ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় একটি যাত্রীবাহী লেগুনা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে থাকা সড়কের পাশের খোলা নালায় (ড্রেন) পড়ে দুজন পোশাকশ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত তিনজনকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আবদুল্লাহপুর থেকে বাইপাইল সড়কের আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত দুজন হলেন বদিউল আলম গাজী (৩৫) ও হৃদয় মিয়া (৩৫)। বদিউল আশুলিয়ায় এনভয় গ্রুপের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় এবং হৃদয় ইউনিমাস স্পোর্টসওয়্যার লিমিটেডে কাজ করতেন। মরদেহ আশুলিয়ার বেসরকারি নারী ও শিশু হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আহত যাত্রী বিলকিস (৩২), সুব্রত পাল (৩৩) এবং নুরুল ইসলামকে একই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আশুলিয়া থানা–পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে আশুলিয়ার বিভিন্ন কারখানা ওভারটাইম (অতিরিক্ত কাজ) শেষে ছুটি দেওয়া হয়। কারখানায় কাজ শেষে লেগুনায় করে গন্তব্যে ফিরছিলেন বদিউল আলম ও হৃদয় মিয়া। এ ছাড়া ওই লেগুনায় আরও বেশ কয়েকজন যাত্রী ছিলেন। লেগুনাটি আবদুল্লাহপুর থেকে বাইপাইল সড়কের আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় পৌঁছালে পানিতে তলিয়ে থাকা সড়কের পাশের খোলা নালায় পড়ে যায়। পথচারীরা কয়েকজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। খবর পেয়ে জিরাব ফায়ার সার্ভিস ও আশুলিয়া থানা পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান।

আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালের কাস্টমার সার্ভিস অফিসার মো.

পারভেজ প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পর হাসপাতালে বদিউল আলম ও হৃদয় মিয়াকে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া আহত তিনজনকে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুব্রত পাল বলেন, জামগড়া এলাকায় লেগুনাটি জ্যামে (যানজটে) পড়ে। চালক তখন বাঁ দিক দিয়ে ঘুরে অন্য সড়ক দিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। তিনি তখন তাকে বাঁ দিক দিয়ে যেতে নিষেধ করেন। করেছিলাম; কিন্তু চালক রাগ করে তাকে চুপ করে বসে থাকতে বলেন। এরপর ওই পথে নিতে গেলে পরে সড়কের পাশে গর্তের (ড্রেন) পানিতে পুরা গাড়ি ডুবে গেছে। গাড়িতে ৯ জন যাত্রী ছিলেন। সামনে ড্রাইভারের ওখানে সম্ভবত আরও তিনজন ছিলেন; কোনো শিশু ছিল না।

জিরাব ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবু সায়েম প্রথম আলোকে বলেন, ওই স্থানে নালা প্রায় ১৫ ফুট গভীর। পানিতে তলিয়ে থাকা ওই নালায় যাত্রীবাহী লেগুনাটি পড়ে যায়। পথচারীরা যাত্রীদের পানি থেকে তুলেছেন।

আবু সায়েম বলেন, সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটের দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করেন। রশি বেঁধে লেগুনাটি ড্রেন থেকে তোলা হয়। কেউ কেউ বলছিলেন, লেগুনার যাত্রী একটি শিশু নিখোঁজ আছে। তবে পানিতে নেমে খোঁজ করে কিছু পাওয়া যায়নি।

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ নিতে চান বলে জানিয়েছেন। তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ আইনিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম

উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।

এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে  ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকা/রায়হান/রফিক 

সম্পর্কিত নিবন্ধ