মুড়ি ভর্তা বিক্রি করে আয় অর্ধ লাখ টাকা
Published: 15th, April 2025 GMT
ছাত্র জীবন থেকে শুরু করে মাদারীপুরে দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বিভিন্ন মসজিদে ইমামতি করেছেন ক্বারী মুহাম্মদ সুলতান। বিয়ে করার পরে সন্তানের জন্ম এবং এরপর সংসারে নেমে আসে অভাব। পরে গুরুজনের পরামর্শে কুমিল্লা শহরের কোটের মোড়ে ভ্রাম্যমাণ দোকানে পুরী, সিঙ্গারা, আলুর চপ, বেগুনি, পিঁয়াজু, ছোলা দিয়ে মুড়ি ভর্তা বিক্রি করে চলছে তার সংসার। এতে প্রতিদিন তার বিক্রি হয় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। খরচ বাদে প্রতিমাসে আয় করেন অর্ধ লাখ টাকা।
মাদারীপুর পৌর শহরের পুরাতন কোটের মোড়ে ভ্রাম্যমাণ দোকান করেন বরগুনা জেলার পাথরঘাটা এলাকায় হাফেজ ক্বারী মুহাম্মদ সুলতান। স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তার সংসার। লেখাপড়া শেষে ১৯৯০ সালে জীবনের তাগিদে চলে আসেন মাদারীপুরে। সন্তাননেরা বড় হওয়ায় মসজিদ থেকে যতটুকু সম্মানী পেতেন তাতে সংসার চলা বড়ই দুষ্কর। পরে ২০১২ সালে ৩ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ভ্রাম্যমাণ মুড়ির দোকান দেন। পরে সেখানে ভালো বিক্রি হওয়ায় সিঙ্গারা, পিয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি ও মুড়ি ভর্তা বিক্রি শুরু করেন। পর থেকে তার আর তাকে পিছনে তাকাতে হয়নি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতিতে যেখানে প্রত্যেকটা পণ্যের দাম বাড়লেও এখনো তিনি ৫ টাকা হারে এ সকল খাবার বিক্রি করে যাচ্ছেন। এ সকল খাবার বিক্রি করে যে টাকা লাভ হয়, তা দিয়ে সংসার পরিচালনা করেন। জমানো টাকা দিয়ে হজ্ব করেছেন তিনি ও তার স্ত্রী।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দুপুর ৩টা থেকে শুরু করে রাত ১০টা পর্যন্ত তার এই খাবার বিক্রি চলে। এই খাবারের জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ প্রতিনিয়তই ভিড় করে। কেউ রিকশায় বসে, কেউ পাশে দাঁড়িয়ে খান। কেউ আবার বাড়ির জন্য নিয়ে যান প্যাকেটে করে।
স্থানীয়রা জানান, এখানকার যুগে ভেজাল খাদ্যের অভাব নেই। কিন্তু এই হুজুর যা বিক্রি করেন এগুলো ভালো মানের খাবার। তার খাবারে ভেজাল নেই। প্রতিদিনের খাবার প্রতিদিনই শেষ হয়ে যায়। অনেক সুস্বাদু খাবার হয়।
মুড়ি ভর্তা খেতে আসা শরীয়তপুরের রুবেল আহমেদ জানান, তিনি কাজ শেষে মাঝে মাঝেই এই হুজুরের দোকানে মুড়ি ভর্তা খেতে আসেন। তার এই মুড়ি ভর্তা অনেক সুস্বাদু হয়। এ রকম ভালো করে কেউ বানাতে পারে না।
মুড়ি খেতে আসা আসাদ ও সাব্বির জানান, এই হুজুর অনেক সুন্দর মুড়ি বানান। তার পিঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, পুরি সুস্বাদু হয়।
বিক্রেতা ক্বারী মুহাম্মদ সুলতান জানান, ইমামতি করে যা পেতেন, এতে সংসার চলা দুষ্কর হয়ে পড়েছিল। কোটের মোড়ে ভ্রাম্যমাণ দোকান বসিয়ে পুরি, সিঙ্গারা বিক্রি করে ভালো লাভ হচ্ছে। এ টাকা দিয়ে মেয়েদের হাফেজ এবং ক্বারী বানিয়েছেন। ছেলেদের মাওলানা বানাতে পারেছেন। মহান আল্লাহতালার কাছে শুকরিয়া আদায় করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘‘আল্লাহ তাআলার রহমতে এ ব্যবসায় আমার সফলতা এসেছে। আমার এই সফলতা দেখে অনেকে কিছু করার জন্য আগ্রহী হচ্ছেন।’’
ঢাকা/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নিজেদের সফলতার গল্প শোনালেন তরুণ ফ্রিল্যান্সাররা
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা তরুণদের অনেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ শিখে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন। ফ্রিল্যান্স কাজের সঙ্গে যুক্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তের তরুণদের সাফল্যের গল্প তুলে ধরতে গতকাল রোববার ‘ফ্রিল্যান্সিং ফ্যাক্টরি’ নামের একটি বিশেষ সেশনের আয়োজন করেছিল গ্রামীণফোন একাডেমি। রাজধানীর বসুন্ধরায় গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রধান কার্যালয় ‘জিপি হাউস’-এ অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে বিভিন্ন জেলার শতাধিক তরুণ ফ্রিল্যান্সার নিজেদের অভিজ্ঞতা ও সাফল্যের গল্প তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, ‘তরুণেরা ফ্রিল্যান্স কাজের মাধ্যমে নিজেদের ক্যারিয়ার তৈরি করছেন। উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন ফ্রিল্যান্সাররা। গ্রামীণফোন একাডেমির মাধ্যমে আমরা এই তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছি এবং তাঁদের বৈশ্বিক সুযোগের সঙ্গে সংযুক্ত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান।
আরও পড়ুনফ্রিল্যান্সারদের জন্য নতুন সুবিধা চালু করল ফাইভার২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫অনুষ্ঠানে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাসহ ক্লায়েন্টদের সঙ্গে সফলভাবে যোগাযোগের কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে তরুণ ফ্রিল্যান্সাররা নিজেদের ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরার পাশাপাশি নিজেদের দক্ষতা ও আয় বাড়ানোর কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানজিলা আক্তার বলেন, ‘আমি পড়ালেখার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করেছি। এরপর ফ্রিল্যান্সিং করার অর্থ দিয়ে ল্যাপটপ কিনেছি।’
আরও পড়ুনশাশুড়ির কিনে দেওয়া ল্যাপটপে ফ্রিল্যান্সিং, পপির মাসিক আয় ৩ লাখ টাকা২৯ নভেম্বর ২০২৪গ্রামীণফোন একাডেমি জানিয়েছে, এ ধরনের অনুষ্ঠানের নিয়মিত আয়োজন করা হবে, যাতে বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তের তরুণেরা অনলাইন কাজের মাধ্যমে নিজেদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে পারেন। গ্রামীণফোন একাডেমি থেকে ফ্রিল্যান্সিংসহ বিভিন্ন বিষয়ে হাতে–কলমে প্রশিক্ষণের সুযোগও পাওয়া যাবে।