চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার সূচিপাড়া জনতা ব্যাংকের লোন অফিসার রাকিব হাসানের (২৮) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে সূচিপাড়া এলাকার একটি ভবনের পঞ্চম তলায় নিজ কক্ষ থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের ধারণা, রাকিব গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার পাচুখারকান্দি গ্রামের সিরাজ সরদারের ছেলে।

এদিকে আগের দিন সোমবার ওই ব্যাংক থেকে গ্রাহকের ৮৪ লাখ আত্মসাতের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো.

জাবেদ হোসাইনকে গ্রেপ্তার করেছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেন ওই ব্যাংক ম্যানেজার কার্তিক চন্দ্র ঘোষ ও শাহরাস্তি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার।

পুলিশ ও ব্যাংক সূত্র জানায়, গ্রাহকের ৮৪ লাখ ৬৭ হাজার ৮১৪ টাকার গরমিল দেখতে পেয়ে ব্যাংক ম্যানেজার ১৩ এপ্রিল শাহরাস্তি থানায় জাবেদ হোসাইনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মো. জাবেদ হোসাইন গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত তিনজন গ্রাহকের ৮৪ লাখ ৬৭ হাজার ৮১৪ টাকা আত্মসাৎ করেন। এসব টাকা লক্ষ্মীপুর, ঢাকা, গোপালগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও যশোরে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে পাঠান। বিষয়টি নজরে আসার পর ব্যাংক ম্যানেজার কার্তিক চন্দ্র ঘোষ রোববার শাহরাস্তি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। তবে লোন অফিসার রাকিব হাসানের বিরুদ্ধে তিনি কোনো অভিযোগ করেননি।

ওসি আবুল বাসার বলেন, ‘রাকিব হাসানের মৃত্যুর পেছনে ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের ঘটনার কোনো যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি অর্থ আত্মসাতের বিষয়টিও আমরা তদন্ত করছি।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

যমুনা সেতুর যানজট এড়াতে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে যানবাহনের চাপ

ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরতি পথে যমুনা সেতু-সংলগ্ন মহাসড়কে তীব্র যানজট। তাই অনেকে পাবনার কাজীরহাট ফেরিঘাট দিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন। কাজীরহাট-আরিচা ফেরিঘাটে ভোগান্তি ছাড়াই যানবাহন পারাপার হচ্ছে। আগের ৪টি ফেরির সঙ্গে আরও ২টি যুক্ত হওয়ায় এই নৌপথে মোট ৬টি ফেরি চলাচল করছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) ও বাস কাউন্টারগুলোর সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে যমুনা সেতু-সংলগ্ন সড়কে যানজট শুরু হয়। শুক্র ও গতকাল শনিবার যানজট তীব্রতর হয়। এর মধ্যে শনিবারের যানজটে পাবনা-ঢাকা পথে যাতায়াতকারী অনেক বাস আটকে পড়ে। এতে পাবনা, বেড়াসহ বিভিন্ন বাস কাউন্টারে ঢাকাগামী বাসের সংকট দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকাগামী বাস ও ব্যক্তিগত ছোট গাড়িগুলো যমুনা সেতুর যানজট এড়াতে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথের ফেরি পারাপার বেছে নেয়। এতে আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত কাজীরহাট ফেরিঘাটে ঢাকাগামী বিভিন্ন যানবাহনের চাপ আছে।

বিআইডব্লিউটিসির কাজীরহাট ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘আগে কাজীরহাট-আরিচা নৌপথে ৪টি ফেরি চলাচল করত। ঈদ উপলক্ষে এখন আরও ২টি ফেরি বাড়িয়ে মোট ৬টি ফেরি করা হয়েছে। এগুলো হলো ২টি রো রো ফেরি শাহ আলী ও বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান এবং ৪টি সেমি রো রো ফেরি বাইগার, গৌরী, চিত্রা ও ধানসিঁড়ি। এই ৬টি ফেরি দিয়ে নির্বিঘ্নে যানবাহনের চাপ সামলানো যাচ্ছে। বাসসহ যানবাহনগুলোকে ফেরিঘাটে বেশি দেরি করতে হচ্ছে না।’

কাজীরহাট ফেরিঘাট হয়ে ঢাকামুখী আলহামরা পরিবহনের যাত্রী আবু হানিফ বলেন, ফেরিতে ওঠানামা মিলিয়ে আড়াই ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে। আর আরিচা থেকে ঢাকা পর্যন্ত তেমন যানজট ছিল না। খুব ভালোভাবে ঢাকা পৌঁছাতে পেরেছেন। অথচ আরও দুই ঘণ্টা আগে রওনা দিয়েও তাঁর পরিচিত একটি পরিবারকে যমুনা সেতু-সংলগ্ন সড়কে ৫-৬ ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়।

বিআইডব্লিউটিসির কাজীরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। তবে সবচেয়ে বেশি চাপ ছিল শনিবার। আমাদের বেশ বেগ পোহাতে হলেও যানবাহনগুলো ভালোভাবে পার করে দিয়েছি। শনিবার আমাদের এই ঘাট হয়ে ফেরিতে ১০১টি বাস, ৪০১টি ছোট গাড়ি ও ৮০টি ট্রাক পার হয়েছে। আর আজ রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৫টি বাস, ১৬টি ট্রাক, ৪২টি ছোট গাড়ি ও ২০০টি মোটরসাইকেল পার হয়েছে।’

বেড়া ও ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী আলহামরা পরিবহনের বেড়া শাখার ব্যবস্থাপক বরকত আলী বলেন, ‘যমুনা সেতুর যানজটে আমাদের কয়েকটি বাস এখনো আটকে আছে। এতে নির্ধারিত সময়ে শুধু আমাদের বাসই নয়, অন্য কোম্পানির বাসগুলোও ঢাকার উদ্দেশে ছাড়তে পারছে না। আর কোনো বাস ঢাকা থেকে বেড়া এসে পৌঁছানোর পর সেই বাস এখন থেকে আমরা কাজীরহাট ফেরিঘাট হয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে দিচ্ছি। বতর্মান অবস্থায় এই পথে যাতায়াতে যাত্রীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ