দিনাজপুরের যে বাজারে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই কোটি টাকার টমেটো বিক্রি হয়
Published: 17th, April 2025 GMT
ভোরের আলো ফোটার আগেই শুরু হয় দিনাজপুরের টমেটোর বাজারটি। প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কের উভয় পাশে ভ্যানগাড়ি, ট্রাক, মোটরসাইকেল, পিকআপ ভ্যান আর মানুষে মানুষে ঠাসাঠাসি থাকে বাজার এলাকা। খানিকটা দূর থেকেই কানে আসে যানবাহনের হর্ন আর দরদামের হাঁকডাক। সকাল ৯টার মধ্যে দর–কষাকষি ও কেনাবেচা শেষ। এরপর বিকেল পর্যন্ত চলে লোড-আনলোড। ট্রাকে করে টমেটো যায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট, নারায়গঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। দৈনিক গড়ে দেড় থেকে দুই কোটি টাকার টমেটো কেনাবেচা হয় দিনাজপুরের গাবুড়া বাজারে।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, খুব বেশি আগের কথা নয়। নব্বইয়ের দশকে সদর উপজেলার গর্ভেশ্বরী নদীর তীরে গাবুড়া এলাকায় টমেটোর বাজারটি শুরু হয়। এর মধ্যে দেশের প্রায় সব জেলার সবজি ব্যবসায়ী, বিশেষ করে টমেটো ব্যবসায়ীর কাছে পরিচিতি পেয়েছে বাজারটি। প্রতিবছর মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয়ে চলে জুনের শেষ পর্যন্ত। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ জন পাইকার আসেন টমেটো কিনতে। মৌসুমের পুরো সময় তাঁরা দিনাজপুরেই থেকে যান। এই সময়ে অন্তত ৮ থেকে ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয় এখানে। যাদের মধ্যে বড় একটা অংশ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী।
গত মঙ্গলবার বাজার ঘুরে দেখা যায়, রাস্তার দুই পাশে সারি সারি দাঁড়ানো ভ্যানগাড়ি। প্রতি গাড়িতে দুই থেকে চারটি বড় আকারের ঝুড়িতে ভর্তি টমেটো। নামেও রয়েছে ভিন্নতা। বিপুল প্লাস, প্রভেনসিভ, রোমা ভিএফ, মিন্টু সুপার, আনসাল, রানী ও শক্তি প্লাস। কোনোটি গোলাকার, কোনোটি লম্বাকৃতির। নেড়েচেড়ে দেখছেন পাইকার। দামে মিললে নেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট পাইকারের আড়তঘরে। সেখানে ক্যারেটে (প্লাস্টিকের ঝুড়ি) ভরানো হচ্ছে। পাশেই দাঁড় করানো ট্রাকে ক্যারেটগুলো তুলছেন ট্রাকশ্রমিকেরা।
প্রতিবছর মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয়ে বাজারটি চলে জুনের শেষ পর্যন্ত.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।
মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।
ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।
তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।
এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।