খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৩৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদ, মামলা প্রত্যাহার ও হামলাকারীদের বিচার দাবি করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীরা। 

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সংগঠন দুটির পক্ষ থেকে পৃথক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

এর আগে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল- যুবদল এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলায় প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। তদন্ত কমিটি এ ঘটনার প্রতিবেদন রবিবার (১৩ এপ্রিল) জমা দেয়। সোমবার রাতে সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আরো পড়ুন:

পরিবেশকে স্বাস্থ্যকর রাখার বিষয়টি মানব সভ্যতার সঙ্গে সম্পর্কিত: ঢাবি উপাচার্য

ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা

এ সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সালমান সিদ্দিকী এবং সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরব ভূমিকার কারণে শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে হামলার শিকার হয়েছিল। হামলায় জড়িত বহিরাগত সন্ত্রাসী এবং ছাত্রদল-যুবদল নেতাদের শাস্তির আওতায় না এনে উল্টো আন্দোলনকারী ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পাস আগামী ২ মে পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এ ঘটনার মধ্য দিয়ে উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হামলাকারী সন্ত্রাসীদেরই পক্ষাবলম্বন করলেন। প্রশাসনের এহেন অন্যায় আচরণ সারাদেশের শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রচণ্ড ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। প্রশাসনের এ ধরনের অন্যায় সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আরো তীব্র হওয়ার পরিবেশ তৈরি করবে এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে ভয়ের সঞ্চার করবে।

তারা বলেন, এ ধরনের ফ্যাসিবাদী সিদ্ধান্ত আমরা দেখেছি বিগত আওয়ামী শাসনামলে। তদন্তের অজুহাতে কোনোভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা যাবে না। বরং শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন এগিয়ে নিতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

অপর বিবৃতিতে ঢাবি শাখা ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মুহাম্মাদ আবু বকর ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মোহাম্মাদ আলাউদ্দিন বলেন, কুয়েটে শিক্ষার্থীদের উপর একটি সন্ত্রাসী সংগঠন ক্যাম্পাস বহির্ভূত কর্মীদের মাধ্যমে একটি পৈশাচিক হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বরং সোমবার (১৪ এপ্রিল) কুয়েট কর্তৃপক্ষ কিছু নির্দোষ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ঘোষণা করে। যা একটি কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। 

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সন্ত্রাসী সংগঠনের বহিরাগত কর্মীদের হামলা এবং পরবর্তীতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নাম মামলা দিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা কুয়েট উপাচার্যের ব্যর্থতার পরিচয়। অবিলম্বে কুয়েটের নির্দোষ আহত শিক্ষার্থীদের উপর দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং দ্রুত হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি অতিসত্বর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে হবে।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ