রাজশাহীর বাঘায় টিসিবির একজন ডিলারের পণ্য চুরি হয়েছে। উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের উপকারভোগীদের মধ্যে বিতরণের জন্য ওই পণ্য ইউনিয়ন পরিষদের গুদামে রাখা ছিল। গতকাল বুধবার সকালে তা বিতরণ করার কথা ছিল।

ওই ইউনিয়নের টিসিবির ডিলার মেসার্স বিপ্লব এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবু তালেব সরকার মৌখিকভাবে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছেন।
ডিলারের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের মোট উপকারভোগী ১ হাজার ৩১১ জন। ইউনিয়নে বরাদ্দ পণ্য গুদামে রাখা ছিল। ঈদের আগে ৮৬২ জনকে পণ্য দেওয়া হয়েছে। গতকাল বাকি ৪৫৯ জনকে টিসিবির পণ্য দেওয়ার নির্ধারিত দিন ছিল। গুদামে ৪৫৯ কেজি চিনি ছিল। সব চিনিই চুরি হয়ে গেছে। ৯১৮ কেজি ডালের মধ্যে ৪২৫ কেজি ও ৪৫৯ বোতল সয়াবিন তেলের মধ্যে ১৮৯ বোতল গেছে।

গ্রাম পুলিশের সদস্য জামাল উদ্দিন (৫৩) বলেন, ‘আমরা ভালোভাবে ইউনিয়ন পরিষদে পালাক্রমে পাহারার কাজ করে থাকি। কখন, কীভাবে গুদামে চুরি হয়েছে, তা বুঝতে পারিনি। গতকাল গুদাম খোলার পরে চুরির বিষয়টি ধরা পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, মঙ্গলবার রাতের কোনো একটা সময় দুষ্কৃতকারীরা জানালা ভেঙে গুদামে ঢুকেছেন। এরপর ভেতর থেকে বন্ধ করা একটি দরজা খুলে মাল বের করে নিয়ে গেছে।’

এদিকে গতকাল সকালে উপকারভোগীরা পণ্য নিতে আসেন। তাঁদের মধ্যে যাঁরা আগে এসেছিলেন, তাঁদের অবশিষ্ট পণ্য থেকে বিতরণ করা হয়। তবে কেউই চিনি পাননি। দূর থেকে এসে উপকারভোগীদের অনেকেই খালি হাতে ফিরে গেছেন। এ নিয়ে তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

ডিলার আবু তালেব সরকার বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, কোনো একটি মহল আমাকে ফাঁসাতে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। প্রশাসনের কাছে আমার দাবি, তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। তাহলেই মূল তথ্য বেরিয়ে আসবে।’
ইউএনও শাম্মী আক্তার বলেন, টিসিবির পণ্য চুরি হওয়ার ঘটনায় মৌখিক অভিযোগ পেয়েছেন। আইনগতভাবে টিসিবির পণ্য উত্তোলনের পর ডিলারের হেফাজতে রাখার দায়িত্ব।

বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আ ফ ম আছাদুজ্জামান বলেন, বাউসা ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য চুরির খবর শুনেছেন। সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে তিনি রাজশাহীতে মিটিংয়ে গিয়েছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

প্রথম নারী হাওয়া (আ.)-র জন্ম যেভাবে

আল্লাহ মানুষ বানালেন। প্রথমে বানালেন আদম (আ.)-কে। ফেরেশতারা তাঁকে সিজদা করলেন। জান্নাতেই থাকতেন তিনি। একাকী। তাঁর কোনো সঙ্গী বা স্ত্রী ছিল না, যাঁর কাছে তিনি ভালোবাসা পেতে পারেন, কথা বলতে পারেন, একাকিত্ব ঘোচাতে পারেন, প্রশান্তি লাভ করতে পারেন।

একদিন আদম (আ.) ঘুমিয়ে ছিলেন। জেগে উঠে দেখতে পেলেন, একজন নারী বসে আছেন তাঁর মাথার কাছে। এর আগে তিনি এমন অবয়ব বা মানুষ দেখেননি কোনোদিন। পরিচয় জানতে চাইলেন। তিনি বললেন, ‘আমি নারী।’ জানতে চাইলেন, ‘তোমাকে সৃষ্টির কারণ কী?’ বললেন, ‘আপনার প্রশান্তির জন্য।’

আল্লাহ সুরা নিসার ১ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘হে মানুষ, তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তা থেকে তাঁর স্ত্রী সৃষ্টি করেন, যিনি তাঁদের দুজন থেকে বহু নারী-পুরুষ ছড়িয়ে দেন।’

আরও পড়ুনমুসা (আ.)-এর বিয়ের শর্ত১৫ এপ্রিল ২০২৫

এ আয়াতের মাধ্যমে বোঝা যায়, আল্লাহুতাআলা হাওয়া (আ.)-কে আদম (আ.) থেকে সৃষ্টি করেছেন। এখানে দুই ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে। ১. আল্লাহুতাআলা পুরুষের সঙ্গে তারই স্বজাতীয় অপর এক নারী সৃষ্টি করেছেন, যে পুরুষের জীবনসঙ্গিনী হয়ে থাকে। ২. হাওয়া (আ.)-কে আদম (আ.)-এর পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। (কাসাসুল কোরআন, ১/৪০)

তাফসিরবিদরা প্রথম ব্যাখ্যাকেই সমর্থন করছেন। এর সারমর্ম হলো, নারী জাতি পুরুষেরই স্বজাতীয় এবং একইভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে।

নারীকে পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টির কথা বলা আছে হাদিসে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা নারীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো। তাদের পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং হাড়ের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বাঁকা হাড় হলো এটা (আর তা থেকেই নারীদের সৃষ্টি করা হয়েছে)। তুমি যদি তা সোজা করতে যাও, তাহলে তা ভেঙে যাবে আর যদি ছেড়ে দাও, তাহলে সব সময় তা বাঁকাই থাকবে। কাজেই নারীদের উত্তম উপদেশ দিতে থাকো।’ (বুখারি, হাদিস: ৫,১৮৫)

আরও পড়ুনস্বজাতিকে বাঁচাতে চাইল যে কাঠমিস্ত্রি১৬ এপ্রিল ২০২৫

আদম ও হাওয়া (আ.)-এর বসবাস শুরু হলো জান্নাতে। তাঁরা সেখানে একসঙ্গে থাকতে লাগলেন। তাঁদের জন্য অফুরন্ত নেয়ামতের ব্যবস্থা ছিল সেখানে। তাঁরা নেয়ামতের মধ্যে ডুবে ছিলেন। ইচ্ছামতো ঘুরতেন। পছন্দমতো খেতেন। এর মধ্যে আল্লাহ একটি গাছ দেখিয়ে বললেন, ‘তোমরা এর কাছে যেয়ো না।’ পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আর আমি বললাম, হে আদম, তুমি তোমার সঙ্গিনীকে নিয়ে জান্নাতে বাস করো এবং যেখানে ইচ্ছা যাও বা যা ইচ্ছা খাও, কিন্তু ওই গাছের কাছে যেয়ো না, গেলে তোমরা সীমালঙ্ঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ১৯)

কিন্তু ইবলিসের প্রবঞ্চনায় আদম (আ.)-কে নিয়ে খেয়ে ফেলেন নিষিদ্ধ সেই গাছের ফল—আল্লাহ যা নিষেধ করেছিলেন। সীমালঙ্ঘন করায় আল্লাহ তাআলা আদমকে (আ.) তাঁর সঙ্গীনি হাওয়া (আ.)-সহ দুনিয়ায় পাঠিয়ে দেন। শুরু হলো পৃথিবীতে মানুষের বসবাস।

 লেখক: আলেম

আরও পড়ুনশীতল অগ্নি১৬ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ