আল্লাহর রাসুল (সা.) চিন্তিত। অবিশ্বাসীরা তাঁকে নিয়ে উপহাস করছে। আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো ধরনের বার্তাও আসছে না তাঁর কাছে। কোনো ওহি নিয়ে আসছেন না জিবরাইল (আ.)। এভাবে পনেরো দিন পার হওয়ার পর আল্লাহর তরফ থেকে নবীজির (সা.) কাছে জিবরাইল (আ.) হাজির হলেন ওহি নিয়ে।

কেন এমনটা হলো প্রিয় নবীর (সা.) সঙ্গে?

কারণ, আল্লাহর রাসুল যখন ইসলামের বাণী যখন মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন, তখন একবার অবিশ্বাসীরা গেল ইহুদিদের কাছে। ইহুদিরা তাদের তিনটি প্রশ্ন শিখিয়ে দিল। ১.

আসহাবে কাহফ কারা ছিলেন? ২. খিজিরের ঘটনাটির তাৎপর্য কী? ৩. জুলকারনাইন কে ছিলেন?

তাদের প্রশ্নগুলো শুনে তিনি জবাব দিলেন, ‘আগামীকাল এসো, তখন জবাব দেব।’ তিনি ‘ইনশাআল্লাহ’ বা ‘আল্লাহ চাইলে’ কথাটি বলতে ভুলে গেলেন। এ কারণে আল্লাহ তাঁর নবীর (সা.) প্রতি ওহি অবতরণ বন্ধ করে দিলেন। টানা পনেরোটা দিন। অবিশ্বাসীরা ভেবেছিলেন এবার তাকে কোণঠাসা করা গেল।

আরও পড়ুন শুক্রবারের আমল২৪ মার্চ ২০২৫

পনেরোদিন পরে যে ওহি এলো, তাতে আল্লাহ তাঁর হয়ে যাওয়া ভুলটা সংশোধন করে দিলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে অবিশ্বাসীদের করা তিনটা প্রশ্নেরও জবাব দিয়ে দিলেন। তাকে বললেন, ‘ভবিষ্যতের কোনো বিষয় ‘ইনশাআল্লাহ’ বা ‘আল্লাহ চাইলে’ বলা ছাড়া আপনি বলবেন না।’ (সুরা কাহাফ, আয়াত: ২৩-২৪)

তাই যখন ভবিষ্যতে কোনো কিছু করার ইচ্ছে পোষণ করা হয়, তখন এই কথার স্বীকৃতি দিতে হবে যে, যদি আল্লাহ চান তা হলে হবে। তিনি যদি না চান, তাহলে হবে না। কোনো কাজ শুরু করার আগে যদি আল্লাহকে স্মরণ করা হলে, আল্লাহ খুশি হন। আর যে কাজে স্বয়ং আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ খুশি, সে কাজে তার আশীর্বাদ নিশ্চয় থাকবে।

কাজ-কর্মে আল্লাহর স্মরণ করা হলে স্মরণের মাধ্যমে তাঁর বান্দা হিসেবে তাঁর প্রতি বিনয় ও নম্রতা প্রকাশ পায়। কোরআনে আছে, ‘তোমাদের কোনো ইচ্ছা বাস্তবে রূপ নেবে না, যদি না আল্লাহ ইচ্ছা করেন, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।’ (সুরা তাকভির, আয়াত : ২৯)

আরও পড়ুনবিসমিল্লাহ এর ফজিলত০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অব শ ব স আল ল হ

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ