আরসা প্রধান আতাউল্লাহ জুনুনিকে জেল হাজতে প্রেরণ
Published: 7th, April 2025 GMT
মিয়ানমারভিত্তিক রোহিঙ্গা বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনিকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বান্দরবানের দুইটি আদালত।
এর আগে, আরসা প্রধানকে প্রথমে বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং পরে বান্দরবান চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এসময় আদালত প্রাঙ্গণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী আলমগীর চৌধুরী বলেন, “নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে ২০২২ সালে ১৪ নভেম্বর যৌথ বাহিনীর মাদক বিরোধী অভিযানে ডিজিএফআই সদস্যকে হত্যা ও অস্ত্র আইনের মামলায় আরসা প্রধানকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বান্দরবানের আদালতে হাজির করা হয়।”
আরো পড়ুন:
রোহিঙ্গা সংকট: উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন করার প্রস্তাব জাতিসংঘে গৃহীত
টেকনাফে নৌকাডুবি: ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার, বিজিবি সদস্য নিখোঁজ
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, “নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে মাদক বিরোধী ও ডিজিএফআই সদস্য হত্যা মামলায় তিনি (আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনি) পলাতক ছিলেন। আজ তাকে অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়েছিল। আরেকটি মামলায় চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয় আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনিকে। উভয় আদালত তাকে কারগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।”
গত ১৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জে অভিযান চালিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনিকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মাদকবিরোধী অভিযানে ডিজিএফআই কর্মকর্তা স্কোয়াড্রন লিডার রিজওয়ান রুশদী হত্যাকাণ্ড ও র্যাবের এক সদস্যকে আহত করার দুটি মামলা রয়েছে।
ঢাকা/চাইমং/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম ম র জ ন ন ব ন দরব ন র হ জ র কর সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঘেঁষে একের পর এক অঘোষিত ভাগাড়, বর্জ্য ফেলে পরিবেশদূষণ
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হাড়াতলী এলাকা। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার এই এলাকায় গেলে দূর থেকেই নাকে ভেসে আসে উৎকট দুর্গন্ধ। মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনের পাশে চোখে পড়ে সারি সারি ময়লার স্তূপ। মহাসড়কের পাশ যেন হয়ে উঠেছে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভাগাড়ে।
শুধু হাড়াতলী এলাকাই নয়; ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের বেশ কয়েকটি স্থানে এমন অঘোষিত ভাগাড় গড়ে উঠেছে। মহাসড়কের প্রায় ১০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে কুমিল্লা জেলার অংশ। এর মধ্যে অন্তত ২০টি স্থানে একইভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে। কোথাও কোথাও সিটি করপোরেশন, পৌরসভার মতো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান মহাসড়কের পাশে তাদের সংগ্রহ করা ময়লা ফেলছে। এতে মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে আবর্জনার স্তূপ দিন দিন বাড়তে, মহাসড়ক পরিণত হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভাগাড়ে। এভাবে পরিবেশদূষণ বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা।
বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লার সভাপতি মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এভাবে বর্জ্য ফেলার কারণে পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যদি সঠিকভাবে করতে না পারে, তাহলে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের কাজটা কী? মানুষ তো ট্যাক্স দেয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য। এভাবে ময়লা-আবর্জনা ফেলা একধরনের অপরাধও। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে এসব বিষয়ে কঠোর হওয়া দরকার।
হাড়াতলী এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, প্রায় দুই বছর আগে স্থানটিতে ময়লা ফেলা শুরু করে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন। এরপর সেটি ধীরে ধীরে পরিণত হয় ভাগাড়ে। দিন যত গেছে, ময়লা ফেলার জায়গাটির আকার ততই দীর্ঘ হয়েছে। এ কারণে ওই স্থান দিয়ে হেঁটে চলাচল করা বেশ দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন আশপাশের বসবাসকারীরা। ভাগাড়ের আশপাশে অন্তত তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেগুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও ময়লার দুর্গন্ধে নাকাল।
এভাবে পরিবেশদূষণ বন্ধে আমরা দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করছি। তবে এ বিষয়ে মূল দায়িত্বটা পালন করতে হবে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদকে।মোসাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজীব, উপপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লাস্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ময়লা ফেলতে আমরা বারবার বাধা দিয়েছি, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। সিটি করপোরেশন সবুজে ঘেরা এলাকাটির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। এখনো প্রতিদিন ময়লা বাড়ছে। সিটি করপোরেশন বলে, তারা নাকি এখন ময়লা ফেলে না। তাহলে আমাদের প্রশ্ন, ময়লা কারা ফেলছে?’
স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, শ্রেণিকক্ষে বসা যায় না দুর্গন্ধের জন্য। একটু বাতাসেই নাকে ভেসে আসে ময়লার দুর্গন্ধ। কলেজে প্রবেশের সময় নাক চেপে ধরে আসতে হয়। এ ছাড়া পরিবেশও মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।
জানতে চাইলে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হাড়াতলীতে তিন মাস ধরে তাঁরা আবর্জনা ফেলছেন না। সিটি করপোরেশনের ফেলা ময়লাগুলো ভেকু দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এখন রাতের আঁধারে আশপাশের লোকজন এবং বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলছে। যারা ময়লা ফেলছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার প্রবেশমুখ বালুজুড়ি এলাকায় ময়লার ভাগাড়