ভারতের রাজস্থান রাজ্যে দলিত স্পর্শে ‘অপবিত্র’ হয়ে যাওয়া মন্দির গঙ্গাজল ছিটিয়ে ‘পবিত্র’ করার পরদিনই বিজেপি থেকে সাময়িক বহিষ্কার হলেন জ্ঞানদেব আহুজা। রাজস্থানের আলওয়ার জেলার বিজেপিদলীয় সাবেক এই বিধায়ককে দল থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি শোকজও করা হয়েছে। নোটিশ পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন ও কোন যুক্তিতে তিনি দলের ভাবমূর্তি কলুষিত করেছেন।

রাজস্থান রাজ্য বিধানসভার বিরোধী নেতা কংগ্রেসের দলিত বিধায়ক টিকারাম জুলি আলওয়ারের রামমন্দিরে গিয়েছিলেন গত রোববার। দলিত স্পর্শে মন্দির ও বিগ্রহ ‘অপবিত্র’ হয়ে গেছে জানিয়ে পরদিন গঙ্গাজল ছিটিয়ে মন্দির ‘শুদ্ধ’ করেছিলেন জ্ঞানদেব আহুজা। সেই আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে রাজ্যজুড়ে কংগ্রেস বিক্ষোভ সমাবেশ করে। বিজেপি নেতৃত্বের প্রতি চাপ সৃষ্টি করে জ্ঞানদেবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। গতকাল মঙ্গলবারেই বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব দল থেকে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করে।

রাজস্থান বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ও লোকসভা সদস্য দামোদর আগরওয়াল গতকাল মঙ্গলবার জ্ঞানদেব আহুজার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, সাবেক বিধায়কের মনে রাখা উচিত, বিজেপির সদস্যপদ গ্রহণের সময় তিনি শপথ নিয়েছিলেন, কোনোরকম অস্পৃশ্যতায় তিনি বিশ্বাসী নন। জাত-ধর্ম-বর্ণের ভিত্তিতে কোনো রকম বৈষম্যও তিনি সমর্থন করেন না।

আহুজাকে আগরওয়াল এ কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন, অযোধ্যায় রামমন্দিরের প্রথম শিলান্যাস করেছিলেন কামেশ্বর চৌপাল নামের এক দলিত।

জ্ঞানদেব আহুজা বিজেপিকে এর আগেও বিপাকে ফেলেছেন। কিন্তু দল তাঁর বিরুদ্ধে কখনো কড়া ব্যবস্থা নেয়নি। ২০২১ সালে ঘৃণা ছড়ানো ভাষণের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে এফআইআর করা হয়েছিল। ২০২২ সালে এক ভিডিওতে জ্ঞানদেবকে বলতে শোনা গিয়েছিল, তিনি একাই পাঁচজন গরু পাচারকারীকে মেরেছেন—বেহরোরে মেরেছেন, লালওয়ান্দিতে মেরেছেন।

২০১৭ সালে রাজস্থানের বেহরোরে গরু পাচারের অভিযোগে গণপিটুনিতে খুন হয়েছিলেন পেহলু খান। ২০১৮ সালে লালওয়ান্দিতে পিটিয়ে মারা হয়েছিল রাকবরকে।

ওই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিজেপি জ্ঞানদেবের সংস্পর্শ ত্যাগ করলেও তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়নি। এবারও গঙ্গাজল ছিটিয়ে মন্দির পবিত্র করার অপরাধে তাঁকে দল থেকে তাড়ানো হলো না। শুধু সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দল থ ক মন দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক অলিম্পিক চ্যাম্পিয়নের মৃত্যু

২৬ জুলাই ২০২৪, প্যারিসের টুইলারি বাগান। আকাশে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যাতেই জ্বলে উঠেছিল অলিম্পিক মশাল। শতবর্ষ পার করা চার্লস কস্তের জীবনে সেটাই ছিল ‘সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্তগুলোর একটি’। সেদিন তিনি হাতে থাকা মশাল তুলে দিয়েছিলেন ফরাসি অলিম্পিয়ান টেডি রিনারের হাতে।

প্যারিস অলিম্পিক শুরুর প্রায় এক মাস আগে আয়োজকদের কাছ থেকে ফোন পেয়েছিলেন তিনি। অনেকটা নিভৃতেই তাঁকে জানানো হয়েছিল, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষ দিকে মশালবাহকদের একজন হবেন তিনি।

১০১ বছর বয়সী সেই চার্লস কস্তে আর নেই। ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রী মারিয়ানা ফেরারি গতকাল তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। এর মধ্য দিয়ে বিদায় নিলেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক সাবেক অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন।

১৯২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেওয়া কস্তে ছিলেন ট্র্যাক সাইক্লিস্ট। ১৯৪৮ সালের লন্ডন অলিম্পিকে ছেলেদের টিম পারস্যুট ইভেন্টে তিনি জেতেন স্বর্ণপদক।

২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে টেডি রেনার ও মেরি জোজের মশাল প্রজ্জ্বলন করছেন চার্লস কস্তে

সম্পর্কিত নিবন্ধ