বড় ভাইকে হত্যার পর পুলিশকে ডেকে আত্মসমর্পণ
Published: 12th, April 2025 GMT
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় বিয়ে নিয়ে বাকবিতণ্ডার জের ধরে বড় ভাইকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছেন মো. সাকিব (২৪) নামের এক যুবক। পরে তিনি জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে ডেকে আত্মসমর্পণ করেছেন।
শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে নিহত রাকিব উদ্দিনের (৩০) স্ত্রী তাজ নাহার বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাত ২টার দিকে হাতিয়া উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চরচেঙ্গা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত রাকিব উদ্দিন ওই গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে। হত্যাকারী মো.
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সাকিব আগে তিনটি বিয়ে করেছেন। কয়েক দিন আগে তিনি চতুর্থ বিয়ে করেন। চতুর্থ বিয়ে নিয়ে শুক্রবার রাত ২টায় নিজ বাড়িতে বড় ভাই রাকিবের সঙ্গে সাকিবের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সাকিব উত্তেজিত হয়ে রাকিবের বুকে ও বুকের পাশে ছুরিকাঘাত করেন। পরিবারের সদস্যরা গুরুতর আহত রাকিবকে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ছুরিকাঘাতের পর সাকিব নিজেই জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯-এ কল করে বড় ভাইকে খুন করার বিষয়টি জানান। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা বলেছেন, রাকিবের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
ঢাকা/সুজন/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
তাজউদ্দীন আহমদ দলমতের ঊর্ধ্বে একজন রাষ্ট্রনায়ক: শারমিন আহমদ
স্বাধীনতাযুদ্ধকে যখন শুধু আওয়ামী লীগিকরণ করা হচ্ছিল, তখন তাজউদ্দীন আহমদ সেটার বিরোধিতা করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন তাঁর কন্যা শারমিন আহমদ। তিনি বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ শুধু আওয়ামী লীগের নয়। উনি পুরো জাতির। তাজউদ্দীন আহমদ দলমতের ঊর্ধ্বে একজন রাষ্ট্রনায়ক।
আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘তাজউদ্দীন আহমদ স্মারক বক্তৃতা-২০২৫’ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শারমিন আহমদ। সেখানেই তিনি এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি নিয়ে কথা বলেন শারমিন আহমদ। তিনটি শর্তের ওপর ভিত্তি করে এই চুক্তি হয় বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, সে সময় তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ইন্দিরা গান্ধীকে বলেছিলেন, স্বীকৃতি বাদে বন্ধুত্ব হয় না। সেই স্বীকৃতি হতে হবে সমতার ভিত্তিতে। সে সময় তাজউদ্দীন আহমদ ভারতীয় সেনাবহিনীর একক কমান্ডে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, ‘না, এটি যৌথ কমান্ডের ভিত্তিতে হবে। এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ।’
আরও পড়ুনজন্মদিনে ডায়েরিতে যা লিখেছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ২৩ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনতাজউদ্দীন আহমদ দেশের স্বাধীনতার প্রধান পুরুষ২৮ জুলাই ২০২৫শারমিন আহমদ বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ প্রতিরোধ না করলে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের চুক্তিপত্রে লেখা থাকত ভারতের কাছে পাকিস্তান বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার যখনই মনে করবে, তখনই ভারতীয় বাহিনীকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে, এটিই ছিল তৃতীয় শর্ত বলে জানান শারমিন আহমদ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ওই শর্তের ভিত্তিতেই ভারতীয় বাহিনীকে প্রত্যাবর্তনের জন্য বলেন।
আরও পড়ুনতাজউদ্দীন আহমদ: রোজনামচার মানুষটিকে বোঝা২৩ জুলাই ২০২৫অনুষ্ঠানে হতাশা প্রকাশ করে শারমিন আহমদ বলেন, এসব ইতিহাস পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এসব ইতিহাস সংরক্ষণ করা হয়নি বলেই ভারতীয়রা এ দেশ স্বাধীন করেছে, এমন বয়ান তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, এটা খুব লজ্জার ব্যাপার। এই তথ্যগুলো নিয়ে ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করতে হবে। কেননা, গৌরবমণ্ডিত ইতিহাস সংরক্ষণ না করা হলে জাতি আরও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। স্মারক বক্তা ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। তাঁর বর্ক্তৃতার শিরোণাম ছিল ‘তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরি : ঐতিহাসিকতা ও রাজনৈতিকতা।’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান।