ভারতের জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘ইন্ডিয়ান আইডল’ ছেড়েছেন বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক ও সংগীত পরিচালক বিশাল দাদলানি। দীর্ঘ ছয় বছর বিচারক হিসেবে এই শোয়ের সঙ্গে ছিলেন তিনি। ৬ এপ্রিল শেষ হয়েছে ‘ইন্ডিয়ান আইডল সিজন ১৫’। শো শেষ হওয়ার পরই এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। ইনস্টাগ্রামে শ্রেয়া ঘোষাল, বাদশার সঙ্গে একটি ভিডিও শেয়ার করে একটি দীর্ঘ পোস্ট লিখে এ ঘোষণা দেন তিনি।

বিশাল লিখেছেন, ‘আমার পক্ষ থেকে এ পর্যন্তই! টানা ছয় সিজন শেষে আজ রাতটাই ইন্ডিয়ান আইডলের বিচারক হিসেবে আমার শেষ পর্ব। আমি আশা করি, এই অনুষ্ঠান আমাকে যতটা মিস করবে, আমিও ততটাই মিস করব। শ্রেয়া, বাদশা, আদি, আরাধনা, চিত্রা, আনন্দ জি, সোনাল, প্রতিভা, সাহিল, সালোনি, মুসকান, আবিশা, পুরো প্রযোজনা দল, বিলাস, পাক্য, কৌশিক এবং বছরের পর বছর ধরে সমস্ত সহবিচারক, গায়ক ও সংগীতশিল্পীদের ধন্যবাদ।’

শো ছেড়ে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিশাল বলেন, ‘গত ছয় সিজন ধরে প্রতিবছর শো চলাকালে ছয় মাস করে মুম্বাইয়ে আটকে থাকতে হয়েছে। কোনো শো করার সুযোগ পাইনি। এমনকি নতুন সুর নিয়ে কাজের অবকাশও হয়নি। এবার আমার নিজস্ব কাজে মন দিতে চাই। সুর ও কনসার্টের জগতে ফিরতে চাই।’

বিশালের পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় আদিত্য নারায়ণ লিখেছেন, ‘একটি যুগের সমাপ্তি। বড় ভাই, তোমাকে ছাড়া ইন্ডিয়ান আইডল আর কখনো আগের মতো থাকবে না। একসঙ্গে কাটানো সব দুর্দান্ত সময়ের জন্য কৃতজ্ঞ।’
প্রসঙ্গত, বিশাল দাদলানি সিজন ১০ (২০১৮) থেকে এই শোয়ের বিচারক হিসেবে দায়িত্বপালন করছিলেন। এ ছাড়া ‘ওম শান্তি ওম’, ‘আনজানা আনজানি’, ‘দোস্তানা’, ‘আই হেট লাভ স্টোরিজ’, ‘ব্যাং ব্যাং’, ‘সুলতান’, ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’, ‘ওয়ার’–সহ অনেক বলিউড সিনেমার সংগীতের দায়িত্বে ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ