মাদারীপুরে ধারাবাহিক সংষর্ঘস্থলে ১৪৪ ধারা জারি
Published: 14th, April 2025 GMT
মাদারীপুরের রাজৈরে ধারাবাহিকভাবে চলে আসা সংঘর্ষস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে লিখিত আদেশনামার মাধ্যমে এ আইন জারি করেন রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহফুজুল হক।
ইউএনও’র স্বাক্ষরিত আদেশ নামায় বলা হয়, “প্রায় সাতদিন যাবত রাজৈর বাজার সংলগ্ন পশ্চিম রাজৈর ও বদরপাশা গ্রামের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিয়মিত বিরতিতে দেশীয় অস্ত্রসহ মারামারি, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও অস্ত্র প্রদর্শনী বিভিন্ন দাঙ্গা হাঙ্গামা চলছে। এ সকল আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টকারী এবং শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রয়োজনে ফৌজদারী কার্যবিধি মতে ১৪৪ ধারা জারি করা হলো। এ মোতাবেক রাজৈর বাজার, পশ্চিম রাজৈর, বদরপাশা এবং গোপালগঞ্জ এলাকায় এক বা একাধিক ব্যক্তি চলাফেরা, সভা-সমাবেশ, শোভাযাত্রা, মাইকের ব্যবহার, লাঠিসোঁটা বা যেকোন প্রকারের আগ্নেয়াস্ত্র বহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।”
“সোমবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর ১টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা এ আদেশ বহাল থাকবে। দায়িত্ব পালনরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জরুরি সেবা প্রদানে নিয়োজিতদের ক্ষেত্রে এ আদেশ শিথিল থাকবে।”
আরো পড়ুন:
টাঙ্গাইলে ঈদের মাঠে সংঘর্ষ এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি
নান্দাইলে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ১৪৪ ধারা জারি
ইউএনও মাহফুজুল হক বলেন, “যেকোন সময় আবার দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এরপরও যদি কেউ আইন লঙ্ঘন করার চেষ্টা করেন, তাহলে ১৪৪ ধারা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এলাকাবাসী জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে দুইদিন যাবত বদরপাশা ও পশ্চিম রাজৈর দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। কয়েক দফা সংঘর্ষে দুইপক্ষের অন্তত শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পুলিশ।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে চতুর্থ ধাপের সংঘর্ষ শেষে রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মিটিং করছিল পশ্চিম রাজৈর পক্ষ নেওয়া মজুমদার কান্দি গ্রামের লোকজন। খবর পেয়ে রাজৈর থানার পুলিশ এসে লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায় তাদের। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের দুইটি গাড়ি ইট নিয়ে ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। এ ঘটনায় রাজৈর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তফা ও পুলিশের গাড়ির ড্রাইভার শাহাবুদ্দিনের মাথা ফেটে আহত হন। পরে তাদের রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এর আগে, একইদিন দুপুরে বদরপাশা ও পশ্চিম রাজৈর গ্রামের দুই পক্ষের লোকজনকে ডেকে মিমাংসার জন্য রাজি করান রাজৈর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ওহাব আলী মিয়াসহ স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতা। সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে শালিস মীমাংসার জন্য বসার কথা ছিল। এরই মধ্যে গতকাল সন্ধ্যায় উস্কানিমূলক কথাবার্তায় উত্তেজিত হয়ে আবারো সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এসময় বদরপাশা গ্রামের লোকজন কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। ১২টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করে বদরপাশা গ্রামের বিক্ষুব্ধরা। একপর্যায়ে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। ঘটনাস্থালে র্যাব মোতায়েন করা হয়। এ ঘটনায় মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম, রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অর্ধশত লোকজন আহত হন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমের পায়ে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে অপারেশন করা হয়।
ঈদ পরবর্তী গত ২ এপ্রিল রাজৈর উপজেলার পশ্চিম রাজৈর গ্রামের ফুচকা ব্রিজ এলাকায় বাজি ফোটান বদরপাশা গ্রামের আতিয়ার আকনের ছেলে জুনায়েদ আকন ও তার বন্ধুরা। এতে বাধা দেন একই গ্রামের মোয়াজ্জেম খানের ছেলে জোবায়ের খান ও তার বন্ধুরা। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
এরই জেরে গত ৩ এপ্রিল সকালে রাজৈর বেপারিপাড়া মোড়ে জোবায়েরকে একা পেয়ে পিটিয়ে তার ডান পা ভেঙে দেন জুনায়েদ ও তার লোকজন। পরে আহত জোবায়েরের বড় ভাই অনিক খান (৩১) বাদী হয়ে জুনায়েদসহ ৬ জনের নাম উলেখ ও নাম না জানা আরো ৪-৫ জনকে আসামি করে রাজৈর থানায় মামলা করেন।
শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতে পশ্চিম রাজৈর ও বদরপাশার লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী চলে সংঘর্ষ। ওই ঘটনায় দুই ওসি ও অন্তত ১০ পুলিশ সদস্যসহ ২৫ জন আহত হন।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১৪৪ ধ র স ঘর ষ র জ র উপজ ল র ল কজন ১৪৪ ধ র স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
কুড়িগ্রামে সারের দাবিতে সড়কে কৃষকদের বিক্ষোভ
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় সারের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন কৃষকরা। এসময় তারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করেন।
রবিাবর (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ২টার দিকে উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দর সড়ক অবরোধ করেন কৃষকরা। একপর্যায়ে তারা ভূরুঙ্গামারী উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সারোয়ার তৌহিদকে অবরুদ্ধ করেন। বিকেল ৫টার দিকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপ জন মিত্রের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন কৃষকরা।
আরো পড়ুন:
বাগেরহাটে হরতাল কর্মসূচিতে পরিবর্তন
ফরিদপুরে মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ, ভোগান্তি চরমে
আন্দোলনরত কৃষকরা জানান, তীব্র সার সংকট দেখা দিয়েছে। রোপা আমন ধানে সার দিতে না পেরে ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা।
ভুরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল হেলাল মাহমুদ জানান, কৃষকরা বিকেল ৫টার দিকে অবরোধ তুলে নিলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ইউএনও দীপ জন মিত্র জানান, কৃষকরা কেন সার পাচ্ছেন না, সেটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/বাদশাহ/মাসুদ