প্রিন্স মাহমুদ। আগোগোড়া গানের মানুষ। নব্বইয়ের দশকে অসংখ্য জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা তিনি। গত বছরের ঈদে তাঁর করা প্রিয়তমা সিনেমার ঈশ্বর ও রাজকুমার ছবির বরবাদ গান তুমুলভাবে আলোচনায় আসে। এবার ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘জংলি’ সিনেমার সবগুলো গান করেছেন তিনি। গান তৈরির নানা গল্প নিয়েই কথা তাঁর সঙ্গে...

‘প্রিয়তমা’ সিনেমার ঈশ্বর ও রাজকুমার সিনেমার বরবাদ গানের পর এবার ঈদের জংলি সিনেমার সবগুলো গানই আপনার। অভিজ্ঞতা কেমন?

হ্যাঁ, ঈদে মুক্তি পাওয়া এম রাহিম পরিচালিত ‘জংলি’ সিনেমার সবগুলো গানই আমার করা। এটা আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। এই অভিজ্ঞতা সত্যিই আনন্দের মুগ্ধতার। গানগুলো করার সুবাদে আমিও জংলি টিমের একজন সদস্য হয়ে গেছি। সিনেমাটা একটা তরুণ টিম করেছে। এই টিমের সঙ্গে হলে হলেও ঘুরছি। ভালো লাগছে। 

কিন্তু জংলি ছবির গানগুলো তো ঈশ্বর ও বরবাদের মতো এতটা আলোচিত হয়নি.

..

সব গান একই রকম আলোচিত হবে, সেটা ভাবা যাবে না। ঈশ্বর ও বরবাদ গান এক রকম জংলির গান আরেক রকম। জংলির গানগুলো রোমান্টিক। ডুয়েট পারফর্ম। এ গানগুলো স্লো মোশনে এগোবে। গানগুলো আজ থেকে ২০ বছর পর আরও জনপ্রিয়তা পাবে। আমার গানের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।   

সিনেমার গানগুলোতে নব্বইয়ের দশকের একটা ফ্লেভার রেখেছেন বলেছিলেন। সেটা কেন? 

জংলি টিমের সবাই বেশ তরুণ। ওদের কাছে সম্ভবত নব্বইয়ের দশক বেশ আগ্রহের জায়গা। এই সিনেমার সিয়াম বুবলীর লিপসে ‘বন্ধু গো শোনো...’ যে গান সেটি কিন্তু নতুন করিনি। এই গানটি আমার করা ১৫-১৬ বছর আগে। একটা ছবির জন্য গানটি করেছিলাম। ছবিতে মেহজাবীন ও শুভ  ছিল। ওই গানের একটা লাইন থেকে এ গানটি আবার নতুন করে করি। যেহেতু জংলি ছবি দেশীয় গল্প। গানটির মধ্যে জংলি টিম ৯০-এর দশকের একটা ফ্লেভার চাইছিল। আমিও সেটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। গানটির সঙ্গে ভিজ্যুয়ালও অসাধারণ হয়েছে। দেখবেন, এই গানটি ধীরে ধীরে মানুষের মনে গেঁথে যাবে। 

প্রিয়তমা ও রাজকুমারের পর শুধু ‘জংলি’ সিনেমার গান নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন? 

হ্যাঁ, ‘জংলি’ সিনেমার কাজ করার জন্য এমন এমন ছবির কাজ ছেড়ে দিয়েছি, যা অনেকে কল্পনাও করতে পারবে না। আমি আবার একটা কাজে ঢুকে গেলে অনেক বড় বড় কাজ হলেও সেটাতে যাই না। সেটা আমাকে যারা চেনেন বা জানেন তারা জানেন। ৯০ দশক থেকে ২৫ সাল পর্যন্ত যত  গান বা অ্যালবাম করেছি, তখন একটা অ্যালবামের গান করার সময় আমি অন্য অ্যালবামের কাজ করিনি। মূলত আমি যে কাজটি করি সে কাজের দিকেই মনোযোগী থাকি। এ ছাড়াও এ ছবির মাধ্যমে আমার দীর্ঘদিনের একটা শখ পূরণ হয়েছে। ফলে ছবিটির গানগুলো করার প্রতি আমার অন্যরকম আনন্দ ছিল। 

সে আনন্দটা কেমন? 

একটা বিষয় বলি, আমি অনেক গান করেছি। কিন্তু সিনেমার জন্য ডুয়েট গান করা হয়নি। সিনেমায় নায়ক-নায়িকারা ডুয়েট গানে ঠোঁট মেলাচ্ছে, এটা আমার কাছে অনেকটাই স্বপ্নের মতো। ছোটবেলা থেকে এটা দেখে দেখেই তো বড় হয়েছি। আমার অনেক ফ্রেন্ডরা এমন গান করেছে, এমনটি আমার যারা সহকারী আছে, তারাও অনেকে সিনেমার ডুয়েট গান করে ফেলেছে। কিন্তু আমার করা হয়নি। প্রিয়তমা ছবির যে ঈশ্বর গানটি দর্শক-শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে গেছে, সে গানটিও শাকিব খানের লিপে ছিল না। ছবির পেছনে বেজেছে। যাই হোক, যখন ঈশ্বর গানটা করছিলাম তখনই এম রাহিম আর সিয়াম আমার কাছে আসে। ওরা আমাকে সবগুলো গান করার অফার করল। সেখানে ডুয়েট গানও থাকবে। আমি কল্পনা করা শুরু করেছি। রাজ্জাক-কবরী, জাফর ইকবাল-ববিতার ঠোঁটে যে গান উঠত বিষয়টি আমার রিকল হতে শুরু করে। তখনই মনে হলো ছবিটির জন্য এমন কিছু গান করব যে গানগুলো আজ থেকে ২০ বছর পরও মানুষ শুনবে। সেটাই করার চেষ্টা করেছি। 

নতুন কোনো গানের খবর আছে? 

আমি তো গানের মানুষ। গান ছাড়া আমার কাছে কোনো খবর নেই। নতুন গানের অনেক খবরই আছে। তবে আপাতত সেগুলোর কিছুই বলার মতো অপশনে নেই। এখন তো হলে হলে জংলি নিয়ে ঘুরছি। আমরা ছোটবেলায় যেমন দেখতাম সিনেমা দেখতে পুরো পরিবার আসে। পরিবারের বাচ্চাদের নিয়ে আসতেন।  এবার সিনেমা হলে ঘুরে ঘুরে তেমন দৃশ্যই চোখে পড়ছে। ‘জংলি’ সিনেমাটি সবাই পরিবার নিয়ে এসে দেখছেন। তাদের বাচ্চাদের দেখাচ্ছেন। এটা আমার জন্য নস্টালজিক দৃশ্য। এটাই উপভোগ করছি।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ র স ন ম প র য়তম গ ন কর আম র ক র জন য বরব দ র একট র দশক সবগ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ