চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) প্রধান ফটকের সামনে অবস্থিত এপিক হেলথ কেয়ারের বিরুদ্ধে এক রোগীকে ভুল রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নগরের জামালখান এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী মো. সোহেল।

তিনি জানান, গত ৭ এপ্রিল এপিকে টিএসএইচ হরমোন পরীক্ষার জন্য রক্ত দেন। রাতেই রিপোর্টে ফলাফল আসে ১১.

৫১, যা দেখে চিকিৎসকসহ তিনি নিজেও অবাক হন। চিকিৎসকের পরামর্শে প্রবর্তক মোড়ের শেভরনে একই পরীক্ষা করলে রিপোর্ট আসে ৫.৮০। এরপর চিকিৎসক এপিকের রিপোর্টকে ‘অসম্ভব’ উল্লেখ করে শেভরনের রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসা দেন।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসে মো. সোহেল লেখেন, “এপিককে বিশ্বাস করে কতজন ভুল চিকিৎসা নিচ্ছেন! এই শহরের হাজার হাজার রোগী ভুল রিপোর্টের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি দরকার।”

ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর এপিক হেলথ কেয়ারের একাধিক কর্মকর্তা ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করে দুঃখপ্রকাশ করেন এবং পুনরায় ফ্রিতে পরীক্ষা করার প্রস্তাব দেন, তবে মো. সোহেল তাতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) টিএম হান্নান বলেন, “রিপোর্ট অনেক কারণে ভিন্ন হতে পারে। আমরা রোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি দ্বিতীয়বার রক্ত দেননি। অনেক নেতিবাচক মন্তব্য হচ্ছে, তবে ভুল থেকেই তো মানুষ শেখে।”

এই ঘটনার পর চট্টগ্রামের চিকিৎসা ও ডায়াগনস্টিক সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। ভুল রিপোর্টের মতো ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেই দাবি উঠেছে সামাজিক ও নাগরিক মহল থেকে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অভ য গ

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ