ছাদে তালা থাকায় ইউনুস পরিবার নিয়ে বারান্দায় ঠাঁই নিয়েছিলেন
Published: 8th, April 2025 GMT
রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে গতকাল সোমবার ভোরে যে ভবনে আগুন লেগেছিল, সেটির পঞ্চম তলায় ইউনুস মিয়া তাঁর পরিবার নিয়ে থাকেন। এখন তিনিসহ তাঁর পরিবারের ছয় সদস্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। জানান, তেমন কোনো জটিলতা নেই তাঁদের।
হাসপাতালে বার্ন ইউনিটের পঞ্চম তলায় আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন ইউনুস মিয়া। সেদিনের আগুনের বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, গভীর রাতে আগুন লাগার বিষয়টি বুঝতে পারলেও ধোঁয়ার কারণে ভবন থেকে বের হতে পারেননি তাঁরা। তখন ভবনের ছাদে তালা লাগানো ছিল। তিনিসহ পরিবারের সদস্যরা বারান্দায় গিয়ে আশ্রয় নেন। সেখানেও অনেক ধোঁয়া ছিল। ভীষণ ভয় পেয়েছিলেন। বাঁচবেন সেই আশা তাঁরা ছেড়ে দিয়েছিলেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের লোকজন তাঁদের উদ্ধার করেন। এরপর হাসপাতালে পাঠান। গতকাল একটু অসুস্থতা অনুভব করলেও এখন সবাই ঠিক আছেন।
রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের একটি ভবনে আগুন লেগে ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে ১৩ জন এখনো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁদের কারও কারও শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করছেন চিকিৎসকেরা। এর মধ্যে দুজন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। তবে তাঁরা এই ধোঁয়ার কারণ নয়, তাঁদের স্বাস্থ্যগত অন্য জটিলতা ছিল।
বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক হারুন অর রশিদ আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘চিকিৎসাধীন ১৩ জনের শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করছি। এখনই কাউকে শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না। তাঁদের মধ্যে ১১ জন সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। মুশফিকা ও মমতাজকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।’
বার্ন ইউনিটের আরেক চিকিৎসক প্রথম আলোকে বলেন, যে ১৩ জন হাসপাতালে ভর্তি তাঁদের শরীরে আগুন লাগেনি। ধোঁয়ার কারণে তাঁরা অসুস্থ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কোনো জটিলতা তৈরি হয়নি। সতর্কতামূলক তাঁদের হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
গত সোমবার ভোর ৪টা ১০ মিনিটে নাজিমুদ্দিন রোডের পাঁচতলা ভবনটির নিচতলায় আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় ভোর সোয়া পাঁচটার দিকে আগুন নেভায়। ওই ভবন থেকে একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ভবনটির দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলার বাসাগুলো থেকে মোট ১৮ জনকে উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুনপুরান ঢাকায় অগ্নিকাণ্ডে ১৩ জনের শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত, কেউ শঙ্কামুক্ত নন: চিকিৎসক০৭ এপ্রিল ২০২৫তাঁদের মধ্যে ১৩ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরা হলেন ইকবাল (৪০), তাঁর মা মমতাজ বেগম (৭৫), স্ত্রী ইসরাত জাহান (৩৬), দুই মেয়ে ইসয়াত (৫) ও ইসতিমাম (১১) এবং ভাগনি মুশফিকা (২০)। আরও চিকিৎসা নিচ্ছেন মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র ন ইউন ট পর ব র ১৩ জন ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, চালক আটক
ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে রোববার রাতে যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা সড়কের তিনতালাব পুকুর পাড় নামক স্থানে বাসটি আটক করে এবং বাসের ড্রাইভারকে আটক করে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। এসময় বাসের হেলপার পালিয়ে যায়।
পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ওই কলেজ ছাত্রী ও ড্রাইভারকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
জানা যায়, ঢাকায় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। রোববার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে উঠেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি যেতে বানিয়াচং যাওয়ার পথে শায়েস্থাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে নামার কথা থাকলেও তিনি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে যান। ফলে বাস তাকে শায়েস্থাগঞ্জে না নামিয়ে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ওই কলেজছাত্রী একটি লোকাল বাসে উঠে। সেই বাসে কয়েকজন যাত্রী ছিল, বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে বাসের চালক ও হেলপার তাকে বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
এ বিষয়ে ওই ছাত্রী জানায়, তিনি ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। তার পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে তিনি ঢাকায় ঈদ করেছে। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি আসেননি এই জন্য আজকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন।
বানিয়াচং থানার সেনাক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা কলেজছাত্রী ও বাস চালককে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছি।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি দুলাল মিয়া জানান, ঘটনার পর বাস চালককে আটক করা হয়েছে এবং হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা লেখার কাজ চলছে।