দিনাজপুরের হাকিমপুরে উপজেলার খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ছদরুল শামীম স্বপনের বিরুদ্ধে দুস্থদের ভিজিএফ’র চাল বিতরণে অনিয়ম ও আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এর কয়েকজন ইউপি সদস্য জড়িত আছেন বলেও অভিযোগ। প্রায় ১৮০০ জনের নামে-বেনামে ভূয়া তালিকা করে ১৮ মেট্রিকটন চাল আত্মসাত করেন তারা। এমন কি মৃত ব্যক্তিরও নাম রয়েছে ওই তালিকায়। 

অভিযোগ থেকে জানা যায়, এই পবিত্র ঈদুল ফিতরে খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়নের ৪ হাজার ১৬৯ জনের ভিজিএফ চালের তালিকা করেন ওই প্যানেল চেয়ারম্যান। এ তালিকায় একজনের নাম একাধিকবার তোলেন। এক ওয়ার্ডের তালিকাভুক্তদের অন্য ওয়ার্ডের তালিকায়ও নাম ওঠান। এমনকি ওই তালিকায় মৃত ব্যক্তিরও নাম রয়েছে। এভাবে চাল আত্মসাত প্রক্রিয়ায় প্যানেল চেয়ারম্যান স্বপনের সঙ্গে ৩ ইউপি সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এরা হলেন- ১নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শাহানুর রহমান, ৭নং ইউপি সদস্য আবুল কাশেম ও ৮নং ওয়ার্ড সদস্য জাহাঙ্গীর আলম। 

এ ঘটনায় প্রায় ৩০০ জন বঞ্চিত সুবিধাভোগী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ইউনিয়নের মংলা বাজারের বাসিন্দা তাহাজ্জত আলী বলেন, “আমার প্রতিবেশী মৃত রবিউল ইসলামের নাম ভিজিএফ তালিকায় রয়েছে। কিন্তু  তিনি গত ৩ বছর আগে মারা গেছেন। এক বছর পূর্বে তার স্ত্রীর অন্যত্র বিয়েও হয়েছে। চেয়ারম্যান চাল আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ভিজিএফের তালিকায় এই মৃত ব্যক্তির নাম তালিকাভুক্ত করেছেন।”  

অভিযোগকারী মাধবপাড়া গ্রামের কাশেম আলীর স্ত্রী বেগম জানান, ভিজিএফএর তালিকায় তার নামের সিরিয়াল ২৩৭৬। অথচ কয়েকবার চেয়ারম্যানের নিকট ভিজিএফ চালের জন্য গেলে তার নাম তালিকায় নেই বলে ফিরিয়ে দেন। 

তিনি জানান, শুধু তাকে নয় এরকম আরও অনেক মেয়ে মানুষকে চাল না দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন। 

অভিযোগকারী ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আমিনুল ইসলাম জানান, তার মাস্টার রোলের সিরিয়াল নম্বর ২১০। তালিকায় তার নাম নেই বলে তাকেও ওই দিন চাল না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “আমরা গরীব মানুষ ঈদের আগে ভিজিএফের চালের অপেক্ষায় থাকি। সেই চাল যদি চেয়ারম্যান  খেয়ে ফেলেন তাহলে তো গরীবের তো আর বাঁচার পথ নাই। সরকারের উচিত গরীবের চাল মেরে খাওয়া চেয়ারম্যানকে শাস্তি দেওয়া।” 

লিখিত অভিযোগকারী সাইমুমুর রহমান ডলার জানান, ১নং ওয়ার্ডের ৮৬ জন , ২নং ওয়ার্ডের ৭৫ জন, ৩নং ওয়ার্ডের ৬৩ জন, ৪নং ওয়ার্ডের ৫৬ জন,  ৫নং ওয়ার্ডের ১১১ জন, ৬নং ওয়ার্ডের ১৩১ জন, ৭নং ওয়ার্ডে ৯২ জন, ৮নং ওয়ার্ডের ১০৯ জন ও ৯নং ওয়ার্ডের ৮৩ জনের মোট ৮০৬ জনের নাম অন্য ওয়ার্ডের মাস্টার সিরিয়ালে একাধিকবার ব্যবহার করা হয়েছে। চেয়ারম্যান ও তার লোকেরা এসব নামের বিপরীতে বরদ্দকৃত চাল আত্মসাৎ করেছেন। 

এ ব্যাপারে প্যানেল চেয়ারম্যান ছদরুল শামীম স্বপন বলেন, “ভিজিএফ এর চাল বিতরণে সময় ট্যাগ অফিসারসহ সব ওয়ার্ডের মেম্বাররা উপস্থিত ছিলেন। আমি সব চাল সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করেছি।”

এবিষয়ে হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত রায় বলেন, “খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়ন প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিএফ’র চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। পিআইওকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/মোসলেম/টিপু 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ জ এফ র চ ল ম ধবপ ড় সদস য ব তরণ

এছাড়াও পড়ুন:

৪১১ রানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৯ রানে হারল জিম্বাবুয়ে

ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে মাত্র ১২৭ রানে অলআউট হয়েছিল জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আরও কম, ১২৫ রানে। কিন্তু রোববার (০২ নভেম্বর) তারা চোখে চোখ রেখে লড়াই করল আফগানিস্তানের বিপক্ষে।

আগে ব্যাট করে ৩ উইকেটে আফগানদের করা ২১০ রানের জবাবে জিম্বাবুয়ে ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২০১ রান করে হার মানে মাত্র ৯ রানে। দুই ইনিংসে রান হয়েছে মোট ৪১১টি। যা আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ।

আরো পড়ুন:

কেন বিপিএল থেকে বাদ পড়ল চিটাগং কিংস

ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত

স্বাগতিকরা থেমে থেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও ব্রিয়ান বেনেট, সিকান্দার রাজা, রায়ান বার্ল ও তাশিনগা মুসেকিওয়ার ব্যাটে লড়াই করে শেষ বল পর্যন্ত। বেনেট ৩ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৪৭ রান। অধিনায়ক রাজা ৭টি চার ও ২ ছক্কায় করেন ৫১ রান। বার্ল ১৫ বলে ৫ ছক্কায় খেলেন ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংস। আর মুসেকিওয়া ২ চার ও ১ ছক্কায় করেন ২৮ রান।

বল হাতে আফগানিস্তানের আব্দুল্লাহ আহমদজাই ৪ ওভারে ৪২ রানে ৩টি উইকেট নেন। ফজল হক ফারুকি ৪ ওভারে ২৯ রানে ২টি ও ফরিদ আহমদ ৩ ওভারে ৩৮ রানে নেন ২টি উইকেট।

তার আগে উদ্বোধনী জুটিতে আফগানিস্তানের রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান ১৫.৩ ওভারে ১৫৯ রানের জুটি গড়েন। এই রানে গুরবাজ আউট হন ৪৮ বলে ৮টি চার ও ৫ ছক্কায় ৯২ রানের ইনিংস খেলে। মাত্র ৮ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন তিনি। ১৬৩ রানের মাথায় ইব্রাহিম আউট হন ৭টি চারে ৬০ রান করে। এরপর সেদিকুল্লাহ অটল ১৫ বলে ২টি চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৩৫ রানের ইনিংস খেলে দলীয় সংগ্রহকে ২১০ পর্যন্ত নিয়ে যান।

বল হাতে জিম্বাবুয়ের ব্রাড ইভান্স ৪ ওভারে ৩৩ রানে ২টি উইকেট নেন। অপর উইকেটটি নেন রিচার্ড এনগ্রাভা।

৯২ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হন গুরবাজ। আর মোট ১৬৯ রান করে সিরিজ সেরা হন ইব্রাহিম জাদরান।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ