তনু হত্যা: দায়িত্ব নেওয়ার সাত মাস পর ঘটনাস্থলে নতুন তদন্ত কর্মকর্তা
Published: 7th, April 2025 GMT
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর পার হয়েছে গত ২০ মার্চ। এই ৯ বছরে মামলার তদন্ত সংস্থার পরিবর্তন হয়েছে চারবার আর তদন্ত কর্মকর্তার পরিবর্তন হয়েছে ছয়বার। সর্বশেষ গত বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুতে মামলাটির ষষ্ঠ তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পেয়েছেন পিবিআইয়ের এক পরিদর্শক।
দায়িত্ব গ্রহণের সাত মাস পর নতুন তদন্ত কর্মকর্তা মো.
মো. তরিকুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাত মাস আগে মামলাটির দায়িত্ব গ্রহণ করা হলেও বিভিন্ন কারণে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা হয়নি। আজ ঢাকা থেকে পিবিআইয়ের একটি টিম নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছি। এটা মামলার তদন্তের নিয়মিত কার্যক্রমের একটি অংশ। এরপর আমরা ঢাকায় ফিরে যাব। আমাদের সঙ্গে তনুর পরিবারের সদস্যদের কথা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। আমরা চেষ্টা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের শনাক্ত করার জন্য।’
আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তনুর ভাই আনোয়ার হোসেন (রুবেল) প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁরা ঢাকা থেকে আসবেন, সেটা আমাদেরকে আগে জানাননি। আজ দুপুরে ঘটনাস্থলে আসার পর আমাদের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিষয়টি জানিয়েছেন।’
বিকেল চারটার দিকে তদন্ত কর্মকর্তা তনুর বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেনের সঙ্গে তাঁর অফিসে গিয়ে কথা বলেন।
তনুর পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, গত ৯ বছরে এই হত্যা মামলার তদন্তে অগ্রগতি বলতে ‘তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন’ ছাড়া আর কিছুই হয়নি।
তনুর মা আনোয়ারা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ৯ বছরে মামলার অগ্রগতি বলতে শুধুই তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন। আমরা এসব নাটক আর দেখতে চাই না। খুনিদের বিচার চাই। আমার মেয়ে কবরে, আর খুনিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে—এ কথা ভাবতেই কষ্টে বুকটা ফেটে যায়।’
তনুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হত্যার ঘটনায় মামলা হওয়ার পর শুরুতে থানা–পুলিশ, পরে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) দীর্ঘ সময় ধরে মামলাটি তদন্ত করেও কোনো কূলকিনারা পায়নি। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর তনু হত্যা মামলার নথি পিবিআইয়ের ঢাকা সদর দপ্তরে হস্তান্তর করে সিআইডি। প্রায় চার বছর মামলাটি তদন্ত করেছেন পিবিআই সদর দপ্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. মজিবুর রহমান। সর্বশেষ গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে মামলাটির ষষ্ঠ তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব পেয়েছেন মো. তরিকুল ইসলাম।
২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে একটি বাসায় টিউশনি করাতে গিয়ে আর বাসায় ফেরেননি তনু। পরে খোঁজাখুঁজি করে সেনানিবাসের পাওয়ার হাউসের অদূরে ঝোপের মধ্যে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। তাঁকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়। পরদিন তাঁর বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল ও ১২ জুন দুই দফা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তনুর মৃত্যুর কারণ খুঁজে না পাওয়ার তথ্য জানায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ।
২০১৭ সালের মে মাসে সিআইডি তনুর পোশাক থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রাণু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। এ ছাড়া তনুর মায়ের সন্দেহ করা তিনজনকে ২০১৭ সালের ২৫ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল ঢাকা সেনানিবাসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে ওই সময়ে তাঁদের নাম গণমাধ্যমকে জানায়নি সিআইডি।
আরও পড়ুনতনু হত্যার ৯ বছর: বিচার না পাওয়ার শঙ্কা মা–বাবার ২০ মার্চ ২০২৫আরও পড়ুনতনু হত্যাকাণ্ড নিয়ে আড়াই বছর পর তৎপর পিবিআই, মামলার এক সাক্ষীকে তলব২৪ জুলাই ২০২৩উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এক ঘণ্টায় ৭ ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে, জানাল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী
এক ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলের দিকে ইরানের সাতটি ড্রোন উড়ে এসেছে বলে দাবি করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী। তারা বলছে, ড্রোনগুলো প্রতিহত করেছে তারা। খবর বিবিসির
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আরও জানিয়েছে, দেশটির বিমানবাহিনী এবং নৌবাহিনী ড্রোনগুলো প্রতিহত করেছে।
প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রকাশ করা এক ভিডিওতে আকাশে বিস্ফোরণের দৃশ্য দেখা গেছে। ইসরায়েলের দাবি, এটা ড্রোন প্রতিহত করার সময়কার দৃশ্য।