বালু দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে। এক ট্রাক বালু ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন তারা। বালু উত্তোলনের কারণে শব্দ দূষণে এলাকার মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি আদিবাসী এক নারী প্রতিবাদ করায় তাঁকে মেরে আহত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসক, পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কারণে আইনের আওতায় আসে না বালু দস্যুরা, বালু উত্তোলন বন্ধ হয় না, আমরা তা জানতে চাই।’ তাঁর দাবি, এভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয় উচ্চবিত্তরা সরাসরি জড়িত। ব্যারিস্টার শাহাদাত হোসেন জিকু বলেন, ‘আমরা বালু উত্তোলন সত্যিকার অর্থে বন্ধ করার দাবি জানাই। সেই সঙ্গে বালু মাসুদসহ যারা জড়িত তাদের আইনের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনা হোক।’
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতাকর্মীর মধ্যে সুলতান মাহমুদ, শাকিল, ইসমাইল, শাকিল হাসান, মনিরুজ্জামান মনির, সাজ্জাদ হোসেন, মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ।
শ্রীবরদী থানার ওসি আনোয়ার জাহিদ বলেন, রোববার সকালে বালু ব্যবসায়ী মাসুদকে থানায় হস্তান্তর করেছে র্যাব। দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে কাররাগারে পাঠানো হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি নেতার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল
সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি নেতা নীলফমারী জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি, নীলফমারী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জনাব ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন এর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৩০ এপ্রিল) সাড়ে ৫ টার দিকে আদমজী চাষাড়া সড়কে ইপিজেড এর সামনে নারায়ণগঞ্জে বসবাসরত রংপুর বিভাগীয় বিএনপি সমর্থক গোস্ঠীর উদ্যোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য অকিল উদ্দিন ভূঁইয়া, রংপুর বিভাগ তরুণ দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির ক্রিয়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এস, এম খোরশেদ আলম, নারায়ণগঞ্জ জেলা তরুণ দলের সাধারণ সম্পাদক মাজারুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা তাঁতী দলের সদস্য সচিব আরিফ মুন্সী, ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন ভূঁইয়া, নীলফামারী জেলা তাঁতী দলের সদস্য মোঃ খোকা, লালমনিরহাট জেলা তাঁতি দলের সদস্য আশরাফ আহমেদ খান, রংপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য নিতাই সরকার ,সঞ্চালনায় জাহাঙ্গীর হোসেন সাধারণ সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা জাসাস, ও এলাকাবাসী।
তারা সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন কদমতলী হইতে বিক্ষোভ মিছিল পরিচালনা শুরু করেন এবং আদমজী ইপিজেড এর সামনে অবস্থান করেন।
এসময় মানববন্ধনে নারায়ণগঞ্জে বসবাসরত রংপুর বিভাগীয় বিএনপি সমর্থক গোস্ঠী নেতারা বলেন, এই দায়েরকৃত মিথ্যা মামলার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরন করে।
আমরা অন্তবর্তী সরকারের কাছে এই মামলা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে নীলফমারী জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি, নীলফমারী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জনাব ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন এর মুক্তির দাবি জানাই।
বক্তারা আরো বলেন, এটি একটি ষড়যন্ত্র মূলক মামলা তাকে মিথ্যা আসামী বানিয়ে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। আমরা চাই দ্রুত যেন তার মুক্তি দেওয়া হয়।