কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য নতুন একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) সংগীত তৈরির টুল তৈরি করেছে ইউটিউব। ‘মিউজিক অ্যাসিস্ট্যান্ট’ নামে পরিচিত এই সুবিধার মাধ্যমে নির্মাতারা এখন নিজেরাই তৈরি করতে পারবেন ভিডিওর সঙ্গে মানানসই ইনস্ট্রুমেন্টাল ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক। রয়্যালটি ফ্রি এই ট্র্যাকগুলো ইউটিউবের ‘ক্রিয়েটর মিউজিক’ প্ল্যাটফর্ম থেকে বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যাবে।

সাধারণত ভিডিও নির্মাতাদের জন্য ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক খুঁজে পাওয়া বা লাইসেন্স করার বিষয়টি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ইউটিউবের নতুন এই উদ্যোগে সেই প্রক্রিয়াটি অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ সুবিধার ফলে নির্মাতারা সহজ ভাষায় লিখে জানাতে পারবেন, কী ধরনের সংগীত তাদের প্রয়োজন। ইনপুট হিসেবে কোন বাদ্যযন্ত্র থাকবে, সংগীতের আবহ বা মুড কেমন হবে এবং এটি কী ধরনের ভিডিওর জন্য ব্যবহৃত হবে, তা লেখা যাবে। এই তথ্য বিশ্লেষণ করে এআই টুলটি একাধিক মিউজিক অপশন তৈরি করে দেবে। ব্যবহারকারীরা চাইলে ট্র্যাকগুলোর নির্দিষ্ট উপাদান যেমন গতি, মুড কিংবা যন্ত্রের উপস্থিতিও নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগও পাবেন।

প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক যেসব নির্মাতা ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে যুক্ত এবং ‘ক্রিয়েটর মিউজিক’ প্ল্যাটফর্মে অ্যাক্সেস রয়েছে, তারাই মিউজিক অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবহার করতে পারছেন। এই টুলটি ইউটিউবের পূর্ববর্তী এক্সপেরিমেন্ট ‘ড্রিম ট্র্যাকস’-এর হালনাগাদ সংস্করণ বলা যেতে পারে। তবে ড্রিম ট্র্যাকসের মাধ্যমে যেখানে শুধু স্বল্প দৈর্ঘ্যের সুর তৈরি করা যেত, মিউজিক অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবহার করে নির্মাতারা এখন পূর্ণাঙ্গ ও দীর্ঘস্থায়ী ইনস্ট্রুমেন্টাল ট্র্যাক তৈরি করা যাবে।

মিউজিক অ্যাসিস্ট্যান্ট থেকে তৈরি করা প্রতিটি সুর নির্মাতারা বিনা খরচে ব্যবহার করতে পারবেন। এতে আলাদা করে লাইসেন্স কেনার প্রয়োজন পড়বে না। ফলে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক খোঁজার ঝামেলা যেমন কমবে, তেমনি ভিডিও নির্মাণে সময় বাঁচবে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ