রাজস্থানে গঙ্গাজল ছিটিয়ে মন্দির ‘পবিত্র’ করা বিজেপির সেই নেতা সাময়িক বহিষ্কার
Published: 9th, April 2025 GMT
ভারতের রাজস্থান রাজ্যে দলিত স্পর্শে ‘অপবিত্র’ হয়ে যাওয়া মন্দির গঙ্গাজল ছিটিয়ে ‘পবিত্র’ করার পরদিনই বিজেপি থেকে সাময়িক বহিষ্কার হলেন জ্ঞানদেব আহুজা। রাজস্থানের আলওয়ার জেলার বিজেপিদলীয় সাবেক এই বিধায়ককে দল থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি শোকজও করা হয়েছে। নোটিশ পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন ও কোন যুক্তিতে তিনি দলের ভাবমূর্তি কলুষিত করেছেন।
রাজস্থান রাজ্য বিধানসভার বিরোধী নেতা কংগ্রেসের দলিত বিধায়ক টিকারাম জুলি আলওয়ারের রামমন্দিরে গিয়েছিলেন গত রোববার। দলিত স্পর্শে মন্দির ও বিগ্রহ ‘অপবিত্র’ হয়ে গেছে জানিয়ে পরদিন গঙ্গাজল ছিটিয়ে মন্দির ‘শুদ্ধ’ করেছিলেন জ্ঞানদেব আহুজা। সেই আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে রাজ্যজুড়ে কংগ্রেস বিক্ষোভ সমাবেশ করে। বিজেপি নেতৃত্বের প্রতি চাপ সৃষ্টি করে জ্ঞানদেবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। গতকাল মঙ্গলবারেই বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব দল থেকে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করে।
রাজস্থান বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ও লোকসভা সদস্য দামোদর আগরওয়াল গতকাল মঙ্গলবার জ্ঞানদেব আহুজার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, সাবেক বিধায়কের মনে রাখা উচিত, বিজেপির সদস্যপদ গ্রহণের সময় তিনি শপথ নিয়েছিলেন, কোনোরকম অস্পৃশ্যতায় তিনি বিশ্বাসী নন। জাত-ধর্ম-বর্ণের ভিত্তিতে কোনো রকম বৈষম্যও তিনি সমর্থন করেন না।
আহুজাকে আগরওয়াল এ কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন, অযোধ্যায় রামমন্দিরের প্রথম শিলান্যাস করেছিলেন কামেশ্বর চৌপাল নামের এক দলিত।
জ্ঞানদেব আহুজা বিজেপিকে এর আগেও বিপাকে ফেলেছেন। কিন্তু দল তাঁর বিরুদ্ধে কখনো কড়া ব্যবস্থা নেয়নি। ২০২১ সালে ঘৃণা ছড়ানো ভাষণের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে এফআইআর করা হয়েছিল। ২০২২ সালে এক ভিডিওতে জ্ঞানদেবকে বলতে শোনা গিয়েছিল, তিনি একাই পাঁচজন গরু পাচারকারীকে মেরেছেন—বেহরোরে মেরেছেন, লালওয়ান্দিতে মেরেছেন।
২০১৭ সালে রাজস্থানের বেহরোরে গরু পাচারের অভিযোগে গণপিটুনিতে খুন হয়েছিলেন পেহলু খান। ২০১৮ সালে লালওয়ান্দিতে পিটিয়ে মারা হয়েছিল রাকবরকে।
ওই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিজেপি জ্ঞানদেবের সংস্পর্শ ত্যাগ করলেও তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়নি। এবারও গঙ্গাজল ছিটিয়ে মন্দির পবিত্র করার অপরাধে তাঁকে দল থেকে তাড়ানো হলো না। শুধু সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে দুই স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ১
রাজবাড়ীর পাংশায় প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে দুই স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল রোববার রাতে পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ভুক্তভোগী দুই ছাত্রীর মা ও বাবা গতকাল পৃথকভাবে বাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে পাংশা থানায় দুটি মামলা করেন। এতে হাসমত আলী (২২) ও শিহাব মণ্ডল (২০) নামের দুই তরুণকে আসামি করা হয়। তাঁদের বাড়ি উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নে। মামলা করার পর পুলিশ রাতে অভিযান চালিয়ে শিহাবকে গ্রেপ্তার করে।
ভুক্তভোগী দুই স্কুলছাত্রী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাদের একজনের বয়স ১৪ বছর এবং অপরজনের বয়স ১৫ বছর।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়া শেষে দুই বান্ধবী একসঙ্গে বাড়ি ফিরছিল। পথে উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের বনগ্রাম এলাকায় পৌঁছালে তাদের পথ রোধ করে হাসমত ও শিহাব। ধারালো ব্লেড বের করে স্কুলছাত্রী দুজনকে জিম্মি করে রাস্তার অদূরে একটি পানের বরজে জোর করে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে পৃথক স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করেন ওই দুই তরুণ। বিষয়টি কাউকে না জানাতে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলে যান তাঁরা।
গতকাল রাতে পাংশা মডেল থানায় মামলা করতে আসা ভুক্তভোগী দুই স্কুলছাত্রীর পরিবার জানায়, হাসমত ও শিহাব ওই দুই স্কুলছাত্রীকে মাঝেমধ্যে উত্ত্যক্ত করতেন। এ ঘটনায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।
পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অষ্টম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে একজনের মা এবং অপরজনের বাবা বাদী হয়ে রোববার রাতে হাসমত আলী ও শিহাব মণ্ডলকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলা করেন। রাতেই আসামি শিহাব মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামি হাসমতকে গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
ওসি সালাহ উদ্দিন আরও বলেন, গ্রেপ্তার শিহাব পুলিশের কাছে ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তাঁর পোশাকেও ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তাঁকে সোমবার রাজবাড়ীর আদালতে পাঠানো হবে। দুই স্কুলছাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।