১. বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন নয়

কেউ কেউ বেশির ভাগ সময় বিভ্রান্তিতে থাকেন। এই বিভ্রান্তির কারণে বারবার নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। এতে আশপাশের মানুষ তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাই উচিত হবে ভেবেচিন্তে যেকোনো সিদ্ধান্ত দৃঢ়তার সঙ্গে নেওয়া এবং স্পষ্টভাবে তা প্রকাশ করা।

২. সঠিক দক্ষতা অথবা জ্ঞানের অভাব

কোনো বিষয়ে জ্ঞান অথবা দক্ষতার অভাব থাকতেই পারে। এমন বিষয়ে মতামত দেওয়ার আগে খুব ভালোভাবে জেনে নিন, নিজে পরিষ্কার ধারণা নিয়ে তবেই অন্যদের সামনে আলোচনা করুন। এতে আলোচনার সময় অন্যরা বুঝতে পারবেন, বিষয়টি সম্পর্কে আপনি সবিস্তার জানেন।

৩.

নিষ্ক্রিয় থাকা

এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা কোনো বিষয়েই মতামত দিতে চান না। কোনো বিষয়ে মতামত চাইলেও তাঁরা বলেন, বাকিরা যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তাতেই তাঁরা রাজি। কেউ যখন দেখে আপনি আপনার সিদ্ধান্ত অথবা চিন্তাভাবনা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে পারছেন না, তখন স্বাভাবিকভাবেই তাঁর কাছে আপনার গুরুত্ব কমে যায়। ফলে অন্যরা আপনাকে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ পান। তাই সব সময় নিষ্ক্রিয় না থেকে নিজের মতামত প্রকাশ করতে চেষ্টা করুন।

৪. শরীরী ভাষা

আমরা যখন কারও সঙ্গে কথা বলি, তখন আমাদের ব্যবহৃত বাক্যের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় শরীরী ভাষা বা বডি ল্যাংগুয়েজ। কথা বলার সময় আমরা আত্মবিশ্বাসী না হলে আমাদের অঙ্গভঙ্গি, দেহভঙ্গি, হাবভাব, মাথার নড়াচড়া, চোখের দিকে না তাকিয়ে কথা বলা ইত্যাদি দেখে খুব সহজেই তা বোঝা যায়। এসব ছোট ছোট বিষয় যেমন আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে পারে, তেমনি ভেঙেও দিতে পারে।

৫. অতিরিক্ত ব্যাখ্যা করা

অনেক সময় আমরা যখন মনে করি কেউ আমাদের বুঝতে পারছে না। তখন আমরা অতিরিক্ত ব্যাখ্যা দিতে শুরু করি। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অতিরিক্ত ব্যাখ্যার ফলে আপনাকে আপনার ধারণা সম্পর্কে বিভ্রান্ত মনে হতে পারে। তাই সংক্ষিপ্তভাবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আপনার মতামত প্রকাশ করুন।

৬. অতিরিক্ত ক্ষমা চাওয়া

কোনো বিষয়ে অতিরিক্ত ক্ষমা চাওয়া আপনার দুর্বলতা প্রকাশ করতে পারে। কোনো বিষয়ে আপনি ভুল করে থাকলে উপযুক্ত সময়ে ক্ষমা চেয়ে নিন। ক্রমাগত ‘সরি’ বলার ফলে অন্যরা আপনার প্রতি সন্দিহান হতে পারে, শ্রদ্ধা হারিয়ে ফেলতে পারে।

৭. আত্মবিশ্বাসের অভাব

অন্যরা আপনাকে কতটা গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন, তার অনেকটাই নির্ভর করে আপনার আত্মবিশ্বাসের ওপর। আপনি নিজেকে নিয়ে দ্বিধায় থাকলে অন্যরাও আপনার ওপর ভরসা করতে পারবেন না। আত্মবিশ্বাসীদের প্রতি মানুষ স্বাভাবিকভাবেই আকৃষ্ট হন। আপনার কাজ, কথা বলার ধরন এবং শরীরী ভাষাতে ধরা দেবে আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী।

সূত্র: দ্য ইকোনোমিক টাইমস

আরও পড়ুনবেশি দিন বাঁচতে চান, আজ থেকেই বন্ধুদের গুরুত্ব দিন০৯ নভেম্বর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপন ক মত মত আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্যের ৪৫% রাজনৈতিক

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত ভুল তথ্য ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এ সময়ে যাচাই করা ভুল তথ্যের ৪৫ শতাংশই ছিল রাজনৈতিক। গতকাল বুধবার তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 

এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত ভুল তথ্য ছিল ১ শতাংশ। ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে তা বেড়ে ৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সংখ্যার হিসাবে গত প্রান্তিকে এ ধরনের ভুল তথ্য ছিল মাত্র ১১টি। সেটি এ বছরের প্রথম তিন মাসে সাত গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭টিতে। ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বাংলাদেশ-সংশ্লিষ্ট আটটি ফ্যাক্ট চেকিং ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পেয়েছে ডিসমিসল্যাব। 

সংস্থাটির গবেষণায় দেখা গেছে, জানুয়ারি-মার্চ সময়ে ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠানগুলো ১ হাজার ২৩৬টি তথ্য যাচাইয়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে স্বতন্ত্র ভুল তথ্য পাওয়া গেছে ৮৬৭টি, যা আগের প্রান্তিকে রেকর্ড করা ৮১৬টির তুলনায় কিছুটা বেশি। ভুল তথ্যের প্রায় অর্ধেকই (৪৫ শতাংশ) রাজনীতি সম্পর্কিত ছিল। এর পর ছিল ধর্ম-সংক্রান্ত ভুল তথ্য (১৩ শতাংশ), যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় সামান্য কম।

অপরাধ-সম্পর্কিত ভুল তথ্য বেড়েছে 

বছরের প্রথম তিন মাসে প্রচারিত খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই ও ডাকাতি-সংক্রান্ত খবর ছিল ৭০ শতাংশ। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনা ছিল ভারতের, যা বাংলাদেশের বলে ভুলভাবে প্রচার করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে একটি ইউটিউব চ্যানেলে হোটেল থেকে লাফিয়ে পড়া এক ভিডিও প্রচার করে বাংলাদেশের বলে দাবি করা হয়, কিন্তু সেটি ছিল মূলত ইন্দোনেশিয়ার।

 রাজনৈতিক ভুল তথ্য 

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে যাচাই করা ভুল তথ্যের ৪৫ শতাংশই রাজনৈতিক। আগের বছরও রাজনীতি-সংক্রান্ত ভুল তথ্য প্রচারিত হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ (৩৪.৮ শতাংশ) ও অন্তর্বর্তী সরকারকে (২১.৮ শতাংশ) নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। তবে আওয়ামী লীগকে কেন্দ্র করে প্রচারিত ভুল তথ্যগুলোর অধিকাংশই (৬৮ শতাংশ) ছিল ইতিবাচক। অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপি, জামায়াত-শিবির ও সমন্বয়কদের নিয়ে ছড়ানো অধিকাংশ ভুল তথ্য ছিল নেতিবাচক।

 ধর্ম-সংক্রান্ত ভুল তথ্য

ধর্ম-সম্পর্কিত ভুল তথ্যের সংখ্যা সর্বশেষ প্রান্তিকে কিছুটা কমেছে। গত বছরের শেষ প্রান্তিকে ধর্ম-সংক্রান্ত ভুল তথ্যের পরিমাণ ছিল মোট যাচাইকৃত ভুল তথ্যের ১৮ শতাংশ, যা চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ শতাংশে। তবে এর ধরন ছিল একই রকমের। যেমন, পুরোনো বা সম্পাদিত ছবি-ভিডিও সাম্প্রতিক বলে প্রচার করা। 

বেড়েছে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল তথ্য 

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল তথ্যের পরিমাণ বাড়তে দেখা গেছে। ২০২৪ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভুল তথ্য নিয়ে প্রকাশিত হয়েছিল ২৭টি ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন। সেখানে এ বছরের প্রথম তিন মাসে এই সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪টিতে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসব ভুল তথ্যের ২৪ শতাংশ ছিল রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ