রিতু মনির অনবদ্য ইনিংসে ভর করে মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। লাহোরে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ২৩৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪৮.৪ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে টাইগ্রেসরা। শেষ পর্যন্ত ৬৭ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচসেরা পারফরম্যান্স উপহার দেন অলরাউন্ডার রিতু মনি।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩৫ রান তোলে আয়ারল্যান্ড। লরা ডেলানি সর্বোচ্চ ৬৩ ও পেন্ডারগেস্ট করেন ৪১ রান। বাংলাদেশের হয়ে রাবেয়া খান ৩টি এবং ফাহিমা খাতুন ২টি উইকেট শিকার করেন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো না হলেও ধীরে ধীরে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ৫১ রানের কার্যকর ইনিংস খেলেন। ফাহিমা খাতুন যোগ করেন ২৪ রান। তবে মিডল ও লোয়ার অর্ডারে দারুণ দায়িত্বশীল ব্যাটিং করেন রিতু মনি। সপ্তম, অষ্টম ও নবম উইকেটে গড়া জুটিতে ম্যাচ বাংলাদেশের পক্ষে নিয়ে যান তিনি।

ষষ্ঠ উইকেটে ফাহিমার সঙ্গে ৪৫, সপ্তম উইকেটে জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে ৪০ এবং নবম উইকেটে নাহিদা আক্তারের সঙ্গে ৫৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন রিতু। নাহিদা অপরাজিত থাকেন ১৮ রানে। আয়ারল্যান্ডের হয়ে পেন্ডারগেস্ট ও আর্লিন কেলি ২টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পেয়েছেন মাগুইরে, ক্যানিং ও ডেলানি।

এর আগে আয়ারল্যান্ডের ইনিংসে ওপেনার সারা মাত্র ৪ রান করে রানআউট হন। এরপর লুইস ও অ্যামি হান্টার ৫০ রানের জুটি গড়েন। লুইস করেন ২৪ রান, হান্টার ফেরেন ৩৩ রানে। পেন্ডারগেস্ট ও ডেলানি গড়েন ৭২ রানের কার্যকর জুটি। শেষ দিকে ছোট ছোট অবদানে স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ করে আইরিশরা।

বাছাইপর্বে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় জয়। এর আগে থাইল্যান্ডকে ১৭৮ রানে হারিয়েছিল জ্যোতিরা, যা মেয়েদের ওয়ানডে ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়। এই জয়ে পয়েন্ট তালিকায় নিজেদের অবস্থান আরও মজবুত করল লাল-সবুজের দল।

ভারতে আসন্ন নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মূল বিশ্বকাপে জায়গা পেতে হলে বাছাইয়ের শীর্ষ দুইয়ে থাকতে হবে। ছয় দলের এই পর্বে রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে প্রত্যেক দল খেলবে একে অপরের বিপক্ষে। বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ১৫ এপ্রিল স্কটল্যান্ড, ১৭ এপ্রিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ১৯ এপ্রিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। প্রতিটি ম্যাচই তাই এখন সমান গুরুত্বপূর্ণ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ