স্রোতে বিলীন ২০০ মিটার সড়ক, দুর্ভোগ ২২ গ্রামে
Published: 11th, April 2025 GMT
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বাতাকান্দি-দুধঘাটা-মোহনপুর-বাহেরচর সড়কের বিষফোঁড়া ২০০ মিটার। এ সড়ক দিয়ে তিতাস ও দাউদকান্দি উপজেলার ২২ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। সাতানী ইউনিয়নের চরকুমারী গ্রামে কাঁঠালিয়া নদীর স্রোতে রাস্তার প্রায় ২০০ মিটার ধসে পড়ে ২০২২ সালে। ফলে এ রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। গত বছর রাস্তাটি সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলেও কাজ শেষ না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে এ সড়ক ব্যবহারকারী মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিতাস উপজেলার বাতাকান্দি বাজার থেকে দুধকাটা-মোহনপুর হয়ে দাউদকান্দি বাহারচরে একটি রাস্তা গেছে। রাস্তাটির দৈর্ঘ্য সাড়ে ১৪ কিলোমিটারের বেশি। এ সড়ক ব্যবহার করে তিতাস উপজেলার দুই ইউনিয়নের ২২ গ্রামের মানুষ দাউদকান্দি হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করে। অন্যদিকে দাউদকান্দির কয়েকটি গ্রামের মানুষ সিলেট ও বৃহত্তর বাতাকান্দি বাজারে আসে এ সড়ক ব্যবহার করে। সাতানী ইউনিয়নের বাতাকান্দি, পুরাতন বাতাকান্দি, রামভদ্র, চরকুমারী, গাবতলী, কালিবাজার, সরস্বতীর চর, দূরলদ্বী, মাছিমপুর, সাতানী, রায়পুর ও মজিদপুর ইউনিয়নের ভূঁইয়ার বাজার, দুধঘাটা, মোহনপুর, ধরিগাঁও কৈয়ের বাজার, নন্দীর চর, নতুন বাটেরা, চরবাটেরা, দাউদকান্দির বাহেরচর, হাসনাবাদ ও উপজেলা সদরের মানুষ এ সড়ক ব্যবহার করে।
সরেজমিন দেখা গেছে, সাতানী ইউনিয়নের চরকুমারী গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কাঁঠালিয়া নদী। চরকুমারী গ্রামের মধ্যপাড়ায় কাঁঠালিয়া নদীর পাশের ২০০ মিটারের মতো রাস্তার বেশির ভাগ নদীতে ধসে পড়েছে পানির স্রোতের কারণে। রাস্তার কিছু অংশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে অটোরিকশা, মোটরসাইকেল যাতায়াত করছে। রাস্তা সরু হওয়ায় ট্রাকসহ অন্য কোনো ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। রাস্তার এই অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, রাস্তার কার্পেটিং উঠে গিয়ে মাটি বের হয়ে গেছে। এই রাস্তা দিয়ে পাশাপাশি দুটি অটোরিকশা যাতায়াত করতে পারছে না।
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক আসলাম হোসেন জানান, সড়কের একটি জায়গায় কিছু অংশ ভেঙে যাওয়ার কারণে তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিন বছরের বেশি সময় ধরে রাস্তার ভাঙা অংশ সংস্কারের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা এখনও শেষ হয়নি। ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছেন তারা। বিশেষ করে বৃষ্টির দিনে ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করে এ রাস্তা, কাদায় পিছলে প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়।
অটোরিকশাচালক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘প্রতিদিন এই রুটে যাতায়াত করি। পুরো রাস্তায় শান্তিপূর্ণভাবে যেতে পারি। যখন এই অংশে আসি তখনই ভয়ে থাকি কখন না নদীতে পড়ে যাই গাড়ি নিয়ে। বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ার কারণে এ জায়গাটি পার হতে আতঙ্কে থাকি।’
সাতানী বাজারের ব্যবসায়ী ফুল মিয়ার ভাষ্য, রাস্তাটি ভেঙে পড়ার পর থেকে ট্রাক দিয়ে পণ্য আনতে পারছেন না তারা। বিকল্প পথে মালপত্র আনার কারণে খরচ অনেক বেশি পড়ছে। তিন বছরের বেশি সময় ধরে রাস্তার এ অবস্থা হলেও এখনও নির্মাণ কাজ শেষ হচ্ছে না।
কালিবাজার গ্রামের শিক্ষক সালমান হোসেন জানান, এই সড়ক দিয়ে উপজেলা সদরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে হয় তাদের। কারণ এটিই তাদের একমাত্র সড়ক। তিন বছরের বেশি সময় ধরে রাস্তাটি ভেঙে থাকলেও এখনও সংস্থার কাজ শেষ হয়নি। এখান দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়ে যাতায়াত করতেও কষ্ট হয়, কারণ রাস্তা পুরোটাই ভেঙে গেছে।
মোহনপুরের শফিক মিয়ার ভাষ্য, কিছুদিন আগে তার মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে নিয়ে তিতাস হাসপাতালে যাওয়ার সময় অটোরিকশা উল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়। কোনো রকমে লোকজন অটোরিকশাটি ধরে রক্ষা করে, না হলে অসুস্থ মানুষ নিয়ে নদীতে পড়ে যেতে হতো। এই এলাকার বেশির ভাগ গ্রামের দুর্ভোগের কারণ এখন এই সড়কের ভাঙা অংশ। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
তিতাস উপজেলা প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আসার আগে ২০২২ সালে নদীর স্রোতে সড়কের এই জায়গাটি ভেঙে গেছে। ইস্টিমেট পাঠিয়েছিলাম আমি, টেন্ডার হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে। ঠিকাদার কয়েক দিনের মধ্যে কাজ শুরু করবেন বলে আমার সঙ্গে কথা হয়েছে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: নদ ত ত স উপজ ল ২০০ ম ট র ক ব যবহ র দ উদক ন দ ইউন য ন র ম হনপ র চরক ম র উপজ ল র বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।
উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।
ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।
এএএম//