‘বিদায় রাফাহ্-গাজার জান্নাতি শহীদেরা’
Published: 7th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা চলছেই। একের পর এক বোমা বর্ষণে নির্বিচারে প্রাণ হারাচ্ছেন নিরপরাধ ফিলিস্তিনিরা। এমন অবস্থায় গাজার মানুষদের জন্য হৃদয় কাঁদছে মানুষের। সঙ্গে বিশ্বব্যাপী চলছে ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ।
বাংলাদেশের রাস্তায় রাস্তায় ফিলিস্তিনের পক্ষে নেমেছে সাধারণ মানুষ। এ থেকে বাদ যায়নি শোবিজ তারকারাও। এই নৃশংসতার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনের পক্ষে মুখ খুলেছেন দেশের জনপ্রিয় তারকারা।
গতকাল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে গাজাবাসীর পক্ষে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন শাকিব খান। এ পোস্টে তিনি লিখেন, “গাজা শুধু একটি ভৌগোলিক নাম নয়; এটি যেন আজ নির্যাতিত মানুষের প্রতীক! দুঃখজনক হলেও বাস্তবতা হচ্ছে, সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া আর কিছু করতে না পারা! তাদের (ফিলিস্তিনি) পাশে আছি— ভালোবাসা, সংহতি, আর শান্তির প্রত্যাশায়।”
আরো পড়ুন:
গাজা নির্যাতিত মানুষের প্রতীক: শাকিব খান
বরবাদ নিয়ে স্রেফ ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল: ডিওপি শৈলেশ
শাকিব ছাড়াও গাজায় বর্বর হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান। বিশ্ব নেতাদের সমালোচনা করেছেন তিনি। ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, “দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি সেনারা ১৫ জন জরুরি চিকিৎসাকর্মীকে হত্যা করেছে। গাজায় যে নিষ্ঠুর আর হৃদয়হীন গণহত্যা ইসরায়েল চালিয়ে আসছে, এটা তারই অংশ। পৃথিবীকে তারা ফিলিস্তিনিশূন্য করার নিয়ত নিয়ে নেমেছে।”
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ গতকাল বিকালে নিজের ফ্রি প্যালেস্টাইন স্যুটের একটি ছবি প্রকাশ করে লিখেছেন, “আমি যখন এই পোস্ট লিখছি ততক্ষণে গাজার অস্তিত্ব কী মুছে গেছে? আমরা কি পারলাম না এই শহরটাকে, এই দেশটাকে বাঁচাতে? ফিলিস্তিনের এই ধ্বংসাবশেষের দায় কি আমরা কেউ এড়াতে পারব?”
আক্ষেপ ও অসহায়ত্বের কথা উল্লেখ করে ঢালিউডের আরেক চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ লিখেছেন, “গাজার আকাশের যে ধোঁয়া আর অশ্রুর বৃষ্টি সেই নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে আমরা শুধু প্রার্থনা করতে পারি, কাঁদতে পারি, আর চিৎকার করতে পারি। এই মানুষগুলোর অপরাধ কি শুধু এই যে, তারা নিজেদের মাটিতে বাঁচতে চায়?”
গায়ক আসিফ আকবর গাজাবাসীদের নিয়ে লিখেছেন, “বিদায় রাফাহ্-গাজার জান্নাতি শহীদেরা। শ্রেষ্ঠ ধর্মের অনুসারী আর তাদের নিকৃষ্ট শাসকরা আনন্দে থাকুক জ্বলন্ত জমিনের দোজখে।”
নব্বইয়ের দশকের একজন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনও এক ভিডিও বার্তায় গাজার প্রতি নিজের সমর্থন জানিয়েছেন। এছাড়াও ঢাকার শোবিজের গাজার সমর্থনে সরব হয়েছেন।
আল জাজিরা জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং এর মধ্যেই এক দিনে আরো অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এতে করে ভূ-খণ্ডটিতে ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার ৭০০ জনে পৌঁছেছে।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?