আল্লাহ-তায়ালা তওবা ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের পছন্দ করেন। তিনি বান্দার তাওবার কারণে কত বেশি খুশি হন, তার একটি উদাহরণ বিভিন্ন বর্ণনায় পাওয়া যায়।
মরুভূমিতে এক ব্যক্তির উট হারিয়ে গেছে। এই উটের ওপর সে পথের বোঝা ও খাওয়া-দাওয়া বহন করত। এখন সে নিঃস্ব। কোথাও একটু ছায়া নেই, পানি নেই। মরু বিয়াবানে হতাশার শিকার হয়ে এখন পাথরের আড়ালে বসে মৃত্যুর প্রতীক্ষা করছে। এভাবে এখন সময় তার চোখে তন্দ্রা নেমে আসে। এমন সময় হঠাৎ চোখ মেলে সে নিজের হারানো উটকে দেখে তার সমস্ত আসবাবপত্রসহ তার সামনে হাজির। সে ঝটকা মেরে দাঁড়িয়ে উটের লাগাম হাতে নেয় এবং আনন্দের আতিশয্যে তার মুখ থেকে নানা শব্দ উচ্চারণ হয়। খুশির আধিক্যে তার মুখ থেকে বিপরীত বাক্য বের হয়ে যায় যে, হে আল্লাহ তুমি আমার বান্দা, আমি তোমার প্রভু।
আরও পড়ুনউম্মে সালামা (রা.): ইসলামের প্রথম যুগের মহীয়সী নারী০৭ এপ্রিল ২০২৫
আল্লাহও বান্দার অনুতপ্ত তাওবায় তেমন খুশি হন। (মুসলিম, হাদিস: ২,৭৪৭; বায়হাকি, হাদিস: ৬,৭০৩)
বান্দার তওবায় তিনি এত খুশি হন যে, তাকে জান্নাত ও তাঁর সন্তুষ্টি দিয়ে পুরস্কৃত করেন। আল্লাহ তার বিশ্বাসী বান্দাদের আহ্বান করে বলেন, ‘বিশ্বাসী বান্দারা, তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তাওবা করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও। (সুরা নুর, আয়াত: ৩১)
তওবার অশ্রুতে হৃদয় পরিচ্ছন্ন হয়। তওবা হলো লজ্জার আগুন যা হৃদয়ে প্রজ্বলিত হয় এবং অনুতাপে অনুভূতি যা চোখের অশ্রু হয়ে প্রবাহিত হয়। আল্লাহর পথে আগুয়ান হওয়ার এটাই প্রথম পদক্ষেপ এবং আখেরাতে সফলতা প্রত্যাশীদের পুঁজি। আল্লাহর দিকে মনোনিবেশকারীদের প্রথম স্তর এবং দৃঢ়তার চাবি। যখন মানুষ গভীর ঘুমের আনন্দে বিভোর থাকে, তাওবাকারীর হৃদয় আল্লাহর ভয়ে অস্থির হয়। সে ব্যথা ভারাক্রান্ত ও ভগ্ন হৃদয়ে আপন প্রতিপালকের সামনে দাঁড়িয়ে লজ্জাবনত মাথা ঝুঁকিয়ে নিজের পাপ ও ভুলগুলো স্মরণ করে কেঁপে ওঠে এবং তার চোখ থেকে অশ্রুর ধারা বইতে থাকে। তার অন্তর আগামীকালের সফলতার জন্য উন্মুখ থাকে। কারণ, পাপের বোঝা থেকে সে নিজেকে ভারমুক্ত করে নিয়েছে যেন সে সিরাতুল মুস্তাকিমের পথ সহজে অতিক্রম করতে পারে।
পুরোনো দিনের জন্য অনুশোচনা করো এবং ভবিষ্যতের জন্য ইতিবাচক চিন্তা করো। নিশ্চয় পরবর্তী দিনগুলো তোমার জন্য সুখের সুসংবাদ বয়ে আনবে।
সূত্র: আসআদু ইমরাআতিন ফিল আলাম, আয়েয আল-কারনি
অনুবাদ: মনযূরুল হক
আরও পড়ুনআবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) ছিলেন বিজ্ঞ ও সাহসী সাহাবি১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নিজেদের সফলতার গল্প শোনালেন তরুণ ফ্রিল্যান্সাররা
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা তরুণদের অনেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ শিখে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন। ফ্রিল্যান্স কাজের সঙ্গে যুক্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তের তরুণদের সাফল্যের গল্প তুলে ধরতে গতকাল রোববার ‘ফ্রিল্যান্সিং ফ্যাক্টরি’ নামের একটি বিশেষ সেশনের আয়োজন করেছিল গ্রামীণফোন একাডেমি। রাজধানীর বসুন্ধরায় গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রধান কার্যালয় ‘জিপি হাউস’-এ অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে বিভিন্ন জেলার শতাধিক তরুণ ফ্রিল্যান্সার নিজেদের অভিজ্ঞতা ও সাফল্যের গল্প তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান বলেন, ‘তরুণেরা ফ্রিল্যান্স কাজের মাধ্যমে নিজেদের ক্যারিয়ার তৈরি করছেন। উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন ফ্রিল্যান্সাররা। গ্রামীণফোন একাডেমির মাধ্যমে আমরা এই তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছি এবং তাঁদের বৈশ্বিক সুযোগের সঙ্গে সংযুক্ত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান।
আরও পড়ুনফ্রিল্যান্সারদের জন্য নতুন সুবিধা চালু করল ফাইভার২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫অনুষ্ঠানে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাসহ ক্লায়েন্টদের সঙ্গে সফলভাবে যোগাযোগের কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে তরুণ ফ্রিল্যান্সাররা নিজেদের ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরার পাশাপাশি নিজেদের দক্ষতা ও আয় বাড়ানোর কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানজিলা আক্তার বলেন, ‘আমি পড়ালেখার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করেছি। এরপর ফ্রিল্যান্সিং করার অর্থ দিয়ে ল্যাপটপ কিনেছি।’
আরও পড়ুনশাশুড়ির কিনে দেওয়া ল্যাপটপে ফ্রিল্যান্সিং, পপির মাসিক আয় ৩ লাখ টাকা২৯ নভেম্বর ২০২৪গ্রামীণফোন একাডেমি জানিয়েছে, এ ধরনের অনুষ্ঠানের নিয়মিত আয়োজন করা হবে, যাতে বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তের তরুণেরা অনলাইন কাজের মাধ্যমে নিজেদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে পারেন। গ্রামীণফোন একাডেমি থেকে ফ্রিল্যান্সিংসহ বিভিন্ন বিষয়ে হাতে–কলমে প্রশিক্ষণের সুযোগও পাওয়া যাবে।